Skip to content
Home » জহির রায়হানের মৃত্যু রহস্য | নিখোঁজ করলো কারা? How Zahir Raihan Died

জহির রায়হানের মৃত্যু রহস্য | নিখোঁজ করলো কারা? How Zahir Raihan Died

    জহির রায়হানের মৃত্যু রহস্য জীবনী উপন্যাস নিখোঁজ মুক্তিযুদ্ধ চলচ্চিত্র ছোটগল্প উপন্যাস PDF
    Redirect Ads

    ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধজীবীদের হত্যার উপর একাই তদন্ত করতে নামেন জহির রায়হান। ২৯শে ডিসেম্বর দৈনিক অবজার্ভারে একটি সাক্ষাৎকারে জানান-

    “টিঅ্যান্ডটি, বুয়েট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু কর্মকর্তা বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

    -বাংলা ট্রিবিউন, ২০১৬

    ৩০শে জানুয়ারী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্য সংবাদ সম্মেলনেরও আহ্বান করেন। কিন্তু সেদিনই তাকে নিখোঁজ করা হয়। কি এমন তথ্য তিনি প্রকাশ করতে যাচ্ছিলেন যার প্রেক্ষিতে তাকে গুম করা হলো?

    Download
    পুরস্কার নিচ্ছেন জহির রায়হান (ছবিঃ মীর সামসুল আলম বাবু)

    তবে জেনারেল ইব্রাহিম (অব:) এর মতে জহির রায়হান সেদিনই ভাইয়ের খোঁজে মিরপুর গিয়েছিলেন। বিহারি পল্লীতে লুকিয়ে থাকা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, বিহারী ও আল বদররা তাকে হত্যা করে।

    তবে স্বাধীনতার এতোদিন পর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী লুকিয়ে থাকবে কিভাবে সেটা নিয়ে কোনো কিছু বলেন নি। বিহারীরা থাকা সত্ত্বেও কেনইবা শহীদুল্লাহ্ কায়সারকে খুঁজতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জহির রায়হান বিহারী পল্লীতে যাবেন তাও অজানা।

    মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রামাণ্যচিত্র স্টপ জেনোসাইড তৈরি করেন জহির রায়হান। সেটি দেখে তৎকালীন অনেক নেতৃবৃন্দও এটা না চালাতে বলেন। অনেক নেতারা ছবি দেখে ছাড়পত্র না দেয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সেন্সর বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন।”

    তথ্যসূত্র : একুশে ফেব্রুয়ারী / জহির রায়হান (ভূমিকা : শাহরিয়ার কবির) ॥ [ পল্লব পাবলিশার্স – আগস্ট, ১৯৯২ । পৃ: ১৩-১৬ ]

    আরও পড়ুনঃ শহীদুল্লাহ কায়সারের জীবনী

    স্টপ জেনোসাইড তৈরি নিয়েও অনেক নেতাদের সাথে মনকষাকষি চলে আসছিলো সম্ভবত। মুশতাক টাইপের নেতারা অনেক আগ থেকেই জগদ্দল পাথরের মত চেপেছিলো।

    Download
    ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জহির রায়হান (ছবিঃ মীর সামসুল আলম বাবু)

    জহির রায়হানের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত জানা যায় ১৯৯২ সালে সত্যজিৎ রায়ের দেয়া বিচিত্রার একটা সাক্ষাৎকারে।

    সংখ্যাটি ছিল ১৯৯২ সালের ১ মে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন বুদ্ধিজীবী শাহরিয়ার কবির। সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে সত্যজিৎ রায় শাহরিয়ার কবিরকে হঠাৎ করে জিজ্ঞেস করলেন… -“জহিরের ব্যাপারটা কিছু জেনেছো?”

    শাহরিয়ার কবির বলেন,

    “তাকে সরিয়ে ফেলার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে তদন্ত করে যা বুঝতে পেরেছি তাতে বলা যায়, ৩০ জানুয়ারি দুর্ঘটনায় তিনি হয়তো মারা যাননি। তারপরও দীর্ঘদিন তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন। সেটাই ষড়যন্ত্রের মূলসূত্র বলে ধরছি। মিরপুরে দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হলে গভীর ষড়যন্ত্র মনে করার কোনো করণ ছিল না। আমি যতদূর জানি, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে তিনি এমন কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন যা অনেক রথী-মহারথীর জন্যই বিপজ্জনক ছিল, যে জন্য তাকে সরিয়ে ফেলার প্রয়োজন হয়েছিল।”

    তথ্যসূত্র : একুশে ফেব্রুয়ারী / জহির রায়হান (ভূমিকা : শাহরিয়ার কবির) ॥ [ পল্লব পাবলিশার্স – আগস্ট, ১৯৯২ । পৃ: ১৩-১৬ ]
    A rare picture of Zahir Raihan (ছবিঃ মীর সামসুল আলম বাবু)

    জহির রায়হান নিখোঁজের প্রায় এক বছর পর [ ১৯৭৩ সালের ২২ শে জানুয়ারি] সাংবাদিক আহাম চৌধুরীর লিখা “জহির রায়হান হত্যা রহস্য আর কতদিন ধামাচাপা পড়ে থাকবে ” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলেছিলেন – জহির রায়হান মিরপুর কলোনির অভ্যন্তরে যাননি।

    Download

    শাহরিয়ার কবির ও আহাম চৌধুরীর এ তথ্য যদি সত্যি হয় তবে বলতে হয় জহির রায়হানকে হত্যা আল বদর করেনি, বরং কোনো প্রভাবশালী মহল করেছে যাদের উদ্দ্যেশ্য ছিলো শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নস্যাৎ করা।

    কারা সেই রথী মহারথী? কেনইবা এমন একজন প্রতিভাবান শিল্পীকে হত্যা করা হলো, কে করলো সে বিষয়ে এখনো অনেক কিছুই অজানা। আমরা চাই এ বিষয়ে তদন্ত হোক, এবং জাতিকে জানানো হোক সঠিক তথ্য।

    আরও পড়ুনঃ নিখোঁজ নন, গুলিতে নিহত হয়েছিলেন জহির রায়হান

    লিখেছেনঃ Tansen Rose 
    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন