Skip to content
Home » ব্রডগেজ মিটারগেজ ডুয়েলগেজ ও স্ট্যান্ডার্ডগেজ রেলের মাপ ও একটি অদ্ভুত সংখ্যা

ব্রডগেজ মিটারগেজ ডুয়েলগেজ ও স্ট্যান্ডার্ডগেজ রেলের মাপ ও একটি অদ্ভুত সংখ্যা

    ব্রডগেজ মিটারগেজ ডুয়েলগেজ ও স্ট্যান্ডার্ডগেজ রেলের মাপ
    Redirect Ads

    USA এক আজব দেশ। আর আজব এর অনেক কারণ এর মধ্যে অন্যতম এদেশে সমস্ত নিয়মকানুন ব্রিটিশ দের উল্টো, কিন্তু একটি ক্ষেত্রে এরা ব্রিটিশ এর অনুসারী আর সেটি হলো রেললাইন এর প্রস্থ এর মাপ। USA এর স্ট্যান্ডার্ড রেল gauge এর মাপ হলো 4 ফুট 8.5 ইঞ্চি। অদ্ভুত একটি সংখ্যা।

    এবার প্রশ্ন হলো, এরা কেন এমন একটি সংখ্যা নির্ধারণ করলো?
    উত্তর টা খুব সোজা, এর কারণ ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার রা ই USA এর প্রথম রেল নির্মাণ করেছিল আর এই ইঞ্জিনিয়ার রা এই সংখ্যা ই ব্রিটেন এ gauge হিসেবে ব্যবহার করেছিলো।

    Download

    তাহলে পরবর্তী প্রশ্ন, ব্রিটিশরাই বা কেন এমন একটা অদ্ভুত সংখ্যা ব্যবহার করতো?
    ইউরো তে ফাইনাল এ ব্রিটিশ ফ্যান দের কান্ড দেখে অনেকেই বলবে আরে ওরা ওরোম ই অদ্ভুত কাজ করে। কিন্তু আসল উত্তর টা হলো ব্রিটেন এ যারা প্রথম রেল লাইন আর ট্রেন এর কামরা বানিয়েছিল,তারা আসলে আগে wagon অর্থাৎ ঘোড়ায় টানা কোচ গাড়ি বানাতো।তাই তারা ওই একই যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছিলো যা তারা কোচ বানাতে ব্যবহার করতো আর ওই কোচ এর দুটো চাকার দূরত্ব ছিল 4 ফুট 8.5 ইঞ্চি।

    তাহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন, কোচ গুলোর ই অমন অদ্ভুত দূরত্বের চাকা কেন ছিল?
    এর কারণ ছিল ইউরোপ এর অধিকাংশ দূরপাল্লার রাস্তা ছিল সেই আমলে খুব পুরোনো যার নির্দিষ্ট মাপে rut ( “a long deep track made by the repeated passage of the wheels of vehicles.”) বা ক্ষয়ে যাওয়া দাগ বা পরিখা থাকতো। সেই রাস্তায় চলার সময় অন্য মাপের চাকার দূরত্ব থাকা কোচ গুলোর চাকা খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যেত, এই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতে ব্রিটিশ রা সব কোচ গাড়ির চাকা ই সমদুরত্বে লাগানো শুরু করে যার প্রস্থ 4 ফুট 8.5 ইঞ্চি।

    আরও পড়ুনঃ রেল লাইনে পাথর দেয়া হয় কেন?

    আমার তো পুরা মাথাই নষ্ট। তাহলে যত নষ্টের মূল ওই রাস্তা গুলো। হুমম তোপসে!! খুঁজে বের করতো কোন গামবাট ওরোম মাপের রাস্তা বানিয়েছিল?
    ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেলো ইউরোপ এর অধিকাংশ দূরপাল্লার রাস্তা (ইংল্যান্ড সহ) প্রথম তৈরি হয় রোমান সাম্রাজ্য এর আমলে। ওরাই প্রথম ওদের ঘোড়ার গাড়ি চলাচল এর জন্য ওই রাস্তা বানিয়েছিল, আর তারপর থেকে বহুযুগ ওই একই রাস্তা ব্যাবহার হয়েছে।

    Download

    কিন্তু তাহলে রাস্তায় পরিখা বা rut কিভাবে?
    তখন তো কংক্রিটের রাস্তা হতো না। তো বারবার ঘোড়ার গাড়ি একই রাস্তা দিয়ে চলার সময় ওই গর্ত এর মতন পরিখা তৈরি হতো প্রথম বার ওই পরিখা তৈরি হওয়ার পর বাকি ঘোড়ার গাড়ি ও সেই একই পরিখা বরাবর চলতো কারণ যাতে চাকা ভেঙে না যায়।সাধারণত দূরপাল্লার রাস্তা তৈরি হতো যুদ্ধে যাওয়ার স্বার্থে আর সবার প্রথম পরীখা গুলো তৈরি হতো সৈন্যবাহিনী এর গাড়ির চাকায়।
    তাই প্রমান হলো আধুনিক গণতান্ত্রিক USA এর রেল এর মাপ নির্ধারিত হয়েছিল সেই সুপ্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে। কারণ এক মহাপুরুষ বলে গেছেন.. ” bureaucracies live forever…”

    তোপসে : “হুমম ঘোড়ার গাড়ি তে চড়ে চড়ে ঘোড়ার নিতম্ব এর মতোই বুদ্ধি দেখছি রোমানদের।ওরাই তাহলে সবার প্রথম এই সংখ্যা নিয়ে আসে..”
    ফেলুদা : সাবাশ তোপসে!!! এইতো একদম ঠিক ধরেছিস।আসলে এই সংখ্যা টা ঘোড়ার নিতম্ব থেকেই এসেছে। আসলে প্রাচীন রোমান সৈন্য এর ঘোড়ার গাড়ি গুলো দুটো ঘোড়ায় টানতো।
    তাই ঘোড়ার গাড়ির প্রস্থ = দুটো পাশাপাশি ঘোড়ার নিতম্ব এর প্রস্থের যোগফল
    এই পর্যন্ত পড়ে যাঁরা ভাবছেন উফফ অবশেষে সমাধান হলো রহস্যের,উহু!! দাঁড়ান দাঁড়ান!!!
    “পিকচার অভি বাকি হ্যা মেরে দোস্ত…”

    আরও পড়ুনঃ বাংলা সাহিত্যে ত্রয়ী বা ট্রিলজি | Trilogy in Bengali Literature PDF

    যারা আমরা রাত জেগে NASA এর একের পর এক space shuttle লঞ্চ দেখি,তারা নিশ্চই দেখেছি যে লঞ্চ এর সময় রকেট এর প্রধান ফুয়েল ট্যাংক এর পাশে দুটো রকেট বুস্টার বা SRB থাকে,
    10 9 8 7 6 5 4 3 2 1… ফুঁস করে জ্বলে ওঠে বুস্টার,মেঘের মতন ধোয়া ছেড়ে মহাকাশ এর উদ্দেশ্য যাত্রা।
    তো এই বুস্টার গুলো তৈরি করা হয় USA এর ই Utah নামক একটা স্টেট এ।এবং তারপর নিয়ে আসা হয় launchpad এ,ট্রেন এ করে। আর Utah বিখ্যাত তার পাথুরে পাহাড় এর জন্য আর রেল লাইন আসে সেই পাহাড়ের ভেতরের tunnel দিয়ে,যেটা ওই line এর প্রস্থ এর চেয়ে সামান্য ই চড়া।

    Download

    বিজ্ঞানী রা প্রথমে চেয়েছিলেন ওই বুস্টার গুলো আরেকটু দূরে লাগাতে পরস্পর এর থেকে, কিন্তু ওই বিধি বাম। ওই রেল লাইন আর টানেল এর জন্য design এ পরিবর্তন করতে বাধ্য হলেন।

    তাহলে কি দাঁড়ালো?
    একটা মেজর স্পেস shuttle যা একবিংশ শতাব্দী এর পৃথিবীর সবথেকে advanced transportation সিস্টেম, সেটা এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটা বৈশিষ্টের নির্ধারণ এবং অবতারণা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে,মাত্র দুটো ঘোড়ার নিতম্ব এর মাপ দ্বারা।
    আর তোমরা মনে করো যে নিতম্ব সবসময় খিল্লি মজার বস্তু??
    NASA এর একজন বিজ্ঞানী এর উক্তি শোনো তবে,
    ” Ancient horse’s ass can control almost everything..”

    কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ronnie sexton
    তথ্য সূত্র: ইন্টারনেট
    চিত্র : “boston-northampton amtrack rail line”, Massachusetts, USA
    Date : 29th August 2021
    Written by Pronay Dutta

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন