Skip to content
Home » সত্যজিৎ রায় : বাংলা চলচ্চিত্রের এক মহারাজা | A Biography of Satyajit Ray

সত্যজিৎ রায় : বাংলা চলচ্চিত্রের এক মহারাজা | A Biography of Satyajit Ray

    সত্যজিৎ রায় এর জীবনী biography of Satyajit Ray in bengali
    Redirect Ads

    সত্যজিৎ রায়, সিনেমার আগন্তুক।
    উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী ছিলেন এক বিখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক। শুধু সাহিত্যই নয়। সাহিত্যের পাশাপাশি তাঁর আগ্রহ ছিলো সংগীত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিত্রশিল্প সহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে। প্রকাশনাতেও তাঁর আগ্রহ। ১৯১৩ সালে শিশু কিশোরদের জন্য প্রকাশ করা শুরু করলেন ‘সন্দেশ’ নামক পত্রিকা। তিনিই প্রথম সম্পাদক।

    এর দুই বছরের মাথায় ১৯১৫ সালেই উপেন্দ্রকিশোর মারা গেলেন। সন্দেশের সম্পাদকের দায়িত্ব চলে গেলো তাঁর পুত্র “সুকুমার রায়” এর ওপর। বাংলা শিশুসাহিত্যের সাহিত্যের আরেক বরপুত্র, যিনি লিখেছিলেন ‘ আবোল-তাবল, হ-য-ব-র-ল’ এর মত কালজয়ী সাহিত্য।

    Download

    সুকুমার রায় এর প্রতিভায় সন্দেশ হয়ে উঠলো এক অনন্য পত্রিকা। সন্দেশের একের পর এক অসাধারণ শিশুসাহিত্য প্রকাশ পেতে লাগলো। এরকম একটি সময়েই ১৯২১ সালের ২রা মে জন্মনিলো সুকুমার রায় এর একমাত্র পুত্র সত্যজিৎ রায়। বাংলা সিনেমার সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। যাঁকে বিশ্ব সিনেমাও দ্বিমত ছাড়াই শীর্ষ আসন গুলোর একটিতে বসিয়েছে। বিখ্যাত রায় পরিবারের এই সদস্য সাহিত্যেকে ছাপিয়ে কিভাবে জয় করলেন সেলুলয়েডের রহস্যময় জগত? সেটা জানতেই একটু পাতা উল্টানো যাক তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনচরিতে।

    আরও পড়ুনঃ যখন ছোট ছিলাম সত্যজিৎ রায় PDF রিভিউ

    পুত্র সত্যজিৎকে জন্ম দিয়ে ৩ বছরের মাথায় অকালমৃত্যুবরণ করলেন বাবা সুকুমার রায়। মা সুপ্রভা দেবী পড়েন কঠিন বিপত্তিতে। পিতৃহীন তাঁর এই সন্তানকে বড় করতে সুপ্রভা দেবী কঠিন সংগ্রাম করলেন। ১৯৩৬ সালে সত্যজিৎ কে পাঠানো হলো প্রেসিডেন্সী কলেজে বিজ্ঞান পড়ার জন্য। দুই বছর বিজ্ঞান পড়ার পর তৃতীয় বর্ষে এসে পড়া শুরু করলেন ইকোনমিকস।

    মা সুপ্রভা দেবীর কোলে শিশু সত্যজিৎ রায়

    কিন্তু বিজ্ঞান বা অর্থনীতি কোনোটাই তাঁকে মুগ্ধ করতে পারলোনা৷ তিনি একসময় অর্থনীতির বইপত্র সিঁকেয় তুলে দিনরাত ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে সিনেমা দেখা আর ক্লাসিকাল মিউজিক শোনা শুরু করলেন। সিনেমা দেখতে দেখতে তিনি একসময় আবিষ্কার করলেন সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রী তাঁকে আকর্ষণ করেনা। তাঁর আগ্রহ পরিচালকদের নিয়ে। তাঁর মাথার মধ্যে তখন আর্নস্ট লুবিচ, জন ফোর্ড, ফ্রাংক কাপ্রা এবং উইলিয়াম ওয়েলার এর মত কিছু জগদ্বিখ্যাত পরিচালকের নাম গেঁথে গেলো। এর পাশাপাশি তিনি আরেকটি কাজে আগ্রহী ছিলেন সেটি হলো ভিজুয়াল আর্ট। এই ভিজুয়াল আর্ট এর দক্ষতাই তাঁর কর্মজীবনের প্রথম চাকরিটি এনে দেয়। সেই প্রসঙ্গ পরে আসছি।

    Download

    ১৯৩৯ সাল! সত্যজিৎ রায় প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে স্নাতক হলেন এবং ঘোষণা দিলেন তিনি আর পুঁথিগত পড়াশোনা চালাতে চান না। মা সুপ্রভা দেবী হতভম্ব হয়ে বললেন,
    “পড়াশোনা না করলে খাবি কি? “
    সত্যজিৎ বললেন, “সবাই যেভাবে খায় সেভাবেই খাবো। চাকরি করব৷ সেই বেতনে খাবো “
    এখন তোকে কে চাকরি দেবে?
    সত্যজিৎ তাঁর অসামান্য ভিজুয়াল আর্ট এর কিছু নমুনা সুপ্রভা দেবীকে দেখালেন। সুপ্রভা দেবী ছেলের শিল্প দেখে মুগ্ধ হলেন। তবে সত্যজিৎকে চাকরি করার অনুমতি দিলেন না। সত্যজিৎ এর অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁকে পাঠিয়ে দিলে কবিগুরুর নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান শান্তিনিকতনে!

    মা সুপ্রভা দেবীর সাথে সত্যজিৎ রায়।
    ক্যামেরার সাটারে সুতো বেঁধে নিজেই নিজের এবং মায়ের ছবি তুলেছিলেন সত্যজিৎ। (১৯৩৬)

    ১৯৪০-১৯৪১ সাল হলো সত্যজিৎ রায় এর শান্তি নিকেতন পর্যায়। এই শান্তি নিকেতনেই তাঁর সামনে প্রাচ্যের শিল্পের অপার সৌন্দর্য উন্মোচিত হলো। তিনি শিল্পের গভীরে প্রবেশ করার সুযোগ পেলেন। নিখুঁত শিল্পের আবাসভূমি শান্তিনিকেতনের পরিবেশ তাঁকে মুগ্ধ করলো। শান্তি নিকেতনে তাঁর আর্টের শিক্ষক ছিলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী বিনোদন বিহারি মুখার্জি। বিনোদ বিহারির অসামান্য প্রতিভার প্রভাব সত্যজিৎ এর জীবনে ছিলো। তার প্রমাণ ১৯৭২ সালে প্রকাশিত “The inner eye” ডকুমেন্টারিটি যা সত্যজিৎ বিনোদ বিহারিকে নিয়ে বানিয়েছিলেন।

    শান্তিনিকেতনে আরও যে দুইটি কাজ তাঁর পরিচালক জীবনের ভীত হিসেবে সহায়ক ছিলো তা হলো-
    ১. তিনি সেখানকার এক ইংরেজি অধ্যাপকের সংগ্রহে থাকা পাশ্চাত্য সংগীত শুনতেন।
    ২. শান্তি নিকেতনের লাইব্রেরিতে বসে বসে সিনেমার তত্ত্বীয় বই পড়তেন।

    আরও পড়ুনঃ ফটিকচাঁদ সত্যজিৎ রায় রচনা PDF রিভিউ

    Download

    ১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে সত্যজিৎ পুনরায় কোলকাতায় ফিরলেন। সেদিন প্রথমবারের মত কোলকাতা জাপানিজ দের দ্বারা বোমা হামলার শিকার হয়েছিলো।

    ১৯৪৩ সালের এপ্রিলে সত্যজিৎ রায় ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থা ডি জে কিমারে মাত্র ৮০ টাকা বেতনের বিনিময়ে “জুনিয়র ভিজুয়ালাইজার” হিসেবে যোগ দিলেন। তাঁর অসাধারণ কাজের জন্য এই সংস্থায় তিনি ভালো সমাদর পেলেন। সেই সময় সত্যজিৎ অসাধারণ কিছু টাইপোগ্রাফির কাজ করলেন। ইতোমধ্যে তাঁর সিনিয়র কলিগ ডি.কে গুপ্ত “সিগনেট প্রেস” নামে পাবলিশিং হাউস খুললে ফেললেন। সত্যজিৎ জড়িয়ে গেলেন সিগনেট প্রেসের সঙ্গে।

    সিগনেট প্রেসে সত্যজিৎ এর কাজ ছিলো বই এর প্রচ্ছদ ডিজাইন করা। তিনি তাঁর শৈল্পিক দক্ষতা দিয়ে স্বাধীন ভাবে একের পর এক বইয়ের ডিজাইন করতে থাকলেন৷ একদিন একটা বইয়ে তাঁর চোখ আটকে গেলো। ডি.কে গুপ্ত তাঁর হাতে একটি বাংলা ক্লাসিক ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “এই বইটির নাম পথের পাঁচালী, আমরা এর একটি শিশুতোষ সংস্করণ বের করব৷ নাম হবে ‘আম আটির ভেপু‘, আপনি খুব সুন্দর করে প্রচ্ছদ করবেন। কোনো এক বিচিত্র কারণে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় এর “পথের পাঁচালী” সত্যজিৎ এর মনে ধরে গেলো। কিন্তু তিনি তখনও জানতেন না তাঁর বানানো প্রথম ছবি হবে এই বইয়ের গল্পকে ঘিরেই এবং সেই ছবি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবে।

    আরও পড়ুনঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাস PDF রিভিউ

    Download

    ১৯৪৭ সাল। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ কেবল শেষ হয়েছে। এর প্রভাব তখন সারা বিশ্বের মত কোলকাতাতেও। মার্কিন সেনা দিয়ে কোলকাতা তখনও ভরপুর। এই সময় সত্যজিৎ চিদানন্দ দাসগুপ্ত ও অন্যান্যদের সাথে মিলে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন। তাঁরা মার্কিন সেনাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের কাছ থেকে হলিউড এর ছবি সংগ্রহ করত লাগলেন এবং সেগুলোর প্রদর্শনী করতে লাগলেন। কোলকাতা ফিল্ম সোসাইটির প্রদর্শন করা প্রথম ছবি ছিলো “Battleship Potemkin” এর কিছুদিনের মধ্যেই সত্যজিৎ সিনেমা নিয়ে পত্র পত্রিকায় আর্টিকেল প্রকাশ করতে লাগলেন। তিনি ছবির সমালোচনাও করতে শুরু করলেন।

    একসময় সিনেমার চিত্রনাট্য ব্যাপারটা তাঁর আগ্রহের স্থান দখল করলো। তিনি যখনই কোনো গল্প বা উপন্যাস নিয়ে ছবি বানানো হবে বলে খবর পেতেন, তিনি সেই গল্প/উপন্যাস জোগড় করে নিজে সেটার চিত্রনাট্য লিখে ফেলতেন। তারপর ছবি তৈরী হয়ে গেলে নিজের চিত্রনাট্যার সঙ্গে ছবির চিত্রনাট্য মেলাতেন। কখনও কখনও ছবি দেখে নিজের চিত্রনাট্যে পরিবর্তন আনতেন। এভাবে একটু একটু করে সিনেমার গভীরে প্রবেশ করতে লাগলেন সত্যজিৎ!

    সত্যজিৎ রায় এর দেখা সিনেমা তালিকা

    আরও পড়ুনঃ জানা অজানায় পথের পাঁচালী উপন্যাস | অপু ট্রিলজি

    ১৯৪৯ সালে সত্যজিৎ তার দূরসম্পর্কের বোন ও বহুদিনের বান্ধবী বিজয়া দাসকে বিয়ে করলেন। তাদের ঘরে ছেলে সন্দীপ রায়ের জন্ম হলো। এই সন্দীপ রায় নিজেও একজন সফল নির্মাতা!

