একাত্তরের দিনগুলি pdf রিভিউ জাহানারা ইমাম

একাত্তরের দিনগুলি বই রিভিউ PDF | জাহানারা ইমাম | Ekattorer Dinguli PDF

Redirect Ads

বইয়ের নামঃ একাত্তরের দিনগুলি
লেখকঃ শহীদ জননী জাহানারা ইমাম
ধরনঃ মুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি / দিনলিপি / দলিল / স্মৃতিচারণ / নন ফিকশন
প্রকাশনীঃ সন্ধানী প্রকাশনী
মূল্যঃ ৩০০ টাকা
প্রথম প্রকাশঃ ১৯৮৬
পৃষ্ঠা: ২৬৮

স্বাধীনতা তুমি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি।

সংক্ষেপ:

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের লেখা বই, না বই না, দিনলিপি.. …।।
উনিশশো একাত্তর সালের দিনলিপি। তাই নাম একাত্তরের দিনগুলি, একাত্তরের দিনগুলি’ বইটি ডায়েরীর আদলে লেখা।

Download

প্রায় প্রতি দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাকে তারিখ দিয়ে লিখে গেছেন ডায়েরির পাতাই, কিভাবে সম্ভব ছিল লেখা? এত প্রাণ শক্তির অধিকারিণী তিনি। বেশ শিক্ষিত পরিবারের, মুক্তি যুদ্ধ চলাকালীন নিজের বাড়ি, শ্বশুর, নিজের মা সহ কত মানুষ কে একসাথে দেখাশোনা করে গেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রায় সব বড় ঘটনাই দিন অনুযায়ী অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাথে উঠে এসেছে।যেমন ২রা মার্চ পতাকা উত্তোলন থেকে শুরু করে ৭ মার্চ এর ভাষণ…।।

আরও পড়ুনঃ রাইফেল রোটি আওরাত PDF রিভিউ | আনোয়ার পাশা

অত্যন্ত মেধাবী ছেলে রুমি, মা অন্তপ্রাণ।অত্যন্ত মেধাবী, রাজনীতি সচেতন ছেলে, দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রবল। ১৯৭১ সাল, উত্তাল দেশ, উত্তাল ঢাকা।। জাহানারা ইমাম বাংলা মায়ের এক প্রতিচ্ছবি, দেশের জন্য ছেলেকে উৎসর্গ করেছেন, লিখেছেন বইটি। আই এস পাশ করে “ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ” এ ভর্তি ক্লাস শুরুর অপেক্ষা।

একদিন তার যুদ্ধে যাবার সুযোগ এসে গেল। কিন্তু রুমী মাকে না জানিয়ে কোন করত না, তাই মায়ের কাছে এলো অনুমুতি নিতে, পেলোও, মা তাকে বলেছিল

Download

“যা তোকে দেশের জন্য উৎসর্গ করলাম”… মেলাঘরে চলে গেলো সে………।। একদিন শহীদ হন “শফি ইমাম রুমী”।

ডায়েরি তে ক্রমে ক্রমে এসেছে, নাসিরুদ্দিন বাচ্চু, আজাদ, জুয়েল সহ আরো কত মানুষ…
কেবল সন্তান হারানোর গল্প না এটি…। এক মা এর মা থেকে সমগ্র শহীদের জননী হয়ে ওঠা… কত প্রাণশক্তি ছিল তার……।। হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার অকাট্য প্রমাণ পাবেন এই বইটি তে…। যুদ্ধের মাঝামাঝি ছেলে, যুদ্ধ শেষে স্বামী কে হারানো এই মা, এই জননী কিভাবে শহীদ জননী হয়ে উঠলেন, জানতে হলে বইটা পড়বেন।

আরও পড়ুনঃ বন্দী শিবির থেকে কাব্যগ্রন্থ PDF রিভিউ | শামসুর রাহমান

বইটি মনযোগ দিয়ে পড়লে দেখা যাবে মার্চের ১ তারিখ থেকে ডিসেম্বরের ১৭ তারিখ পর্যন্ত ১৬৮ দিনকে উপরোক্ত বর্ণনার আলোকে ভাগ করলে প্রতিটি মাসে যে বর্ণনাগুলো স্থান পায় তা নিম্নরূপ:

মার্চ : অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে সর্বস্তরের জনগণের ক্ষোভ, আন্দোলন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গোপন ষড়যন্ত্র।

Download

এপ্রিল : অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীর ভয়াবহ চিত্র।

মে : অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীর চিত্র, গেরিলা বাহিনী গঠন, মুক্তিফৌজের হালকা মাথাচাড়া।

জুন : গেরিলা বাহিনীর সক্রিয়তা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি, বিদেশিদের সাহায্য, হানাদার বাহিনী কর্তৃক ধ্বংসযজ্ঞ স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা।

জুলাই : মুক্তিযোদ্ধা আর গেরিলাদের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শুরু।

Download

আগস্ট : গেরিলা বাহিনীর সফল অভিযান, গেরিলা বাহিনীর অনেকে হানাদার কর্তৃক গ্রেফতার, মধ্যবিত্ত উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সাহায্য।

সেপ্টেম্বর : গেরিলাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন।

অক্টোবর : গেরিলাদের আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠার কাহিনী।

নভেম্বর : মুক্তিযুদ্ধের জয়ের মাত্র অতিদ্রুত অগ্রসরমান।

ডিসেম্বর : বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন, আনন্দের কান্নায় সকলের প্রাণভরটি ভালোবাসার হাসি এবং সর্বোপরি মার্চ-ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতিটি মাসে মায়ের ভূমিকা বিদ্যমান।

আরও পড়ুনঃ সাত সাগরের মাঝি কাব্যগ্রন্থ PDF রিভিউ ফররুখ আহমদ

Download

বই থেকেঃ

“…. রুমির সঙ্গে কয়েকদিন ধরে খুব তর্ক বির্তক হচ্ছে। ও যদি ওর জানা অন্য ছেলেদের মতো বিছানায় পাশ বালিশে শুইয়ে বাবা মাকে লুকিয়ে পালিয়ে যুদ্ধে চলে যেতো তাহলে একদিক দিয়ে বেঁচে যেতাম। কিন্তু ওই যে ছোটবেলা থেকে শিখিয়েছি, লুকিয়ে বা পালিয়ে কিছু করবে না। নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা পড়েছি। রুমি আমাকে বুঝিয়েই ছাড়বে,সে আমার কাছে মত আদায় করেই ছাড়বে। কিন্তু আমি কি করে মত দিই? রুমির কি যুদ্ধ করার বয়স? এখনত তার লেখাপড়ার সময়…”

ছেলেকে বুঝাতে বুঝাতে একসময় নিজেই রাজি হয়ে যান ছেলের সাথে।

“ঠিক আছে তোর কথাই মেনে নিলাম। দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি। যা তুই যুদ্ধে যা।”

তিনি শুধু রুমিকে যুদ্ধে পাঠিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না। প্রায় সময় তার বাসায় আসত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা। তিনি তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতেন। একদিন অপারেশন সেরে এসে রুমি জাহানারা ইমামকে বললেন,

“আম্মা পাশের গলিতে এক বাড়িতে অস্ত্র রেখে এসেছি। এক্ষুনি নিয়ে আসতে হবে। তোমাকে যেতে হবে গাড়ি নিয়ে। মহিলা ড্রাইভার দেখলে ওরা গাড়ি থামাবে না। আমি যাব তোমার সঙ্গে।”

১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ এ তিনি লিখেন,

“২৫ মার্চ যে ফ্ল্যাগ পোলটায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে আবার নামিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম, সেই ফ্ল্যাগ পোলটায় আজ আবার সেদিনের সেই পতাকাটাই তুললাম। সবাই কাঁদতে লাগলেন। আমি কাঁদতে পারলাম না। জামীর হাত মুঠিতে চেপে দাঁড়িয়ে রইলাম।”

আরও পড়ুনঃ মা উপন্যাস ম্যাক্সিম গোর্কি PDF রিভিউ

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ

বইটা আমি পেয়েছিলাম একটা রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে, ২০১০ সালে, বইটা পাওয়ার পর আমি টানা দু বার পড়ি। প্রতিবার যখন পড়ি তখণ মনে হয় নতুন করে জানছি সব, আমার চোখের সামনে বোধহয় ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে……।।

মৃত্যুর পরেও আজ আমাদের মাঝেই আছেন শহীদ জননী………।। বুকে পাথর চাপা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কাজ করে গেছেন, নিজের শ্বশুর কে সামলেছেন………। নিজের মা কে দেখেছেন, কিভাবে পেরেছিলেন???? আসলে মন্তব্য করতে গিয়ে কি বলব আমি জানিনা, বলব বইটা পড়েন, পস্তাবেন না। দেশ কে জানবেন, হয়তো দেশের প্রতি আরো একটু ভালবাসা বাড়বে…………।
রেটিংঃ ৫/৫

Download

লিখেছেনঃ তাসফিয়া প্রমি

বইঃ একাত্তরের দিনগুলি [ Download PDF ]
লেখকঃ
জাহানারা ইমাম

ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

জনপ্রিয় ও সেরা ৫০ বই PDF রিভিউ | যে বই গুলো সবার পড়া দরকার

Facebook Comments

Similar Posts