Skip to content
Home » গণদেবতা উপন্যাস PDF রিভিউ| তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | Ganadevata PDF

গণদেবতা উপন্যাস PDF রিভিউ| তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | Ganadevata PDF

    গণদেবতা উপন্যাস pdf তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচনা সমগ্র
    Redirect Ads

    উপন্যাসের নামঃ গণদেবতা
    লেখকের নামঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের
    ঘরানাঃ সামাজিক উপন্যাস
    পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৬৬
    প্রকাশনীঃ সালমা বুক ডিপো
    প্রথম প্রকাশঃ ১৯৪২ ( মতান্তরে ১৯৪০ )
    প্রাপ্ত পুরস্কারঃ জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ( ১৯৬৬ )

    ১৯২৫ সালের প্রেক্ষাপটে রচিত তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের গণদেবতা তৎকালীন গ্রামবাংলা তথা সমগ্র গ্রামীণ ভারতবর্ষের নিপীড়িত মানুষের দর্পণস্বরূপ। সেই সাথে লেখাটি শাসন এবং শোষণের সহস্র বছরের চলমান ধারার দলিল। উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে বিংশ শতাব্দীর প্রভাবশালী উপন্যাসগুলি মাঝে অন্যতম। যার কারণে উপন্যাসটি বহুভাষায় অনূদিত হয়েছিলো। ১৯৭৯ সালের ২৯শে জুন পরিচালক তরুণ মজুমদার উপন্যাসটি নিয়ে একটি চলচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। পরে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৯৪৩ সালে লেখা পঞ্চগ্রাম উপন্যাসটি গণদেবতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

    Download

    নামকরণের_স্বার্থকতাঃ

    গণদেবতার বাংলা অভিধানের দুইটি অর্থ আছে, প্রথমটি হলো যে সমাজের গণই দেবতা অর্থাৎ ক্ষমতার অধিকারী। দ্বিতীয়টি হলো গণশক্তির অধিদেবতা। এই উপন্যাসটিতে দ্বিতীয় অর্থটি বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সহস্র বছরের শাসন আর শোষণের রীতিকে যে রক্তচক্ষু দেখিয়ে যে মাথা তুলে দাঁড়ায়, হাজার মানুষের ঝুঁকে যাওয়া কপালের মাঝে যার কপালের শিরার রক্ত টগবগিয়ে ওঠে, যে সংসার, সম্মান, প্রাণ সবকিছু তুচ্ছ করে মানুষেরর জন্য নিজের সামর্থ্যে হাজার টুকরো করে ছড়িয়ে দেয় মানুষের মাঝে সেই গণদেবতা। আর এমন এক গণদেবতাকে নিয়েই লেখক উপন্যাসটি লিখেছেন।

    আরও পড়ুনঃ পঞ্চগ্রাম উপন্যাস PDF রিভিউ | তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

    বিশ্লেষণঃ

    ভারতের গ্রামীণ জীবন সম্পর্কে Sir Charles Matcalfe বলেছিলেন,

    “They seem to last where nothing else last. Dynasty after dynasty tumbles down. Revolution succeeds revolutions! Hindu, Pathan, Moghul, Maratha, Sikh, English are masters in turn, but the village community remains the same.’

    অর্থাৎ হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষের মাটিতে হিন্দু, পাঠান, মুগল, ইংরেজ কত শাসক এলো আর মাটিতে মিশে গেল। কিন্তু গ্রামীণ ভারতবর্ষ হাজার বছর ধরে অকৃত্রিম। সেই মহাজনের শাসন, সুদের হিসাবের নামে শোষণ আবার দিনশেষের গ্রামের চণ্ডীমণ্ডপের চাতালে সবাই সমাবেত হয়ে একটু খানি আনন্দের অনুসন্ধান। সেই হাজার বছর অভিন্ন জীবনেরধারা।

    Download

    এমন একটি গ্রামের প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত উপন্যাসটি। গ্রামের নাম শিবকালীপুর। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ময়ুরাক্ষী নদী। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নিম্ন সম্প্রদায়ের বায়েন আর বাউড়ি। সাথে উচ্চ বর্ণের কয়েকটি ঘর। আর গ্রামের একজন মহাজন।

    উপন্যাসটিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের সংখ্যা অনেক। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মাঝে পন্ডিত দেবু ঘোষ, দেবুর স্ত্রী বিলু, মহাজন শ্রীহরি ঘোষ, অনুরুদ্ধ কামার, অনুরুদ্ধের স্ত্রী পদ্ম, যোগেন ডাক্তার, ব্রাক্ষ্ণন হরেন ঘোষাল, নজরবন্দী যতীন আর স্বৈরিনী দুর্গা।

    এসকল চরিত্রের মাঝে পন্ডিত দেবু ঘোষ সবার থেকে আলাদা। এই নিস্তেজ, দরিদ্র আর ভয়সর্বস্ব মানুষের গ্রামে পন্ডিত দেবু ঘোষ প্রথম প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ জ্বালায়। সরকারী কানুগগোর অসম্মানের প্রতিবাদ করে যে নীরব কারা বরণ করে। যেখানে একটিবার মৌখিক ক্ষমা প্রার্থনায় দেবু ঘোষ দীর্ঘ ১৫ মাসে কারাগারের শাস্তি হতে মুক্তি হতে পারতো। দেবু ঘোষ ক্ষমা স্বীকার করেনি।

    আরও পড়ুনঃ কবি উপন্যাস তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় PDF রিভিউ

    Download

    মহাজন শ্রীহরি ঘোষের যখন বার বার ঘুনে ধরা নিয়মকে হাতিয়ার করে দরিদ্র বায়েন আর বাউড়িদের বঞ্চনা করেছিলো, নিয়ে চলেছিল তাদের বেঁচে থাকার একটমাত্র অবলম্বন গবাদিপশুগুলো তখন মুখে অনেকে অনেক কিছু বললেও শুধু এগিয়ে এসেছিলো পন্ডিতে দেবু ঘোষ। আর গ্রামের অতিথি নজরবন্দী যতীন দেবু ঘোষের বুকে লুকিয়ে থাকা বিপ্লবের আগুনকে উস্কের দিয়েছে বার বার।

    যে বায়েন বাউড়িদের উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা কুকুরের থেকেও অধম চোখে দেখত। সেই মানুষগুলো জন্য কলেরায় আক্রান্ত হলো মৃত্যুঝুকি জেনেও এগিয়ে এসেছিলো পন্ডিত। সেজন্য পন্ডিত দেবু ঘোষকে জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ দিয়ে মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছিলো। তবুও পন্ডিত দেবু ঘোষ থামেনি। যারা জন্মের পর ন্যায়ের সংজ্ঞা অনুসন্ধান করে তারা হয়তো থেমে যায় কিন্তু যারা ন্যায়কে বুকে ধারণ করে জন্মায় তারা থামে না। থামতে পারেনা।

    আরেকটি চরিত্র সম্পর্কে কিছু না বললেই নয়। সে হলো বায়েন সম্প্রদায়ের দুর্গা। দুর্গার আগুন ও জল দুই আছে উক্তিটির ব্যপ্তিপুরো উপন্যাস জুড়ে। কখনো সে সমাজের নিয়মের তোয়াক্কা না করে সমাজের চোখে নিজেকে করেছে কলঙ্কিনী আবার কখনো পন্ডিত দেবু ঘোষ, বিলু, পদ্ম, যতীন, ভাই পাতু আশপাশের মানুষগুলো আগলে রেখেছে পরম মমমতায়।

    আরও পড়ুনঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় – বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে নিখুঁততম সাহিত্যিক

    Download

    ব্যক্তিগত_অভিমতঃ

    রবীন্দ্রনাথে কবিতা থেকে যতীন উপন্যাসে একবার আবৃত্তি করে,

    তৃণে পুলকিত যে মাটির ধরা
    লুটায় আমার সামনে —
    সে আমায় ডাকে এমন করিয়া
    কেন যে , কব তা কেমনে ।
    মনে হয় যেন সে ধূলির তলে
    যুগে যুগে আমি ছিনু তৃণে জলে…

    পন্ডিত দেবু ঘোষের মত মানুষের হৃদয়কে বহুবছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঠ করে সম্ভবত এই লাইনগুলি লিখেছিলেন। যেখানে মানুষ তার মাটির কাছে, তার শস্যের কাছে, তার মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা অস্বীকার করতে পারে না।

    আপাত দৃষ্টিতে গণদেবতা একটি সামাজিক উপন্যাস হলে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা থেকে এমন কিছু লেখা সম্ভব নয়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছিল গভীর জীবন দর্শন এবং গ্রামীণ অর্থ ও সম্পদের বন্টন ব্যবস্থার উপর গভীর জ্ঞান। ছিল গ্রাম ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন কিংবা উপস্থিতি। উপন্যাসটি জুড়ে আছে কিছু ছোটগল্প। গল্পগুলিকে ঘিরেই লেখক উপন্যাসের মূলভাব আরও জোরালো করে উপস্থাপন করেছেন।

    আরও পড়ুনঃ রাখালী কাব্যগ্রন্থ PDF রিভিউ জসিম উদ্দিন

    বিংশ শতাব্দীর সেরা ঔপন্যাসিকদের মাঝে নিঃসন্দেহে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় একজন। এইকালের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন গুনমুগ্ধ পাঠক ছিলেন। বিখ্যাত চরিত্র হিমুর যে ব্যক্তিগত নদীটির নামকরণ করা হয়েছে সেটি সম্ভবত এই উপন্যাসের ময়ুরাক্ষী নদী থেকে। এছাড়াও উনার ম্যাজিক মুনশি বইটিতে আমরা তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাইনী ছোটগল্পটি দেখতে পাই।

    উপন্যাসে একটি উক্তি আমার সবথেকে ভাল লেগেছে, উক্তিটি হলো,

    Download

    “ধর্মকে তুমি বন্দী করো কর্মের বন্ধনে।”

    লিখেছেনঃ মিঠুন সরকার

    বইঃ গণদেবতা [ Download PDF ]
    লেখকঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাবলী PDF Download করুন

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন