Skip to content
Home » দার্শনিক ভাষণ | বিষয়: শিক্ষা | দ্বিতীয় পর্ব | মহিউদ্দিন মোহাম্মদ

দার্শনিক ভাষণ | বিষয়: শিক্ষা | দ্বিতীয় পর্ব | মহিউদ্দিন মোহাম্মদ

    দার্শনিক ভাষণ বিষয়: শিক্ষা | মহিউদ্দিন মোহাম্মদ বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সমস্যা
    Redirect Ads

    আগে পড়ুনঃ দার্শনিক ভাষণ | বিষয়: শিক্ষা | প্রথম পর্ব

    শিক্ষা, দেশপ্রেমের যে-রূপটির সাথে শিশুদের পরিচয় করিয়ে দেয়, তা প্রাকৃতিক নয়। এটি দেশপ্রেমের একটি কৃত্রিম রাজনীতিক রূপ, যা দীর্ঘদিন ধরে বিবর্তিত হয়ে, আকার ধারণ করেছে পবিত্র বিশ্বাসের। এটির শুরু হয়েছিলো খ্রিস্টানদের চার্চে। খ্রিস্টান হুজুরদের দাবি ছিলো, চার্চের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করাই হবে একজন খ্রিস্টানের প্রধান কাজ। কিন্তু রাজারা এতে বাগড়া বাঁধালেন। তারা বললেন, চার্চ বা মসজিদের প্রতি নয়, রাজ্যের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করাই হবে একজন নাগরিকের প্রধান কাজ।

    Download

    আধুনিক শিক্ষা, রাজাদের এ আশা অনেকাংশেই পূরণ করেছে। পৃথিবীতে যে-যুদ্ধবাহিনীগুলো আছে, তাদের প্রধান শ্লোগান এখন— প্রাণ দেবো, কিন্তু দেশের মান হারাতে দেবো না।

    ওয়াশিংটন ডিসিতে যে ভিয়েতনাম ভেটেরান মেমোরিয়ালটি আছে, ওখানে এরকম ৫৮৩২০ জন দেশপ্রেমিক মৃত যোদ্ধার নাম লেখা আছে, যাদের সবাই ইশকুলে দেশপ্রেম ব্যাপারটির সাথে পরিচিত হয়েছিলো, এবং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলো।

    ভিয়েতনামে তাদের যাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। ভিয়েতনামের সাথে আমেরিকার কোনো যুদ্ধও ছিলো না। কিন্তু দেশপ্রেম তাদের ঠেলে দিয়েছিলো ভিয়েতনামের দিকে। ওখানে গিয়ে তারা অস্ত্র ধরেছিলো দক্ষিণ ভিয়েতনামের খুনীদের পক্ষে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো, উত্তর ভিয়েতনামের হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের পরাজয় ঠেকানো। এ লক্ষ্যের কোনো যৌক্তিক ভিত্তি ছিলো না। কেনেডি, নিক্সন, লিন্ডন জনসন, সবাই শুধু অন্ধভাবে আমেরিকার ওই পতাকাটির পক্ষ নিয়েছিলেন, এবং ঢেকে দিয়েছিলেন পুরো এলাকাটি বারুদে। কেনেডিকে অনেকেই খুব ভালো প্রেসিডেন্ট ভাবেন, এবং তাঁর প্রশংসা করেন, কারণ তারা সম্ভবত তাঁর প্রকৃত চরিত্রটি জানেন না। কেনেডির হাতে লেগে আছে যে-পরিমাণ রক্ত, তা কিছু বালতিতে নিলে, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা অনেকেরই কমে যাবে।

    আরও পড়ুনঃ জিপিএ ফাইভ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিলো জুতোর ফ্যাক্টোরিতে

    Download

    শিক্ষা, যে-উপায়ে একটি শিশুকে দেশপ্রেম শেখায়, তা বেশ শঠতাপূর্ণ। এতে দেশপ্রেমের প্রকৃত রূপটি তাদের কাছে উন্মোচিত হয় না। দেশপ্রেমের আড়ালে তাদের অহংকার এবং জাতিবিদ্বেষই বেশি শেখানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় নিজ দেশের মৃত নেতাদের এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে, ওই নেতারা যে রক্তমাংসের মানুষ ছিলেন, তা বুঝার কোনো উপায় থাকে না। তাঁদের কোনো সমালোচনা শিশুদের পড়তে দেওয়া হয় না (দেবতাদের আবার সমালোচনা কী?)। চীনের কোনো শিশুর পক্ষে, মাও-সে-তুংয়ের প্রকৃত চরিত্র জানা সম্ভব নয়। তারা পড়বে শুধু মাও-সে-তুংয়ের প্রশংসা।

    এখানে একটি ব্যাপার বেশ লক্ষণীয়। শিশুটিকে খুব কৌশলে বলে দেয়া হয় যে— তোমাকে অনুসরণ করতে অমুককে, কিন্তু অমুককে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না। যেকোনো উপায়ে তোমাকে অমুকের চেয়ে ছোট থাকতে হবে। কিছুদিন আগে চীন দেশে, একজন সরকারি চাকুরিজীবীকে এ নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিলো। তিনি আয়োজন করেছিলেন একটি ছবি আঁকা প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়েছিলো ইশকুলের ছোট ছোট শিশুরা।

    শিশুরা একজন মহান নেতার ছবি এঁকে জমা দিয়েছিলো আয়োজনকারীর কাছে। আয়োজনকারী ভদ্রলোক, কয়েকটি ছবি বাছাই করে পুরস্কার ঘোষণা করলেন, এবং বিপদ ডেকে আনলেন নিজের চাকুরির জন্যে। কিছু উন্মাদ দাবি করলো— শিশুরা আমাদের মহান নেতার ছবি বিকৃত করেছে! উন্মাদদের ধারণা ছিলো, শিশুরা বুঝি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। তাদের হাত ফটোকপি মেশিন।

    আরও পড়ুনঃ ছাগল ও তার পিএইচডি ডিগ্রি

    Download

    আমি বিভিন্ন দেশের শিশুকবিতা, যেগুলোকে আমরা ছড়া বলি, বিশ্লেষণ করে দেখেছি— দেশপ্রেমের নামে ওগুলোতে দেশের জন্য মৃত্যুবরণ করাকেই বেশি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সুকুমার বড়ুয়া লিখেছেন:

    “ধন্য সবাই ধন্য
    অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে
    মাতৃভূমির জন্য
    ধরল যারা জীবন বাজি
    হলেন যারা শহীদ গাজি
    লোভের টানে হয় নি যারা
    ভিনদেশিদের পণ্য ”

    ছড়াটিতে, যুদ্ধে ভিনদেশীদের খুন করা, এবং খুন করতে গিয়ে নিজে খুন হওয়ার গুণগান গাওয়া হয়েছে। অনেকে বলতে পারেন, ছড়াটিতে একটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের, নিজ দেশকে রক্ষার তাগিদে অস্ত্র ধরার কথা বলা হয়েছে, অন্য কিছু নয়। তাদের আমি বলতে চাই, আগ্রাসী রাষ্ট্রগুলোও কিন্তু আগ্রাসন চালানোর সময় এমনটিই মনে করে থাকে। ইসরায়েল প্রতিবার ফিলিস্তিনে হামলা করে এসে বলে, আমরা আত্মরক্ষার প্রয়োজনেই হামলা করেছি। বারাক ওবামা তাঁর একটি বক্তব্যে (সম্ভবত ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কোনো অনুষ্ঠানে) দাবি করেছিলেন যে, শুধু সেলফ-ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার অধিকারই নয়, আমেরিকার প্রি-এম্পটিভ সেলফ ডিফেন্স বা আগাম আত্মরক্ষার অধিকারও আছে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক ধারণা। ইরাকে আগ্রাসন চালানোর সময় প্রেসিডেন্ট বুশ, এ ধারণাটিকে যুক্তি হিশেবে ব্যবহার করেছিলেন। চাইলেই এ ধারণার আওতায়, সবল রাষ্ট্রগুলো যেকোনো দুর্বল রাষ্ট্রের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, এবং দখলে নিতে পারে তার তেল, গ্যাস, ও ভূভাগ।

    হুইটম্যান তাঁর আমেরিকা কবিতাটিতে লিখেছিলেন:

    Centre of equal daughters, equal sons,
    All, all alike endear’d, grown, ungrown, young or old,
    Strong, ample, fair, enduring, capable, rich,
    Perennial with the Earth, with Freedom, Law and Love,
    A grand, sane, towering, seated Mother,
    Chair’d in the adamant of Time.

    এখানে আমেরিকার যে-বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, তা অতিরঞ্জন নয়, কিন্তু ‘Chair’d in the adamant of Time’ পংক্তিটি যদি আমি পড়ি, তাহলে আমেরিকা রাষ্ট্রটির অহমিকার দিকটিই বেশি প্রকাশ পায়। শিক্ষা খুব কৌশলে নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় অহমিকা রক্ষা করতে বলে।

    Download

    আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : লিও তলস্তয় | প্রথম পর্ব

    আমি গ্রামের মানুষদের সাথে, ইশকুলের সাথে যাদের খুব বেশি পরিচয় ঘটে নি, কিংবা ঘটলেও এতো আগে ঘটেছে যে শিক্ষার সাথে ওই সাক্ষাৎ তারা ভুলে গিয়েছে, কথা বলে দেখেছি যে ‘দেশপ্রেম’ ধারণাটির সাথে তারা মোটেও পরিচিত নন। বাংলা ‘দেশপ্রেম’ ও ইংরেজি ‘প্যাট্রিওটিজম’, দুটি শব্দই তাদের কাছে অপরিচিত ও অর্থহীন। দেশের প্রতি ও দেশের পরিচালকদের প্রতি তারা কোনো প্রেম অনুভব করেন না। তাদের সকল প্রেম তাদের ঘর, পরিবার, স্বজন, ধর্ম, ও চাষের জমি নিয়ে। এ পাঁচটির ব্যাপারে তারা আধুনিক সেনাবাহিনীগুলোর মতোই প্রাণ দিতে প্রস্তুত। ঢাকায় আপনি, রাস্তায় যে-কারও গায়ে হাত তুলে নির্বিঘ্নে প্রস্থান করতে পারবেন। হাতে পিস্তল থাকলে তো কথাই নেই। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোনো গ্রামে, এটি করা সম্ভব হবে না।

    শিক্ষা যখন দেশপ্রেম ধারণাটিকে শিশুদের সামনে উপস্থাপন করে, তখন সেটিকে অনেকটাই ধর্মের আকারে উপস্থাপন করে। ধর্মে যেমন শুধু বিশ্বাস করলেই চলে, দেশপ্রেমেও ঠিক তাই; বিশ্বাসই এখানে মুখ্য। এই বিশ্বাসের একটি লাভজনক প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার ফসল ভোগ করেন রাজারা। রাজা ভালো হলে, এ ফসল প্রজারাও ভোগ করেন। ইউরোপ ও আমেরিকায়, এ ফসল এখন বহুলাংশেই প্রজারা ভোগ করছেন।

    দেশপ্রেম একটি কৌশল, যার মাধ্যমে রাজা, ভাগ বসাতে পারেন প্রজাদের সম্পত্তিতে। পাড়ার ক্লাবের মতো রাজ্য চালাতেও অর্থ লাগে, এ বার্তাটি শিক্ষা, দেশপ্রেমের মাধ্যমে প্রজাদের জানিয়ে দেয়। সংঘের ভাষায় যা মাসিক ও বার্ষিক চাঁদা, রাজার ভাষায় তা আয়কর, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, ইত্যাদি। শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের মূলে রয়েছে, প্রজাদের কাছ থেকে এই অর্থ আহরণ।

    রাজার চোখে একজন শিক্ষিত মানুষের গুরুত্ব আর অশিক্ষিত মানুষের গুরুত্ব সমান নয়। শিক্ষিত মানুষকে রাজা ‘নাগরিক’ ভাবেন, আর অশিক্ষিত মানুষকে ভাবেন শুধুই ‘মানুষ’। মানুষ আর নাগরিক এক জিনিস নয়। নাগরিক হলো তারা, যারা শিক্ষার মাধ্যমে, রাজার প্রতি আনুগত্য প্রকাশের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। আর মানুষ হলো জঙ্গলি ও স্বাধীন, যার উপর রাষ্ট্রের কার্যত কোনো কর্তৃত্ব নেই (তাকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা ছাড়া)। বাংলাদেশ, মালি, নাইজেরিয়া, ভারত, ও লাইবেরিয়ার গ্রামগুলোতে এ মানুষের অস্তিত্ব রয়েছে। তাদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রী, প্রাইম মিনিস্টার, রাষ্ট্রপতি, কিং, প্রেসিডেন্ট, অর্থমন্ত্রী, সাংসদ, সেক্রেটারি, সচিব, সিনেটর, এ শব্দগুলোর সাথে পরিচিত নন। এ শব্দগুলোর ক্ষমতা সম্পর্কেও তাদের কোনো ধারণা নেই। তাদের কাছে এ ক্ষমতাবান পদগুলো, আর পদগুলোতে আসীন ব্যক্তিগুলো, মূল্যহীন, এবং এ প্রান্তিক মানুষগুলোও, ওই পদধারী ক্ষমতাধর মানুষদের কাছে গুরুত্বহীন।

    বাংলাদেশ হয়তো একদিন, আমার লেখা পাঠ্যবইয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে শিশুদের তা পড়তে বলতে পারে, কিন্তু সে চাইবে না শিশুরা আমার মতো লেখালেখি করুক। কারণ এতে তার কোনো নগদ প্রাপ্তি নেই। তার চোখে, আমার চেয়ে হাকিমপুরী জর্দার মালিকের গুরুত্ব বেশি (যদিও আমি মানুষের ফুসফুস উন্নত করছি, আর হাকিমপুরী ধ্বংস করছেন)। যেকোনো রাজ্যে, রাজাদের প্রধান চাওয়া— শিশুরা যেন বড় হয়ে হাকিমপুরী জর্দার মালিকের মতো কর পরিশোধ করে, এবং না পারলে, তারা যেন রাজার হয়ে, অন্যদের কাছ থেকে কর আদায় করে দেয়।

    Download

    আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : ফিওদর দস্তয়েভস্কি | প্রথম পর্ব

    কর আদায়ে কিছু রাজ্য, বইপত্রকেও ছাড় দেয় না। সম্প্রতি লন্ডন থেকে এক লেখকের কিছু বই (পুরাতন, ব্যক্তিগত পড়ার বই) আফ্রিকায় ঢুকতে চেয়েছিলো, কিন্তু বিনা বাধায় ঢুকতে পারে নি। কর আদায়কারীরা তা আটকে দিয়েছিলো। তাদের দাবি, কর দিয়েই বই খালাস করতে হবে। এর আগেও ওই লেখকের সাথে এমনটি ঘটেছে, এবং কর পরিশোধ করেই তাঁকে বই খালাস করতে হয়েছে। আমার ধারণা, বইপত্রের উপর আফ্রিকান রাজারা বেশ নাখোশ। তারা চায়, তাদের প্রজারা যেন সারাক্ষণ বিদেশ থেকে সাবান, শ্যাম্পু, স্নোয়ের ডিব্বা, মদের বোতল, আতরের শিশি, সেন্টের ক্যান, টেলিভিশন, পেট কমানোর বেল্ট, আর রেঞ্জ রোভার গাড়ি আমদানী করে। বিদেশ থেকে কেউ বই এনে পড়বে, এটি তারা কল্পনাও করতে পারেন না।

    সেদিক থেকে আমি নাগরিকদের দুই শ্রেণীতে ভাগ করবো। এক শ্রেণীর কাজ হলো কর দেয়া, আরেক শ্রেণীর কাজ হলো কর আদায় করা। শিক্ষা এই দুই শ্রেণীকেই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। রাজ্যের প্রতিটি বিভাগ কোনো না কোনো উপায়ে কর আদায়ের সাথে যুক্ত। এ প্রসঙ্গে আমি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলোর কথা বলতে চাই। অনেকে মনে করতে পারেন, মেডিক্যাল কলেজের সাথে তো কর আদায়ের কোনো সম্পর্ক নেই, এখানে তো চিকিৎসার মতো একটি মহৎ কাজ সম্পাদন করা হয়ে থাকে। কিন্তু আমি বলবো, আপনার চিকিৎসার জন্য নয়, রাজারা মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছে তাদের করদাতা ও কর আদায়কারী নাগরিকদের বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে।

    একজন শিক্ষিত করদাতা নাগরিক রাজার কাছে দুধাল গাভীর মতো। গাভী মরে গলে রাজাকেও মরে যেতে হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে রাজা তার দুধাল গাভীদের বাঁচিয়ে রাখতে চায়। চিকিৎসকদের এতো প্রশংসা করা হয় কেন? কারণ রাজারা সব পারেন, শুধু চিকিৎসার কাজটি পারেন না। জ্বর হলেই তাদের ছুটে যেতে হয় ডাক্তারের কাছে। একটি সামান্য অসুখেও তুচ্ছ হয়ে উঠতে পারে রাজসিংহাসন, এজন্য রাজা কিছু মানুষকে ভুলিয়ে ভালিয়ে মেডিক্যাল কলেজে পাঠান, এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেন চিকিৎসাবিদ্যায়। রাজা যে তাদের শুধু মিথ্যে প্রশংসাই করেন, তার প্রমাণ দেখতে চাইলে আমরা তাকাতে পারি ‘কালেক্টর জেনারেল’ ও ‘চিফ সার্জন’, এ দুটি পদের দিকে। তারা দুজনই আফ্রিকার একটি দেশের জন্য কর আহরণ করে থাকেন। কিন্তু প্রথম জন এ কাজটি সরাসরি করেন, আর দ্বিতীয়জন, এ কাজটি পরোক্ষভাবে, করদাতা ও কর আদায়কারীদের জীবন বাঁচিয়ে করেন। কালেক্টর জেনারেল হলেন দেশটির প্রশাসনিক পুলিশিংয়ের অংশ, আর চিফ সার্জন হলেন নাগরিকদের অসুখ পুলিশিংয়ের অংশ। কিন্তু কালেক্টর জেনারেল যাপন করেন বিলাসবহুল গুরুত্বপূর্ণ জীবন, আর চিফ সার্জন, যিনি একজন ডাক্তার, যাপন করেন অবহেলাময় অগুরুত্বপূর্ণ জীবন।

    তারপর পড়ুনঃ দার্শনিক ভাষণ | বিষয়: শিক্ষা | তৃতীয় পর্ব

    লিখেছেনঃ মহিউদ্দিন মোহাম্মদ

    Download

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    নব্বই দশকের শৈশব স্মৃতি ও এক প্রজন্মের কথা

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন