বাংলা সাহিত্যে ত্রয়ী বা ট্রিলজি | Trilogy in Bengali Literature PDF
ইংরেজি ‘ট্রিলজি’-র বাংলা পরিভাষিক শব্দ ‘ত্রয়ী’। ‘ত্রয়ী উপন্যাস’ বলতে মূলত বোঝায়, যদি কোন উপন্যাসের তিনটি পাঠ থাকে। সিরিজ লেখার ক্ষেত্রেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ট্রিলজিতে কাহিনীর ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। আবার প্রতিটি গ্রন্থ আলাদা ভাবেও পাঠ যোগ্য। বাংলা সাহিত্যে ত্রয়ী বা ট্রিলজি রচনার উদাহরন খুব বেশি না হলেও, একেবারে কমও না।
আমাদের অনেকে একে আবার সিরিজ বলেও আখ্যায়িত করে থাকি। এই ধরনের সিরিজগুলো হচ্ছে মূলত ধারাবাহিক বই নিয়ে। যেমন ধরুন, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ তে অপুর কাহিনীর যেই যায়গায় গিয়ে উপন্যাসের ইতি টানা হয়েছিলো, পরবর্তী বই, ‘অপরাজিত’-তে গিয়ে ঠিক সেখান থেকেই কাহিনীর আরম্ভ হয়েছিলো। আবার যেমন হুমায়ূন আহমেদ এর বিখ্যাত বই ‘দেবী’ যেখানে শেষ হয়েছিলো, সেখান থেকেই পরবর্তী বই ‘নিশীথিনী’ শুরু হয়েছিলো।
আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত
নিচে বাংলা সাহিত্যে কিছু উল্লেখযোগ্য ত্রয়ী বা ট্রিলজির উল্লেখ করা হলোঃ
⏩ নবীনচন্দ্র সেন লিখেছেন ত্রয়ী মহাকাব্য
- “রৈবতক”,
- “কুরুক্ষেত্র”,
- “প্রভাস”।
⏩ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ট্রিলজি
- “আনন্দমঠ“,
- “দেবী চৌধুরানী“,
- “সীতারাম“
আরও পড়ুনঃ জনপ্রিয় ও সেরা কিছু বই PDF রিভিউ | যে বই গুলো সবার পড়া দরকার
⏩ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিখ্যাত অপু ট্রিলজি
- “পথের পাঁচালি”,
- “অপরাজিত”,
- “কাজল” (তবে উল্লেখ্য যে, “কাজল” উপন্যাসটি লিখেছিলেন বিভূতিভূষন বন্দোপাধ্যায়ের ছেলে তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় )
⏩ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন
- “ধাত্রী দেবতা”,
- “গণদেবতা”,
- “পঞ্চগ্রাম”।
⏩ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর রয়েছে
- “পুতুলনাচের ইতিকথা“,
- “সহরবাসের ইতিকথা”,
- “ইতিকথার পরের কথা” ।
⏩ আশাপূর্ণা দেবী লিখেছেন “সত্যবতী” ট্রিলজি
- “প্রথম প্রতিশ্রুতি”,
- “সুবর্ণলতা“,
- “বকুলকথা”।
⏩ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত টাইম ট্রিলজি
- “সেই সময়”,
- “প্রথম আলো”,
- “পূর্ব-পশ্চিম”
⏩ সমরেশ মজুমদারের
- “উত্তরাধিকার”,
- “কালবেলা”,
- “কালপুরুষ”
⏩ বিমল মিত্র লিখেছেন তার বিখ্যাত ট্রিলজি
- “কড়ি দিয়ে কিনলাম”,
- “সাহেব বিবি গোলাম”,
- “একক দশক শতক”
⏩ বিমল করের ত্রয়ী একত্রে “দেওয়াল” উপন্যাস নামে পরিচিত
- “ছোট ঘর” ,
- “ছোট মন” ,
- “খোলা জানলা” ।
⏩ শংকর এর একটি বিখ্যাত ট্রিলজি
- “জন অরন্য”,
- “সীমাবদ্ধ”,
- “আশা আকাঙ্ক্ষা”
⏩ শংকরের আরেকটি বিখ্যাত ট্রিলজি।
- “ঘরের মধ্যে ঘর”,
- “চৌরঙ্গী”,
- “কত অজানারে”
⏩ শংকরের আরও একটি বিখ্যাত ট্রিলজি।
- “স্থানিয় সংবাদ”,
- “সুবর্ন সুযোগ”,
- “বোধদয়”➡️
⏩ গজেন্দ্রকুমার মিত্রের
- “কলকাতার কাছেই”,
- “উপকন্ঠে”,
- “পৌষ ফাগুনের পালা”
⏩ অতীন কুমার লিখেছেন তার বিখ্যাত ট্রিলজি
- “নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে”,
- “অলৌকিক জলযান”,
- “ইশ্বরের বাগান”।
⏩ প্রফুল্ল রায় এর
- “কেয়াপাতার নৌকা”,
- “শতধারায় বয়ে যায়”,
- “উত্তাল সময়ের ইতিকথা”।
⏩ গোপাল হালদারের লেখা ত্রয়ী রচনা। এই উপন্যাস গুলিকে একত্রে “ত্রিদিবা” (১৯৭৮) বলা হয়।
- “একদা”,
- “অন্যদিন”,
- “আর একদিন”
⏩ বুদ্ধদেব বসুর
- “প্রথম শ্রবণ করুন”,
- “রঙিন পথে”,
- “যবনিকা কম্পমান”।
⏩ সতীনাথ ভাদুড়ীর
- “অচিন রাগিণী” ,
- “সংকট” ,
- “দিকভ্রান্ত” ।
⏩ প্রেমেন্দ্রনাথ মিত্রের
- “পাঁক” ,
- “কুয়াশা” ,
- “মিছিল” ।
⏩ শওকত আলীর
- “দক্ষিনায়নের দিন”,
- “কুলায় কালস্রোত”,
- “পূর্বরাত্রি পূর্বদিন”।
⏩ আবু জাফর শামসুদ্দীন লিখেছেন
- “ভাওয়ালগড়ের উপাখ্যান”,
- “পদ্মা মেঘনা যমুনা”,
- “সংকর সংকীর্তন”।
⏩ হুমায়ুন আহমেদের
- “জোছ্না ও জননীর গল্প“,
- “মধ্যাহ্ন”,
- “মাতাল হাওয়া” ।
আবার কোন লেখার ৪ টি পাঠ থাকলে তাকে বলে টেট্রালজি, সে হিসেবে সমরেশ মজুমদার লিখেছেন টেট্রালজি ➡️
- “উত্তরাধিকার”,
- “কালবেলা”,
- “কালপুরুষ”,
- “মৌষলকাল”।
লিখেছেনঃ অনন্যা দেবনাথ
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস সমগ্র ডাউনলোড করুন