    ১৯৪৯ সালে জঁ রোনোয়ার নামক এক বিখ্যাড ফরাসি পরিচালক কোলকাতায় আসলেন তাঁর ‘রিভার’ নামক চলচ্চিত্রর জন্য শুটিং স্পট খু্ঁজতে। তাঁর এই অভিজানে সঙ্গী হিসেবে যুক্ত হলেন সত্যজিৎ। তাঁরা চলচ্চিত্র নিয়ে বিচিত্র আলোচনা করতেন। সত্যজিৎ রায় তাঁকে বাংলার দারিদ্র্য সৌন্দর্য সম্পর্কে বর্ণণা করতে যেয়ে পথের পাঁচালীর প্রসঙ্গ তুললেন। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করলেন এই গল্পে ছবি বানানো হলে তা বাংলার গ্রামীণ নৈসর্গিের এক অসাধারণ উপস্থাপন হবে। সিনেমা নিয়ে সত্যজিৎ এর আগ্রহ আর জ্ঞান তাঁকে মুগ্ধ করলো। তিনি সত্যজিৎ কে চমকে দিয়ে বললেন,

    “মিস্টার রায়, পথের পাঁচালী গল্পটা অসাধারণ, আর তার চেয়েও অসাধারণ ব্যাপার হবে যদি আপনি পরিচালকের গদিতে বসে পথের পাঁচালিকে ছবির ফ্রেমে বন্দি করতে পারেন”।

    সত্যজিৎ রায় ধাক্কার মত খেলেন! কি বলবে বুঝতে পারলেন না। তবে কথাটা তাঁর মনে গেঁথে গেলো!

    Download

    আরও পড়ুনঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনচরিত

    ১৯৫০ সাল। চাকরিসূত্রে সত্যজিৎ রায় গেলেন লন্ডনে। সাথে তাঁর স্ত্রী বিজয়াও রয়েছেন। তিনি ছয় মাস লন্ডনে বসে শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের অসংখ্য ছবি দেখলেন। ভিট্টোরিয়ো ডি সিকার “বাইসাইকেল থিভস” দেখে প্রচন্ড মুগ্ধ হলেন। তিনি তাঁর সিনেমা আর্টিকেলস এর সংকলন “Our films, Their films” এর ভূমিকাতে লিখেছেন,

    “All through my stay in London, the lessons of Bicycle Thieves and neo-realist cinema stayed with me”

    বাইসাইকেল থিভস তাঁকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করলো যে সম্পূর্ণ আনাড়ি অভিনেতা অভিনেত্রী এবং অতি সাধারণ স্থানে শুটিং করেও বাস্তবধর্মী অসাধারণ ছবি বানানো সম্ভব। লন্ডনে বসেই তিনি মনস্থির করলেন, কোলকাতায় ফিরে তিনি “পথের পাঁচালী” বানাবেন। তিনি তাঁর নোটবুকে পথের পাঁচালী প্রজেক্টের টুকিটাকি নোট করতে শুরু করলেন!

    ১৯৫০ সাল! পথের পাঁচালীর শুটিং শুরু হলো। অতি সাধারণ যন্ত্রপাতি, সাধারণ আয়োজন। অভিনেতা অভিনেত্রী কেউই পেশাদার নয়। তারপরেও একটা সিনেমা বানানো চাট্টিখানি কথা নয়। মাঝপথে পড়লেন অর্থসংকটে। স্ত্রী বিজয়ার গয়ণা থেকে শুরু করে নিজের সংগৃহীত বইপত্র বিক্রি করে সিনেমাটি বনানো শেষ করলেন! অর্থ সংকটের কারণে পথের পাঁচালী নির্মাণে তাকে প্রতিনিয়ত নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসব কিছু তিনি লিখেছেন তাঁর “একেই বলে শুটিং” বইয়ে। চাইলে বইটি পড়ে নিতে পারেন।

    পথের পাঁচালী সিনেমার শুটিং এ অপু

    ১৯৫৫ সালের কোলকাতায় বসুশ্রী সিনেমা হলে মুক্তি পেলো “পথের পাঁচালী”। শুরুতে একটু ধীরগতির হলেও ৩য় সপ্তাহে যেয়ে বক্স অফিসে সাফল্য লাভ করলো পথের পাঁচালি। পথের পাঁচালী কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ পাঠানো হলো। ১৯৫৬ সালের কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এর শ্রেষ্ঠ ফিল্ম নির্বাচিত হলো পথের পাঁচালী। দেশে বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার জয় করে নিলো সত্যজিৎ এর কালজয়ী এই ছবি। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে করুণ মুখ করে বাড়ি ফিরে আসা সেই সাধারণ ছেলেটিই কিনা নিজের প্রথম ছবি দিয়ে ভারতীয় সিনেমাকে নিয়ে গেলো এক অনন্য উচ্চতায়!

    এরপর সত্যজিৎকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পথের পাঁচালীর সাফল্যের পর তৈরী করলেন অপরাজিতাঅপরাজিতা ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পেলো গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার। এটি ছিলো অপু ট্রিলজির দ্বিতীয় ছবি। প্রথমটি পথের পাঁচালী। ট্রিলজিট শেষ ছবি অপুর সংসার যা লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিলো শ্রেষ্ঠ পুরস্কার।

    Download

    আরও পড়ুনঃ বিষয় চলচ্চিত্র সত্যজিৎ রায় পিডিএফ রিভিউ

    সত্যজিতের চলচ্চিত্র নির্মাণ চলতেই থাকলো। একে একে তৈরী করলেন, “কাঞ্চনজঙ্ঘা (১৯৬২), অভিজানন (১৯৬২), মহানগর (১৯৬৩), চারুলতা (১৯৬৪), নায়ক (১৯৬৬), গুপী গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৯), হীরক রাজার দেশে (১৯৮০)…সহ অপূর্ব সব সৃষ্টি। নায়কে দেখালেন পর্দার আড়ালে নায়কের ট্র্যাজেডি। গুপি গাইন বাঘা বাইনে রুপকথা আর বাস্তবতার মিশেলে তৈরী করলেন এক অপূর্ব শিশু কিশোর চলচ্চিত্র। প্রতিটি ছবিতেই অপূর্ব সব সংগীতের ব্যবহার করলেন যে সংগীতগুলোর নেপথ্যে ছিলেন তিনি নিজেই।

    ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকলো ফেলুদা আর প্রফেসর শঙ্কুর কালজয়ী কমিকস। অসাধারণ কিছু গল্পও লিখেছেন সত্যজিৎ। পারফেকশন ছিলো তাঁর প্রতিটি কাজে। তাঁর কাজ দেখে স্যার রিচার্ড এটেনবরো বলেছিলেন,

    “সত্যজিতের যে জিনিস টা আমাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে তা হলো প্রতিটি বিষয়ের প্রতি তাঁর সুক্ষ্ম দৃষ্টি। একমাত্র চ্যাপলিন ছাড়া আর কারও সত্যজিৎ এর মত সিনেমার বহুমুখী প্রতিভা আছে কিনা সন্দেহ!”

    আরও পড়ুনঃ প্রফেসর শঙ্কুর গল্প সমগ্র PDF রিভিউ সত্যজিৎ রায়

    পরিচালক জীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন সত্যজিৎ রায়। ১৯৫৬ সালে পথের পাঁচালী দিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার এর তালিকা শুরু হয়েছিলো তা শেষ হয়েছিলো ১৯৯২ সালের ৩০ মার্চ এ..

    স্পিলবার্গ, কপোলো, নিউম্যান সহ চলচ্চিত্র জগতের ৭০ জন বিখ্যাত মানুষ ১৯৯২ সালের অস্কারে তাকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট এওয়ার্ড দেয়ার সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। জীবনের অন্তিম মুহূর্তে হাসপাতালে শুয়ে তিনি খবর পান তাঁকে দেয়া হয়েছে হলিউডের সর্বোচ্চ সম্মান অস্কার!

    Download

    এর ২৩ দিন পর তাঁর নিজের জীবনের চলচ্চিত্রের সমাপ্তি ঘটে। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে এসেছিলেন আগন্তুক হয়ে, চলে গেলেন মহারাজা হয়ে!

    পুনশ্চঃ বিখ্যাত জাপানিজ চলচ্চিত্রকার আকিরা কুরোসাওয়া একটা উক্তি উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছি। তিনি বলেছিলেন,

    “এই পৃথিবীতে বাস করে সত্যজিৎ রায় এর ছবি না দেখা, চন্দ্র-সূর্য না দেখার মতই অদ্ভুত ঘটনা”

    Reference:
    ▪️Satyajitray.org
    ▪️Amitabh gosh,”Satyajit Ray”

    লিখেছেনঃ M H Jenis

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    সত্যজিৎ রায় রচনা সমগ্র রিভিউ দেখুন / PDF Download করুন

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন