ঋজুদা সমগ্র PDF রিভিউ বুদ্ধদেব গুহ | Rijuda Samagra PDF Buddhadeb
বইঃ ঋজুদা সমগ্র
লেখকঃ বুদ্ধদেব গুহ
ছাগলের দুধ খেয়ে, চরকা কেটে, খদ্দর পড়ে আর নেহরু সাহেব আর জিন্না সাহেবের জ্বালাময়ী ইংরিজি বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে যে স্বাধীনতা এসেছিলো, তা থাকবার নয়। স্বাধীনতা, রক্তের মূল্যে না কিনলে সে স্বাধীনতা বাঁচিয়ে রাখা ভারি মুশকিল। ঠাকুরমার হাতের মোয়া নয় এ, যে হাত ঘোরালি আর ঠাকুমা তোর হাতে তুলে দিলো। বাংলাদেশের মানুষ বুকের রক্ত আর নারীর সম্মানের মূল্যে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। দেখিস, ওরা স্বাধীনতার দাম বুঝবেন।
—- বুদ্ধদেব গুহ ( ঋজুদা সমগ্র ৩ – কাঙ্গপোকপি, পৃষ্ঠা ২৯১, প্রকাশকাল ১৯৯৩)
ঋজুদা সমগ্র মূলত অ্যাডভেঞ্চারস কাহিনী। পাহাড়, বন, শিকার!!
বাংলা সাহিত্যে পাহাড়, বন নিয়ে লেখায় বিভূতিভূষণের পরই বুদ্ধদেব গুহর স্থান। তবে এগুলো নিয়ে লেখায় কোয়ালিটিতে বিভূতিবাবু এগিয়ে, আর কোয়ান্টিটিতে এগিয়ে বুদ্ধদেব বাবু।
পাহাড়, বন, শিকার, অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে লেখা বইয়ের প্রতি সবসময়ই দুর্বল ছিলাম। কিন্তু যে আশা নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম, ঋজুদা তার অর্ধেক পূরণ করতে পেরেছেন। শিকার বা অ্যাডভেঞ্চারের যে কাহিনী গুলো বর্ণনা করেছেন সেগুলো দারুণ। কিন্তু বুদ্ধদেব গুহ ঝামেলা বাধিয়েছেন আনুষঙ্গিক কিছু জায়গা গুলোতে।
আরও পড়ুনঃ আরণ্যক উপন্যাস PDF রিভিউ – বিভূতিভূষণ
এই সমগ্র গুলো পড়তে গিয়ে সবচেয়ে প্রথমে যে ঝামেলায় পড়েছিলাম সেটা হলো বইগুলোর সিক্যুয়েল মেইনটেন করা হয়নি। ঋজুদা সিরিজের অনেক পরের একটা বই দিয়ে সমগ্র ১ শুরু হয়েছে। আর ঋজুদা সিরিজের প্রথম বইটাকে সংযোজন করা হয়েছে সমগ্র ২ তে। তাই যখন পরের বইগুলো আগে পড়তে হচ্ছিলো তখন আগের প্রকাশিত বইগুলোর কিছু কাহিনী স্বভাবতই এসে যাচ্ছিলো, তখন কনফিউশনে পড়তে হচ্ছিলো বারবার। এটা সম্পাদকের দোষ।
আর লেখক বুদ্ধদেব গুহ কিছু ভুল করেছেন। ঋজুদা সিরিজের প্রথম বই “ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে” তে দেখিয়েছেন যে ঋজুদার প্রধান সাগরেদ রুদ্রর মা বেঁচে নেই, একমাত্র দাদাই ওর অভিভাবক। অথচ পরের অন্যান্য বইগুলোতে দেখা যায় রুদ্রর মা দিব্যি বেঁচে আছে, ঋজুদা যে ফোন দিয়েছিলো সে খবর রুদ্রকে দিচ্ছে। আর অভিভাবক যে দাদা তাকে অন্য কোন বইয়েই খুঁজে পাইনি।
আরও পড়ুনঃ অভিলাষ বুদ্ধদেব গুহ PDF রিভিউ
তার অন্য আরেকটি বই “রুআহা” তে নতুন সাগরেদ নেয় ঋজুদা। মেয়ে সাগরেদ, নাম তিতির সেন। ক্লাস নাইনে পড়ুয়া। প্রথম আবির্ভূত হয়েই সে তানজানিয়ার আদিবাসীদের সাথে অনর্গল সোয়াহিলি ভাষায় কথা বলতে পারার দক্ষতা দেখায় যেটা গল্পের প্রেক্ষাপটে খুবই বেমানান লেগেছে।
আরেকটা অসঙ্গতি আছে তিতির প্রসঙ্গে, সে কোনো কোনো বইতে ঋজুদাকে ঋজুকাকা বলে সম্বোধন করে আবার কোনো বইতে ঋজুদা বলে।
তারপরের কিছু বইতে আরেক সাগরেদকে দেখতে পাই, ভটকাই নামে। এ চরিত্রটাই ঋজুদা সিরিজের শিকার বা অ্যাডভেঞ্চার কাহিনীগুলোকে একদমই শিশুতোষ করে দিয়েছে। যদিও ঋজুদা মূলত কিশোরদের জন্য লেখা কিন্তু ভূমিকায় লেখক বলেছেন যে এটা বড়দের পড়ারও উপযোগী।
রুদ্র-তিতির, রুদ্র-ভটকাই, রুদ্র-তিতির-ভটকাই এদেরকে দিয়ে কিছু বাচ্চাসুলভ খুঁনসুটি করিয়েছেন লেখক যেগুলো খুবই নিম্নমানের এবং অদরকারী। ওগুলো না থাকলেই বরং লেখাটা আকর্ষণীয় হয়ে উঠতো।
আরও পড়ুনঃ সবিনয় নিবেদন PDF রিভিউ বুদ্ধদেব গুহ
যেহেতু পড়া ধরেছিই তাই বাকি দুটো সমগ্রও শেষ করবো। পুরো কাহিনী গুলোতে শিকার বা অ্যাডভেঞ্চার ছাড়া পোস্টের একদম উপরে উল্লিখিত লাইনগুলোই শুধু ভালো লেগেছে। ওই আনুষঙ্গিক কিছু ভুল না করলে ঋজুদা অবশ্যই ফেলুদা, টেনিদা, ঘনাদা দের কাতারে থাকতেন।
লিখেছেনঃ Reejvi Ahmed Shawon
বইঃ ঋজুদা সমগ্র [ Download PDF ]
লেখকঃ বুদ্ধদেব গুহ
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
বুদ্ধদেব গুহ রচনা সমগ্র পিডিএফ ডাউনলোড করুন