বই – দেবদাস
লেখক – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
রেটিং – ৩.৫/৫
অনেকসময় প্রেমে ছেকা খেলে ছেলেদের নাম দেওয়া হয় “দেবদাস”। কিন্তু আসলেই কি দেবদাসকে পার্বতী ছেকা দিয়েছিলো???
দেবদাস ও পার্বতীর কথা কে না জানে? পুরো গল্প না জানলেও দেবদাসের শেষ পরিনতি বেশিরভাগ মানুষের জানা।
এ বইয়ের জন্য ঘটা করে রিভিউ দেয়ার কিছু আছে বলে মনে হয় না। তবে এইটুকু লিখবো যে আপনি যদি বলিউডে নির্মীত “Devdas” চলচিত্র দেখে দেবদাসকে নিয়ে আফসোস করেন তাহলে আপনার বইটি পড়া উচিত। কারন সিনেমাতে অনেক কিছুই বই থেকে সম্পূর্ন আলাদা!
আরও পড়ুনঃ শ্রীকান্ত – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
কাহিনী সংক্ষেপঃ
দেবদাস জমিদার পরিবারের ছেলে, আর পার্বতী সাধারণ ঘরের মেয়ে। কিন্তুু দেবদাস আর পার্বতীর মধ্যে বেশ বন্ধুত্ব ছিল। তারা একসাথে স্কুলে যেত, মাছ ধরত, সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াতো। অনেকসময় রাগ করে পার্বতীকে মারতও। তবুও দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের কমতি ছিল না। একজন স্কুলে না যাওয়ার সিন্ধান্ত নিলে আরেকজন ও স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত থাকে। এইভাবে দুজন সারা গ্রামের মানুষদেরকে বিরক্ত করে তুলত। দেবদাসের পিতা একদিন সিন্ধান্ত নিলেন তিনি দেবদাসকে কলিকাতা পাঠিয়ে দিবেন, দেবদাসের ইচ্ছা না থাকলেও সে পার্বতীকে ছেড়ে চলে যায়। এইভাবে চিঠির মাধ্যমে তাদের মাঝে মাঝে কথা হলেও কিছুকাল পরে বন্ধুত্বটাকে দেবদাস কমিয়ে আনে। দুজনের মধ্যে লজ্জাবোধ কাজ করতে থাকে। ইতিমধ্যে পার্বতীর বিয়ের বয়স হলে দেবদাসের মাকে প্রস্তাব দেয়। এটি তিনি না করে দেন। পার্বতীর বিয়ে অন্য এলাকার বুড়ো জমিদারের সাথে হয়ে যায়। পার্বতী সেখানে তার বড় বড় ছেলে মেয়ে নিয়ে সুখে থাকছিল। কিন্তুু দেবদাস আস্তে আস্তে পার্বতীর কথা মনে করে করে ভীষণ কষ্ট পেতে থাকে। একসময় তার সাথে চন্দ্রমুখীর পরিচয় হয়। কিন্তুু দেবদাস তাকে রীতিময় ঘৃনাই করত। যার ফলে দেবদাসের প্রতি তার ভালোবাসা জন্ম নেয়। কিছুকাল কেটে গেল, চন্দ্রমুখীকে দেবদাস খুব সাহায্য করত। কেননা সে দেবদাসের কথায় অনেক পরিবর্তিত হয়ে যায়।
একসময় দেবদাসের লিভারে সমস্যা হয়, সে বাঁচবে কি বাঁচবে না শঙ্কায় পরে যায়। তাই তার ইচ্ছা ছিল সে শেষবারের মত পার্বতীর সাথে কথা বলেই মারা যাবে। কিন্তুু যেদিন রাতে সে পার্বতীর গ্রামে পৌঁছায় ঐদিন সকালেই …
কি হয়েছিলো সেদিন ? এখনো দেবদাসের কাহিনী না জেনে থাকলে পড়ে ফেলুন।
আরও পড়ুনঃ চরিত্রহীন – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
আমার মতে দেবদাসের ভাগ্যে যা ঘটেছে তার জন্য মূলত সে নিজেই দায়ী। আমার কষ্ট লেগেছে পার্বতীর জন্য।
তবে বইটি বা দেবদাস ও পার্বতীর গল্প নিয়ে যতটা মাতামাতি দেখেছি এবং দেখি আমার কাছে ততটা ভালো লাগেনি। এর চেয়ে “পরিনীতা” বেশি ভালো লেগেছে।
শরৎচন্দ্রের উপন্যাসের নায়কেরা যে ভীরু হয় তা নতুন না। তার উপন্যাসের নায়িকা চরিত্রগুলো বরাবরই নায়কদের তুলনায় অসাধারন সাহসিকতা ও কঠোর মনোভাবের পরিচয় দেয়। এ বইটির মূল চরিত্রগুলোও তার অন্যান্য বইয়ের চেয়ে আলাদা না।
লিখেছেনঃ Rima Sarmin Radcliffe
বইঃ দেবদাস [ Download PDF ]
লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচনা সমগ্র