বইঃ বিপদ
লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ
হুমায়ুন আহমেদ এর জীবনিমূলক বই অনন্ত অম্বরে উল্লেখ করেছিলেন বিপদ গল্পটি লিখার কথা।
মূলত স্যার এর বাসায় বিড়ালের বসবাস থেকেই স্যার বিপদ গল্পটি শুরু করেন।
এই বিড়াল নিয়ে স্যার এর বাসায় কিছু মজার ঘটনা ঘটে।
গুলতেকিন বিড়াল তেমন সহ্য করতে পারতেননা। স্যারও যে পারতেন তা না। একদিন বাসার ভেতরে বিড়াল বাচ্চা দেয়! সেই নিয়ে স্যার রেগে যান গুলতেকিনের উপর। পরে যানতে পারেন পাশের বাসার একটি মেয়ের পোষা বিড়াল এটি।
হুমায়ুন স্যার মেয়েটিকে ডেকে বলেন তোমার বাড়ির বিড়াল অন্যের বাড়িতে এসে বাচ্চা দিবে এটা তো ঠিক না মা। তোমার বিড়াল তুমি নিয়ে যাও।
এরপর স্যার একদিন লিখতে বসে দেখতে পান মা বিড়ালটি বাচ্চা মুখে নিয়ে হুমায়ুন স্যার এর সামনে এসে রাখলো এবং রাগত স্বরে মেয়াঁও মেয়াঁও করতে লাগলো।
হুমায়ুন স্যার বুঝতে পারলেন বিড়ালটিকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য উনার সাথে ঝগড়া করছে।
মজার মানুষ ছিলেন হুমায়ুন স্যার, তাই তিনি বিড়ালের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন…
কি সমস্যা তোর?
বাচ্চা নিয়ে এখানে আবার বাসা বাঁধবি?
যা বাচ্চা নিয়ে আয়।
তোর যেখানে খুশি থাক।
বিড়ালটি অদ্ভুতভাবে সেদিন বাচ্চাদুটোকে নিয়ে হুমায়ুন স্যারের বাসায় চলে আসে।
এরপর দেখা যায় আরো কয়েকটা বিড়াল এসে স্যার এর বাসায় বাচ্চা দেওয়া শুরু করে…
আরও পড়ুনঃ অনীশ হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস PDF রিভিউ
★এখন আসি বিড়াল গল্পটিতে,
আফসার সাহেব খুব গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ।
উনি হাসি ঠাট্টা একদম পছন্দ করেননা। উনি নিজেও হাসেননা। কিন্তু উনার স্ত্রী মীরা এবং মেয়ে দুটি হয়েছে তার উল্টো! সারাক্ষণ শুধু হাসে আর হসে… এ নিয়ে আফসার সাহেব বেজায় বিরক্ত।
একদিন সকালে নাস্তার টেবিলে আফসার সাহেবের উপর একটি বিড়াল হামলে পড়ে এতে আফসার সাহেব নিজেই লাফ দেয় আর তাতে নাস্তাগুলো মেঝেতে পড়ে যায়।
তা দেখে আফসার সাহেবের স্ত্রী কণ্যা দূঃখ প্রকাশ না করে উল্টো অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
আফসার সাহেব রাগে ক্ষোভে স্ত্রী কণ্যাকে চোখের সামনে থেকে দূর হতে বলে।
এরপর আফসার সাহেব দেখতে পায় বিড়ালটি মহানন্দে বাচ্চাদুটি নিয়ে পড়ে যাওয়া খাবারগুলো খেতে লাগলো।
মা বিড়াল তার বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে বলা কথাগুলো আফসার সাহেব অদ্ভুতভাবে বুঝতে শুরু করে।
বিড়ালের সম্পূর্ণ কথোপকথন শুনে আফসার সাহেবের বিড়ালের প্রতি মায়া হয়। বিড়ালকে নিয়ম করে খেতে দেয়। কিন্তু বিপত্তি হয় বিড়ালের কথা কি করে আফসার সাহেব বুঝতে পারছেন তা মাথায় ঢুকেনা। স্ত্রী মীরাকে বললে মীরা ভাবে স্বামীর মাথাটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাইকিয়াস্ট্রিট দেখানোর পরামর্শ দেয়।
আফসার সাহেবের বিড়ালের কথা বুঝতে পরার খবরটা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
ব্যাপারটা আরো বিকৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। আফসার সাহেবের মানসিক যন্ত্রণা আরো বাড়ে। ওদিকে আফসার সাহেবের চাকরিটাও চলে যায়।
আরও পড়ুনঃ মিসির আলির অমীমাংসিত রহস্য pdf
আফসার সাহেবের শালার পরামর্শ অনুযায়ী একটা নতুন বাসাতে চলে যায় সমস্ত অশান্তি থেকে দূরে থাকার জন্য। সব ভালো চলছিল। কিন্তু সেখানেও বিড়ালটা বাচ্চা নিয়ে উপস্থিত! কিন্তু একটা বাচ্চা মরে যায়।
আফসার সাহেবের স্ত্রী উপায় না দেখে চুলা থেকে গরম পানি নিয়ে এসে ঢেলে দেয় বিড়ালের উপর। এতে বিড়ালদুটোকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো গেলোনা।
★ পুরো গল্পে মনের রাখার মতো একটি বাক্য- সমস্যা থেকে দূরে সরে যাওয়াটা কখনোই সমাধান নয়। সমস্যাকে সামনে নিয়েই চলতে হয়। এতে সমস্যার সমাধানটা সহজ হয়।
★ গল্পটি মিসির আলী সিরিজের অন্তর্ভুক্ত। গল্পে মিসির আলীর উপস্থিতিটা গল্পকে আরো মজবুত করেছে।
লিখেছেনঃ Abid Ahmed Nayem
বইঃ বিপদ [ Download PDF ]
লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
হুমায়ূন আহমেদ রচিত সকল বই রিভিউ সহ PDF ডাউনলোড করুন