বইঃ নিষাদ
লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ
প্রকাশনীঃ প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৭২
প্রচ্ছদ মূল্যঃ ১৪০ টাকা
কাহিনীঃ
দেবী এবং নিশীথিনীর পর নিষাদ হচ্ছে মিসির আলি সিরিজের তৃতীয় বই। প্রথমে যখন মিসির আলি সিরিজ সম্পর্কে ধারণা ছিলো তখন ভেবেছিলাম নিষাদ বইটি মনে হয় হুমায়ূন আহমেদের ছোট্ট ছেলে নিষাদকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এখানে গল্পটি মনির নামের একজন যুবককে ঘিরে।
মনির এক অদ্ভুত মানুষ। এদ্ভুত এই কারণে সে আমাদের মত সাধারণ মানুষ নয় বরং তার একাধিক জীবন আছে। বিষয়টা ভালো করে পরিষ্কার করছি। আমাদের জীবন একটি, এক জীবনে আমাদের জন্ম এবং মৃত্যু হয়। জন্ম মৃত্যুর মাঝে বিবাহ, অসুখ হয়। এই জীবনে হয় আমরা দারিদ্র্য কিংবা ধনী। মনিরের সাথে আমদের এখানেই তফাৎ। অর্থাৎ আমাদের মত মনিরের একটি জীবন না বরং অসখ্য জীবন। কোন জীবনে সে অসহায় মাতা পিতা হারা। আবার কোন জীবনে তার বাবা বেচে আছেন। কোন জীবনে মনির বিয়ে করেছে তার সন্তান আছে। মনির চায় তার এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আর তাই মিসির আলীর কাছে আসা।
সবশুনে মিসির আলী মনে করেন মনিরের বিষয়টা হচ্ছে স্বপ্ন। সে স্বপ্ন দেখে একাধিক জীবনের। মিসির আলীর এই কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে মনির বের করলে একটা প্রেসক্রিপশন। যে প্রেসক্রিপশন সে নিয়ে এসেছে অন্য জগত থেকে। শুধু এটা নয় আরো বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আসা শুরু করলো। ফলে মিসির আলী বিশ্বাস করলেন এমনা হতেই পারে। তিনি চাপ দিতে থাকলেন তাকে আরো অজানা তথ্য জানার জন্য। সেইসথে অন্য জগতে পাওয়া তথ্যে গুলোর ব্যাপারে জানতে ছোটাছুটি এবং বিস্তর পড়াশোনা করতে লাগলেন। এভাবেই এগোয় কাহিনী।
আরও পড়ুনঃ অন্যভুবন হুমায়ূন আহমেদ রিভিউ
হুমায়ূন আহমেদ এই গল্পটিকে একটু ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন। সর্বোপরি বলতে চাই, নিষাদ বেশ ভালোই লেগেছে। তবে এই গল্পে লেখক মনিরকেই বেশি ফোকাস করেছেন, মিসির আলী যে ছিলেন না তা নয়। তবে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে মনিরকেই বলা যায়। যাই হোক, মিসির আলী তার যুক্তির জায়গা থেকে কি করে মনিরের সমস্যা সমাধান করেছিলেন, বা পেরেছিলেন কিনা। তা জানতে পাঠককে একেবারে শেষ পর্যন্ত যেতে হবে। বলতে গেলে পাতায় পাতায় রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা অনুভব করবে পাঠক। তাহলে প্রিয় পাঠক, সুযোগ পেলে অবশ্যই নিষাদ বইটি পড়বেন। আশাকরি আপনাদের সময়টা অপচয় হবে না।
কিছু উক্তিঃ
-জীবনে যেসব জিনিস আমরা পাই না, অথচ সেসব জিনিসের কামনা বোধ করি- স্বপ্নে তাদের পাই।
-পৃথিবীতে ভালো মানুষের সংখ্যা কম। কিন্তু এই অল্প ক’জনের হৃদয় এত বিশাল যে, সমস্ত মন্দ মানুষ তাঁরা তাঁদের হৃদয়ে ধারণ করতে পারে।
-হাতের কাছে থাকলেই হাত বাড়ালে সব কিছু পাওয়া যায় না।
-নাপিত ফোড়া কাটতে পারে, সার্জেন চাকু হাতে নিতেও ভয় পায়।
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
হুমায়ূন আহমেদ রচিত সকল বই রিভিউ সহ PDF ডাউনলোড করুন