বইঃ চরিত্রহীন
লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
প্রকাশনীঃ জয় প্রকাশন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২২২
মুদ্রিত মূল্যঃ ২২০৳
যারা যারা বইটা পড়েছেন তাদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, এই বইয়ের নাম যে ” চরিত্রহীন “, কিন্তু বইয়ে চরিত্রহীন কে ছিলো? আদৌ কি কেউ ছিলো?
গল্পের মূল চরিত্র সতীশ না উপেন্দ্র তা নিয়ে আমি যদিও সন্ধিহান, তবে তাদের দুজনের বন্ধুত্ব নিয়ে একদমই নয়। এই বন্ধুত্ব কথায় নয় যেন রক্তে মিশে গেছে।
সতীশ আর সাবিত্রির নীরব প্রেমকাহিনী দিয়ে প্রথমদিককার গল্পের শুরু । দুজন দুজনকে ভালোবাসলেও দুজনের কাছেই ভালোবাসার চেয়ে বড় আত্মসম্মান। তাই একটু অভিমানেই যেন আলগা হতে থাকে সম্পর্কের সুতো। দুজনের ভেতরেই পরস্পরের জন্য সমুদ্র সমান ভালোবাসা ছিলো, দুজনেই তা চোখের জল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু সেই নিরব পরিনয় কি পরিনতি পেয়েছিলো?
আরও পড়ুনঃ বিলাসী গল্প – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা উপেন্দ্র, পরিচিতমহলে সে বউপাগল বলেই পরিচিত। কিন্তু স্ত্রী সুরবালার ভালোবাসার সামনে যে উপেন্দ্র যেন খড়কুটো। ছোট থেকেই সুরবালা অত্যন্ত নরম মনের। স্বামীকে সে ভগবানের মতো পুজা করে, ভালোবাসে।
একদিন একখানা পত্র পেয়ে উপেন্দ্র সতীশকে নিয়ে হাজির হয় কলকাতায় এক মৃত্যুপথযাত্রী বন্ধুর বাড়ীতে। সেখানে পরিচয় হয় বন্ধুর স্ত্রী কিরনময়ীর সাথে। কিরনময়ীয় মতো রূপবতী সচরাচর দেখা যায় না। প্রথমদিন তারা (সতীশ ও উপেন্দ্র) কিরনের সম্পর্কে বিরূপ ধারণা নিয়ে গেলেও, আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্কটা সহজ হয়ে যায়। কিরন সতীশকে ছোটভাইয়ের জায়াগায় বসালেও ভালোবেসে ফেলে উপেন্দ্রকে। আপাতদৃষ্টিতে কিরনকে চরিত্রহীন মনে হলেও উপন্যাস পুরোটা পড়লে এ ভুলধারণা ভেঙে যাবে। তার মহত্ত্ব আর আত্মত্যাগ দেখে সত্যিই মন ভরে যায়। তবে এই উপন্যাসে শুধু কিরনময়ীই নয়, সকলেই যেন ভালোবাসা ত্যাগের প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কে কাকে হারাতে পারবে।
উক্ত চরিত্রগুলো ছাড়াও দিবাকর, বেহারী, সরোজিনী, বিপিন, জ্যোতিষ, শশীকান্ত, প্রমুখ চরিত্রগুলোরও গল্পে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মহেশ গল্প – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
চরিত্রহীন নিয়ে লিখতে শুরু যে কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটা আমি নিজেও জানি না, তবে এটুকু বলি শরৎচন্দ্রের লেখা “শ্রীকান্ত”র পরে ” চরিত্রহীন ” হলো আমার প্রিয় উপন্যাস।
লিখেছেনঃ Habiba Kamrun Shia
বইঃ চরিত্রহীন [ Download PDF ]
লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচনা সমগ্র