Skip to content
Home » অরণ্য বহ্নি উপন্যাস PDF তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | Aranya Bahni Tarashankar

অরণ্য বহ্নি উপন্যাস PDF তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় | Aranya Bahni Tarashankar

    অরণ্য বহ্নি উপন্যাস pdf তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
    Redirect Ads

    বইয়ের নাম : অরণ্য বহ্নি
    লেখক: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
    ধরন: উপন্যাস
    প্রকাশক: মাটিগন্ধা
    মূল্য : ২০০ টাকা

    গণদেবতা‘, ‘পঞ্চগ্রাম‘, ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা‘ লিখা হয়ে গেছে। লেখক হিসেবে তারাশঙ্কর কিংবদন্তীর পর্যায়ে চলে গেছেন। মৃত্যুর মাত্র কয়েক বছর আগে তিনি ‘ অরণ্য বহ্নি ‘ উপন্যাসটি লিখে যান। ১৮৫৪-৫৫ সালে ঘটে যাওয়া সাঁওতাল বিদ্রোহ এই উপন্যাসে মূল উপজীব্য বিষয়। উপন্যাসের প্রস্তাবনায় তিনি লিখেছেন-

    Download

    “আমার সঙ্গে একশো বারো বছর পেছনে চলুন।
    ১৮৫৪ সন। আজ ১৯৬৬ সন। এখন একশো বারো বছর আগের কথা। তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমল।
    তখন বাংলাদেশ বলতে বাংলা বিহার উড়িষ্যা তিন প্রদেশ একসঙ্গে। যে আমলের কথা বলছি সে অঞ্চল উত্তর ভাগলপুর থেকে গঙ্গার পশ্চিমে তিন পাহাড় রাজমহল থেকে দক্ষিণে বীরভূম জেলায় ময়ুরাক্ষীর উত্তর ও গোটা সাঁওতাল পরগণা এবং দেওঘর নিয়ে একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। আসুন সে আমলে এ অঞ্চলটায় একটু ঘুরে আসি।”

    ঘুরতে গেলাম তাঁর সাথে। মজার ব্যাপার হচ্ছে একই সঙ্গে একজন ঘুরছেন তাঁর সময়ের একশো বারো বছর আগে, আর আমি ঘুরছি ১৬৪ বছর আগে!

    আরও পড়ুনঃ কবি উপন্যাস তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় PDF রিভিউ

    তারাশঙ্কর ছিলেন বীরভূমের মানুষ। তখন বীরভূম জেলার মধ্যেই সাঁওতাল পরগণা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ছোট বেলায় তারাশঙ্কর তাঁর বিধবা পিসিমার কাছ থেকে সে সময়ের সাঁওতাল বিদ্রোহের কাহিনী শুনেছেন। পরিণত বয়সে সে সব নিয়ে উপন্যাস লিখার তাগিদে যান সাঁওতাল পরগণায়। বিদ্রোহের ঘটনা অবশ্য আগেও জানতেন। আমি নতুন করে জানলাম- কেমন করে সাঁওতালরা শোষণের শিকার হত, জোতদার, মহাজন আর হিন্দু ব্যবসায়ীরা কিভাবে তাদের ঠকাত। রাস্তায় কাজ দেবার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে কীভাবে পাদ্রীরা সাঁওতালদের খ্রিষ্টান বানাত। আর সাঁওতাল মেয়ে গুলোর উপর সাদা চামড়ার ইংরেজ গুলোর লোলুপ দৃষ্টি তো ছিলই।

    কোনো মহাজনের কাছ থেকে কেও ঋণ করলে সেই ঋণের দায়ে সে সারা জীবনের জন্য ঐ মহাজনের কেনা গোলাম হয়ে থাকত। হাটে মাত্র দশ টাকায় একজন মানুষ বিক্রি হত। আড়াই সের ঘি বিক্রি করলে মহাজনরা ঠকিয়ে এক সের নুন দিত। সাঁওতালদের নুনের বড় অভাব, এই কথা মহাজনেরা জানত। আর কেউ প্রতিবাদ করলেই মহাজনদের ঘুষের টাকায় পালিত দারোগা তাদের ধরে বেঁধে নিয়ে যেত।

    Download

    তারপর একসময় জানলাম কিভাবে তারা এক হল। কিভাবে বিদ্রোহ দানা বাঁধতে লাগল ধীরে ধীরে। দুই ভাই কানু আর সিধু মাঝির নেতৃত্বে কিভাবে নিজেদের অধিকার আদায় করার জন্য সাঁওতালরা ঝাঁপিয়ে পড়ল সেই সব অত্যাচারী জোতদার, মহাজন আর ইংরেজদের উপর।

    আরও পড়ুনঃ আরণ্যক উপন্যাস PDF রিভিউ – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    আগেই বলেছি, উপন্যাস লিখার তাগিদে লেখক সাঁওতাল পরগণায় গিয়েছিলেন। এ গ্রাম থেকে সে গ্রামে ঘুরে নয়ন পাল নামক এক প্রতিমা কারিগর যাঁর পিতামহ সে সময়ে ছিলেন বিখ্যাত প্রতিমা শিল্পী, তাঁর খোঁজ পান। তিনি তাঁকে একে একে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল ঘটনা বলতে থাকেন। নফর পাল নামক সে আমলের এক শিল্পীর আঁকা ছবির সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে কাহিনী বলতে থাকেন। আর গানে গানে কোন বিশেষ ঘটনাও ব্যক্ত করতে থাকেন। উপন্যাসের আমার কাছে সবচেয়ে ভাল লেগেছে সে গান আর কবিতাগুলো। একটা কবিতা বলি-

    “ভুবন পালিনী যিনি ভিখারী ঘরণী তিনি
    মহিষমর্দিনী জগৎমাতা-
    অবধান অবধান – শোন তার কথা
    এ সংসারে হৈলে পাপ। মাটিতে উঠিলে তাপ
    তরবারি খাপ মধ্যে ফোঁসে-
    আসন টলিয়া উঠে মুকুট নড়িয়া উঠে
    চোখে বুকে ফোটে রক্ত রোষে।”

    একদিন বৈশাখের এক ঝড়ে বজ্রপাতে সাঁওতাল দেবতা মরং বোঙ্গা যে শাল গাছটায় থাকেন সেটি পুড়ে গেল। তবে তার নীচে থাকা পাথর ফেটে বেরুতে লাগল পানি। সবাই বুঝল এটা ভগবানের অভিশাপ, কারণ সবাই অধর্মে মেতে আছে। খ্রিষ্টানদের কাজ করছে, এবং অনেক সাঁওতাল খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। একমাত্র সিধু কানুর মনে হল ভগবান তাদের সাথে আছেন। গাছ থেকে মাটিতে তিনি নেমে এসেছেন মাটিতে। এবার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।

    Download

    তারপর একদিন ইংরেজরা সিধু কানুর বোন মানকী ও বোনজামাই লালকে খ্রিষ্টান করে। এই ঘটনা শুনে সিধু কানুর বাপ মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। পাদ্রীরা রুকনী, টুকনী কেও খ্রিষ্টান করে নেয়। রুকনী আর টুকনী কে সিধু কানু বিয়ে করতে চেয়েছিল। তারপর একদিন তিনজন ইংরেজ তাদের ধরে নিয়ে যায়। তাদের উদ্ধার করতে সিধু কানু আর বিশু মঝি বের হয়। এর মধ্যে রুকনী এক ইংরেজকে হত্যা করে পালিয়ে আসে। প্রথম রক্তপাতের সূচনা হয়।

    আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত

    তারপরে ধীরে ধীরে ঘটনাক্রমে লাল, সিধু, কানু, রুকনি, টুকনী, মানকী আর বিশু মাঝি এক হয়ে জঙ্গলের মধ্যে দল গড়তে থাকে। তাদের সাথে এক হয় সন্ন্যাসী ভৈরবী। সাঁওতাল পরগণার প্রতিটা ঘরে ঘরে এই খবর পৌঁছে যায়, মরং বোঙ্গা (সাঁওতাল দেবতা) সিধু কানু কে শুভোবাবু অর্থাৎ নতুন রাজা করেছেন। নিজ দেশের জন্য তাদের সংগ্রাম চলতে থাকে।

    তবে সাঁওতাল বিদ্রোহ কতটা সফল হয়েছে এই লেখা পড়ে আমি ঠিক বুঝতে পারি নি। তৎকালীন পত্র পত্রিকায় নাকি সাঁওতালদের বেশ অত্যাচারী হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়েছে। লেখক তাঁর নিজের লেখার শুরুতেও সেসব লিখেছেন এবং শেষে দেখিয়েছেন অশিক্ষা ও কুসংস্কার তাদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ । সিধু কানুর হাতে যখন সাঁওতালদের মূল ক্ষমতা যায়, তারা নাকি গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল। অগণিত জমিদার, জোতদার আর মহাজনকে তারা হত্যা করে। অসংখ্য মেয়ে তারা লুট করে। এমন কি কোলের শিশুও পর্যন্ত নাকি তারা হত্যা করেছে।

    Download

    তাছাড়া লেখক লেখার মাঝে মাঝে প্রচুর সাঁওতালি শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। আর কেন জানি বারবার মনে হচ্ছিল লেখাটা ছোট হয়ে গেছে। আরেকটু বড় করা যেত। উনার ‘বিপাশা’ পড়ে যতটা মুগ্ধ হয়েছিলাম এটা পড়ে কেমন যেন একটু হতাশ হলাম। অবশ্য এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, এবং কাউকে নিরুৎসাহিত করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি হয়তো বুঝি নি, কিন্তু দেখা যাবে আপনার পড়া সেরা দশটি উপন্যাসের একটির নাম – ‘ অরণ্য বহ্নি ‘। আপনাদের পাঠ সুখময় হোক। ধন্যবাদ

    লিখেছেনঃ Mahmudul Karim

    বইঃ অরণ্য বহ্নি [ Download PDF ]
    লেখকঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাবলী PDF Download করুন

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন