Skip to content
Home » গর্ভধারিনী PDF সমরেশ মজুমদার | Gorvodharini Samaresh Majumdar

গর্ভধারিনী PDF সমরেশ মজুমদার | Gorvodharini Samaresh Majumdar

    Gorvodharini PDF গর্ভধারিনী 
    Redirect Ads

    গর্ভধারিনী, উপন্যাসটি তিনজন মানব এবং একজন মানবীর বিপ্লবের উপখ্যান নয়, গল্পটি একটি উপলব্ধির, গল্পটি বিশ্বাসের, নির্মাণের। আনন্দ, কল্যান, সুদীপ এবং জয়িতা চার জন মৌলিক চরিত্রের চিন্তার বৈচিত্রতা অথচ চেতনার সম্পৃক্ততা নিয়ে এক সামন্তবাদী সমাজ থেকে সাম্যবাদী পৃথিবীর স্বপ্নের পুথিলিপি হলো গর্ভধারিনী । যেখানে একটা সাম্যবাদী সত্ত্বাকে লালন করে এমন এক গর্ভধারিনীকে তুলে ধরা হয়েছে যার স্পন্দনে জন্ম নেবে অশিক্ষা, লিপ্সা, মিথ্যে সংস্কারমুক্ত একটি নব প্রজন্ম।

    সত্তরের দশকের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ি আন্দোলন মুখ থুবড়ে পরলেও ঠিক তার পরবর্তী প্রজন্মের এক দল তরূণ-তরূণী এই আন্দোলনের চেতনা দ্বারা তখনো দেশটাকে শোষণমুক্ত করার স্বপ্ন দেখে। আর আনন্দ, কল্যান, সুদীপ এবং জয়িতা ছিলো সেই দলের সদস্য যারা শুধু স্বপ্ন দেখে থেকে থাকেনি, হাতে তুলে নিয়েছিলো অস্ত্র। বারুদের চিৎকারে কাপিয়ে দিয়েছিলো সমস্ত বুর্জোয়া শক্তির তোষকদের।

    Download

    সুদীপ বৃত্তবান পরিবারের সন্তান হওয়াই পুজিবাজী মানুষগুলো ভদ্রতার মুখোশের আড়ালে যে নোংরা আর নির্দয় মূর্তি ধারণ করে রাখে সেটা তার বাবা অবনী তালুকদারের মাঝেই খুজে পেয়েছিলো। তাই বিদ্রোহের আগুন শৈশব থেকেই ওকে তাড়া করেছে। কল্যাণ বাংলার ঘরের নিম্ন মধ্যবৃত্ত পরিবারের প্রতিনিধি, যারা নিজেদের দরিদ্র না বলে মধ্যব্রত্ত বলার মাঝে একটু স্বস্তি খুজে নেয়। তাই বিপ্লবের পথে সে তার পরিবারের মুক্তির পথ খুজতে চেয়েছিলো ।আনন্দর গল্পটা একটু আলাদা। বাবা নকশাল আন্দোলোনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো শিকড় থেকে। আর নিজের অজান্তেই করা ভুল এবং শাসক গোষ্ঠীর শিকড় উপড়ানোর বিষ তাকে আত্নহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করে। নেতৃত্ব আনন্দকে রক্ত থেকে টানে। জয়িতা সদ্য নিম্ন মধ্যবৃত্ত থেকে উচ্চ মধ্যবৃত্ত পরিবারের সন্তান। আর অর্থের সাথে তার বাব-মায়ের চিন্তার অদ্ভুত এবং অশালীন পরিবর্তন জয়িতাকে বাল্যকাল থেকে একাকীত্বের শিকলে আষ্ঠেপৃষ্ঠে রেখেছে। এই একাকীত্ব ওর ভেতরে মুক্তধারা প্রবাহিত করেছে অজান্তেই। আর কলেজে ওদের প্রাথমিক পরিচয় হয় আর তারপর একটু একটু করে চেতনার সাদৃশ্য ওদের বিপ্লবের পথে ডাক দেয়।

    প্রথম অভিযান টা হয় প্যাড়াডাইস নামে পতিতালয়ে যেখানে আশপাশের হাজারো মানুষকে আধারে নিমজ্জিত করে আলোর রোশনাইতে চলে সভ্য মানুষের বর্বর আর যৌন ক্ষুধার তান্ডব নৃত্য। সেখানে সফলতা ওদের আত্নবিশ্বাসী করে তোলে। এর পরেই ওরা ভেজাল ঔষধের কারখানা বোমা মেরে পুড়িয়ে দেয় যেগুলো নীরব ঘাতক হয়ে সাধারণ মানুষকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। শেষ অভিযানটি ওরা এক মন্ত্রী আর তার ক্ষমতার ভিত্তি একটি বিশেষ এলাকার শীর্ষ অপরাধী নানুভাইকে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু ওদের এই সশস্ত্র বিপ্লব জনমনে ওদের প্রত্যাশিত আলোড়ন করতে ব্যর্থ হয়। পুলিশের তৎপরতা ওদের বাধ্য করে কলকাতা ছেড়ে দূরে আশ্রয় নিতে। আনন্দর সিন্ধান্ত অনুযায়ী ওরা নেপালের উদ্দেশ্য পাড়ি জমায়। পথে মৃত্যুহিম ওদের চলার পথ রুদ্ধ করে কিন্তু পাহড়ী রূপের স্রোত কাঞ্চনজংগার বিহব্বল রূপ ওদের এগিয়ে নিয়ে চলে অভীষ্ট লক্ষ্যে। অবশেষে ওরা পাহাড় ঘেরা এক সুবিধা বঞ্চিত গ্রাম তাপল্যাঙে এসে পৌছায়।

    তাপল্যাঙের অশিক্ষা, সংকীর্ণ জীবনধারা, সেবার অনুপস্থিতি, প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা এ গ্রামের মানুষগুলোকে জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। কিন্তু তারপরেও এখানে শাসনের নামে শোষণ নেই, বিত্ত আর দারিদ্রতার গন্ডি নেই আর এই ব্যপারগুলোকে আনন্দকে নাড়া দেয়। আনন্দ স্বপ্ন দেখলো নির্মাণের, এক শোষণহীন সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার। আনন্দের নেতৃত্বে ওরা ঠিক করে ওরা এই অসহায় মানুষগুলোকে সাহায্য করবে। জরাগ্রস্থ এই মানুষগুলোর জন্য ঔষধ আনতে নিজেকে এগিয়ে দেয় কল্যাণ। কল্যাণ কি ফিরে এসেছিলো? দিতে পেরেছিলো কি তাপল্যাঙের এই সরল মানুষের আরোগ্যের জন্য ঔষধের নামের মুক্তি? ওরা কি পেরেছিলো তাপল্যাঙে মানুষের একটা নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখাতে যেখানে কেউ না খেয়ে থাকবে না, জরায় ভুগে মরবে না, সবাই ভাবনার সাথে জীবনধারা একই সাথে প্রবাহিত হবে? জন্ম দেবে এক নতুন প্রজন্মের যার রক্তধারা এই মানুষগুলোকে সুখের পৃথিবীতে বয়ে নিয়ে যাবে যুগ থেকে যুগান্তর।

    আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত

    Download

    ব্যক্তিগত অভিমতঃ
    কবি নির্মলেন্দু গুণ উনার স্ববিরোধী কবিতায় একটা ধ্রুব সত্য কথা বলেছিলেন,
    আমি জন্মের প্রয়োজনে ছোট হয়েছিলাম,
    এখন মৃত্যুর প্রয়োজনে বড় হচ্ছি ।
    কিন্তু কিছু মানুষ কখনো কখনো তার কর্ম দিয়ে মৃত্যুকেও ছাড়িয়ে যায়। আনন্দ, কল্যান, সুদীপ এবং জয়িতা সেই চারজন সেই অচেনা পৃথিবীর প্রতিনিধি যারা তাদের আয়ু দিয়ে বাচে না, বাচে কর্ম দিয়ে। কখনো বিপ্লবী হয়ে, কখনো মানবতার উষ্ণ স্পর্শ হয়ে আবার কখনো গর্ভধারিনী রূপে নতুন নির্মাণের শিল্পকার হয়ে।

    প্রিয় উক্তিঃ

    “পেতে হলে কিছু দিতে হয়। ত্যাগ করতে না চাইলে পাওয়ার আশা অর্থহীন। সুদিপ বলেছিল, বাঙ্গালী মল মুত্র এবং বীর্য ছাড়া কিছুই ত্যাগ করতে জানে না।”

    “পুরুষ নতুন প্রজন্ম লালন করতে পারে, বীজ বপণ করতে পারে কিন্তু নির্মাণ করতে পারে না।”

    লিখেছেনঃ মিঠুন সরকার

    বইঃ গর্ভধারিনী [ Download PDF ]
    লেখকঃ
    সমরেশ মজুমদার

    Download

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    সমরেশ মজুমদার ত্রয়ী বা ট্রিলজি

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন