সিজিপিএ গ্রেডিং পয়েন্ট জিপিএ ও বিভাগ পদ্ধতি grade point scale in bd

গ্রেডিং ও জিপিএ | জিপিএ ফাইভ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিলো জুতোর ফ্যাক্টোরিতে

Redirect Ads

জিপিএ ফাইভ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিলো জুতোর ফ্যাক্টোরিতে। প্রতিটি ফ্যাক্টোরিতে একজোড়া আদর্শ জুতো থাকতো, যা দেখে দেখে শ্রমিকেরা জুতো করতো। কারও তৈরি করা জুতোজোড়ার মান, ওই আদর্শ জুতোজোড়ার মানের কাছাকাছি হলেই কেবল তিনি পারিশ্রমিক পেতেন। উৎপাদিত জুতোজোড়া ‘আপ টু দা গ্রেড’ কি না, অর্থাৎ জুতোগুলো বাজারে বিকোবে কি না তা এ প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত করা হতো। তখন শ্রমিকদের কোনো নির্দিষ্ট মাসিক বেতন ছিলো না। যে-শ্রমিক যতো সংখ্যক ‘আপ টু দা গ্রেড’ জুতো তৈরি করবেন, সে-শ্রমিক ততো সংখ্যক ‘আপ টু দা গ্রেড’ জুতোর পারিশ্রমিক পাবেন, এটিই ছিলো নিয়ম।

জুতোর মান নিয়ন্ত্রণের এ গ্রেডিং পদ্ধতি ধার করেন ক্যামব্রিজের উইলিয়াম ফারিশ। ফারিশ তখন, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিস্ট্রি ও ন্যাচারাল ফিলোসোফি পড়াতেন।
ফারিশ দেখলেন যে, এ পদ্ধতিতে তিনি আগের চেয়ে দ্রুত ও সহজে ছাত্রদের ডিগ্রি দিতে পারছেন। কোনো ছাত্র ডিগ্রি পাবে কি না, তা নিশ্চিত করতে আগে তাকে ঘন্টার পর ঘন্টা ওই ছাত্রের সাথে কথা বলতে হতো, দিনের পর দিন নিবিড় সময় কাটাতে হতো। ছাত্রভেদে তাঁকে প্রশ্নের ধরণও পাল্টাতে হতো। একেক দিন কথা বলতে হতো একেক বিষয় নিয়ে। এটি ছিলো শ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ প্রক্রিয়ায় একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ দশ থেকে বিশজন ছাত্রকে পড়াতে পারতেন। এটি আঠারো শতকের শেষ দিকের কথা, এবং হাজার হাজার বছর ধরে এ মানুষ এ প্রক্রিয়াতেই জ্ঞান অর্জন ও বিতরণ করে আসছিলো।

Download

কিন্তু জুতোপ্রক্রিয়ায় এতো শ্রম ও সময় লাগছে না। ফারিশ, জুতোর মতো ছাত্রদেরও ভাগ করলেন কয়েকটি গ্রেডে:
গ্রেড এ— খুব ভালো জুতো
গ্রেড বি— ভালো জুতো
গ্রেড সি— জুতো
গ্রেড ডি— মোটামুটি জুতো
এবং উদ্ভাবন করেছিলেন আজকের এই গ্রেডিং পদ্ধতি।

গ্রেডিংয়ের অংশ হিশেবে তিনি প্রচলন ঘটান লিখিত পরীক্ষার। এটি তাঁকে আরাম এনে দিলো। বিশজনের জন্য বিশটি আলাদা প্রশ্ন তাঁকে আর তৈরি করতে হতো না, এবং বিশজনের পরীক্ষা নিতে তাঁকে বসতে হতো না বিশটি আলাদা দিনে।

কেন তিনি এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন? কারণ টাকা ও অলসতা। তখন শিক্ষকেরাও নির্দিষ্ট বেতন পেতেন না। একজন শিক্ষক কতোজন ছাত্র পড়াচ্ছেন, সেটি হিশেব করেই তাকে বেতন দেয়া হতো, যেরকম একজন শ্রমিককে বেতন দেয়া হতো তার উৎপাদিত জুতোর সংখ্যা হিশেব করে।

আরও পড়ুনঃ ছাগল ও তার পিএইচডি ডিগ্রি : ডক্টরেট ডিগ্রির আদ্যোপান্ত

Download

ফারিশ কি বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিশজনকে পড়িয়ে তাঁর পুষোবে না, তাঁকে পড়াতে হবে দুশো জন? না কি তিনি অলস ছিলেন? আমার ধারণা, ছাত্ররা যে পণ্য তা ফারিশ টের পেয়েছিলেন। তিনি দেখেছিলেন যে জুতোর মতো ছাত্রও বিক্রি হয়। ছাত্রেরও বাজারদর আছে।
জুতো কোম্পানি কী চায়? জুতো কোম্পানি চায় ক্রেতাকে মানসম্মত জুতো উপহার দিতে। ক্রেতা উপযুক্ত দাম দিয়ে এ জুতো কিনে নেবেন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কি জুতো কোম্পানি? না, বিশ্ববিদ্যালয় জুতো কোম্পানি নয়, কিন্তু জুতো কোম্পানির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদৃশ্য আছে। জুতো কোম্পানির মতোই বিশ্ববিদ্যালয়েরও নিজস্ব প্রোডাক্ট আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রোডাক্ট ছাত্র। ছাত্র এক প্রকার কাঁচামাল, এবং বিশ্বে এ কাঁচামালের চাহিদা জুতোর চেয়েও বেশি। ক্রেতা এ কাঁচামাল কিনে তা দিয়ে উৎপাদন করতে পারেন প্রধান নির্বাহী, ব্যাংকার, একাউন্টেন্ট, মিলিটারি জেনারেল, প্রেসিডেন্ট, বিজ্ঞানী, সিনেটর, প্রধানমন্ত্রী, শ্রমিক, প্রকৌশলী, আমলা, চিকিৎসক, আইনজীবী, ব্যবস্থাপক, ও সবকিছু।

সরকার, ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাটা, গুগল, নাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট, গবেষণাগার, বিস্কুট কোম্পানি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, সবাই এ কাঁচামালের ক্রেতা। জুতোর ক্রেতার মতোই এ ক্রেতারাও চান মানসম্মত জুতো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ মানসম্মত জুতো উৎপাদন ও সরবরাহ করে। এ জুতো পায়ে দেয়া যায় না, কিন্তু পদানত করে করিয়ে নেয়া যায় পৃথিবীর সমস্ত কাজ।

তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাত্র নিজেই নিজের ক্রেতা হতে পারে, যদি সে আর কোথাও বিক্রি না হয়ে লিপ্ত হয় স্বাধীন অর্থনীতিক কর্মকান্ডে। যেমন— ফ্রিল্যান্স চিকিৎসক, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, ফ্রিল্যান্স গবেষক, ফ্রিল্যান্স উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্স আইনজীবী, ও ফ্রিল্যান্স লেখক।

Download

বিশ্ববিদ্যালয় যে-সনদ দেয়, তা তার উৎপাদিত ছাত্রটির মানের সনদ, এবং জুতোর মানের সাথে এ মানের সাদৃশ্য আছে। জুতোর গ্রেড ‘এ’— এটি দিয়ে বুঝায় যে জুতোটি মোটামুটি নিখুঁত, এটিকে পরা যাবে দীর্ঘদিন; আর ছাত্রের গ্রেড ‘এ’— এটি দিয়ে বুঝায় যে ছাত্রটি ক্লাশের পড়া মন দিয়ে পড়েছে, শিক্ষকের নির্দেশনা নিয়মিত শুনেছে, ইশকুলে ফাঁকি দেয় নি, পরিশ্রম করেছে, সে নরম কাদামাটি, তাকে দিয়ে নির্মাণ করা যাবে ইচ্ছেমতো ভাস্কর্য। ক্রেতা এটিই চায়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্রেতাকে এটি নিশ্চিত করে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় কোনো জ্ঞানের সনদ দেয় না। জ্ঞানের কোনো গ্রেডিং পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয় নি। জ্ঞানীর কথা মুখে মুখে, ও বইয়ে বইয়ে রটে। রিচার্ড ফাইনম্যান বলতেন, পিএইচডির পরও কেউ গর্দভ থাকতে পারে।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : ফিওদর দস্তয়েভস্কি | প্রথম পর্ব

প্রশ্ন উঠতে পারে, যে-ছাত্র ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে, সে কি জ্ঞানী হতে পারে না? এ প্রশ্নের সাধারণ উত্তর— না। অসাধারণ উত্তর— হ্যাঁ। বিশ্ববিদ্যালয় যে-সনদ দেয়, সে-সনদ সাধারণ অর্থে একটি ছাত্রের কর্মদক্ষতার সনদ। সনদটি নির্দেশ করে ছাত্রটি ভালো কর্মী কি না। এটি নির্দেশ করে না যে ছাত্রটি জ্ঞানী। তবে বিশ্ববিদ্যালয় আরও একটি কাজ করে, এবং এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদটি বলে দেয় যে, ছাত্রটির জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা রয়েছে। ছাত্রটি পড়তে ও লিখতে জানে। চাইলেই জ্ঞান অর্জন ও উৎপাদন সে শুরু করে দিতে পারে। কিন্তু এটি ঐচ্ছিক ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয় তাকে এ কাজে বাধ্য করতে পারে না।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়েরও গ্রেডিং আছে। কিছু স্বাধীন সংস্থা এ গ্রেডিং করে থাকে। এটিকে আমরা র‍্যাংকিং বলি। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সিলেবাস এমনভাবে সাজায়, এবং পাঠদান এমনভাবে সম্পন্ন করে যেন ছাত্রটি পাশ করার পাশাপাশি কিছু জ্ঞানও অর্জন করে। একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ গ্রেড ও একটি খারাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ গ্রেড সমান নয়, যেরকম বাটা কোম্পানির জুতোর মান আর ভৈরব কোম্পানির জুতোর মান এক নয় (ব্যতিক্রম থাকতে পারে)।

Download

গ্রেডিং পদ্ধতির আগের ও পরের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে-পার্থক্য, তা আসমান ও জমিনের পার্থক্যের সমান। যখন গ্রেডিং পদ্ধতি ছিলো না, তখন জেরেমি বেন্থাম একটি বড় হলঘরে, অথবা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা করতেন। ছাত্ররা বক্তৃতাটি মনযোগ দিয়ে শুনতো, এবং ওখানেই কিছুক্ষণ বেন্থামের সাথে তর্কাতর্কি করতো। পরের সপ্তাহে, বেন্থামের বক্তব্য খন্ডন করে ছাত্ররা তাদের পাল্টা বক্তব্য উপস্থাপন করতো। এতে জ্ঞানের একটি দ্বিমুখী প্রবাহ তৈরি হতো। ছাত্র শিখতো বেন্থাম থেকে, বেন্থাম শিখতেন ছাত্র থেকে। সক্রেটিসও তাঁর ছাত্রদের এভাবেই পাঠদান করতেন। শুনো, পড়ো, এবং তর্কাতর্কি করো, ডিগ্রী দানের জুতো পদ্ধতি আবিষ্কারের পূর্বে এটিই ছিলো পাঠদান ও গ্রহণের আদর্শ পদ্ধতি। শিক্ষক ও ছাত্র একে অপরকে গভীরভাবে জানতেন। তখন গ্রেড বা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, চাকুরিতে ঢোকার সময় নিয়োগকর্তা জানতে চাইতেন— তোমার শিক্ষক কে? শিক্ষকের নামই নিশ্চিত করতো, ছাত্রটির ডিগ্রি ভালো কি না।

শিক্ষক ডিগ্রি দেয়ার আগে খতিয়ে দেখতেন, ছাত্রটি পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করেছে কি না। ডিগ্রি দেয়ার সময় তিনি ছাত্রদের একটি র‍্যাংকিং তৈরি করতেন, কিন্তু এটি কোনো গ্রেডিং ছিলো না। এটি থাকতো গোপন, এটি প্রকাশ করা হতো না। জেফারসনের গ্রেড কী ছিলো? দেকার্তে, গ্যালিলিও, এঞ্জেলো, প্লাতো, হবস, বেকন, নিউটনের গ্রেড? হ্যাঁ, নিউটনের বিএ, ও এমএ ডিগ্রি ছিলো, কিন্তু গ্রেড? ছিলো না! নিউটন যদি এখন কবর থেকে উঠে এসে বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চাই, তাহলে কি তাঁকে নেয়া হবে? হবে না। তাঁর বদলে নেয়া হবে টেলিভিশনের কোনো সৌন্দর্যকে।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : ফিওদর দস্তয়েভস্কি | দ্বিতীয় পর্ব

গ্রেডিং পদ্ধতির মূলে রয়েছে ‘সবার জন্য এক পরীক্ষা’ পদ্ধতি। মাছ, হাতি, ও বানরকে আমি একসঙ্গে বলতে পারি না গাছে উঠতে। সবাইকে গাছে উঠতে বলা কোনো পরীক্ষা হতে পারে না। কারণ ওই পরীক্ষায় শুধু বানরই পাশ করবে। আমাকে মাছের পরীক্ষা পানিতে, ও বানরের পরীক্ষা জঙ্গলে নিতে হবে। ফারিশ এ পরিশ্রম করতে রাজি ছিলেন না, এজন্য তিনি উদ্ভাবন করেছিলেন ‘সবার জন্য একই পরীক্ষা’ পদ্ধতি।
কিন্তু ফারিশ তো এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য, এটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ইশকুলে ছড়িয়ে পড়লো কেন?

প্রাচীন চীনে, সপ্তম শতকের দিকে, সুই বংশের রাজারা বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে সিভিল সার্ভেন্ট বা আমলা নিয়োগ দিতেন। এ চল ১৯০৫ সাল পর্যন্ত ছিলো। ফারিশ যখন ক্যামব্রিজে লিখিত পরীক্ষা চালু করলেন, তখন ব্রিটিশ রাজপরিবার ভাবলো— সিভিল সার্ভেন্ট নিয়োগের চাইনিজ পদ্ধতি আমরাও চালু করতে পারি। ঊনিশ শতকের শুরুর দিকে, সম্ভবত ১৮০৬ সালে, ব্রিটিশ সরকার সরকারি কর্মচারি নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করে, এবং এ পদ্ধতি, সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের সমস্ত ইশকুলে। স্বাস্থ্যের চেয়ে ব্যাধি সবসময়ই দ্রুত ছড়ায়।

কেন গ্রেডিং পদ্ধতি এতো জনপ্রিয় হলো? কারণ এ পদ্ধতিতে একজন শিক্ষক কম সময় ও পরিশ্রমে বেশি টাকা উপার্জন করতে পারেন; যদিও এ পদ্ধতিতে এখন আর খুব বেশি টাকা উপার্জন করা যায় না। রাষ্ট্র শিক্ষকের বেতন নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। তবে কিছু কিছু দেশে, শিক্ষকদের বেতন এতো কম যে, বাধ্য হয়ে তাদের চালু করতে হয়েছে প্রাইভেট টুইশান ও কোচিং প্রথা। কেউ কেউ অবশ্য এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন, এবং আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন, এ প্রথাও চালু করেছেন। কিন্তু তারা আটকা পড়লেন তাদের নিজেদেরই উদ্ভাবিত ফাঁদে, এবং এ ফাঁদ থেকে বের হওয়ার কোনো তৎপরতা তাদের আছে বলে মনে হয় না।
গ্রেডিং পদ্ধতি শিক্ষকতাকে সহজ করেছে, কিন্তু কঠিন করে তুলেছে শিক্ষাকে। শিক্ষা এখন আর কোনো সহজ ব্যাপার নয়, এটি ছাত্রদের ঘন্টার পর ঘন্টা পানির নিচে দম বন্ধ করে থাকতে বলছে। ছাত্ররা হয়ে উঠেছে ক্লান্ত গাধার মতো এক দুখি প্রাণী।

Download

আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : লিও তলস্তয় | প্রথম পর্ব

এ পদ্ধতির উপকার খুব সামান্য, কিন্তু অপকার অসামান্য। এর বড় অপকারগুলোর কয়েকটি আমি এখানে উল্লেখ করছি:

(১)
এটি শিক্ষার উপভোগ্যতাকে নষ্ট করেছে। শিক্ষালাভ করা যে একটি উপভোগের ব্যাপার ছিলো, তা এ পদ্ধতি আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছে। যে-শিশু স্বাদ নিতে চায় দুধের, সে-শিশু এ পদ্ধতিতে এসে, চুন মেশানো ঘোলা পানি খেতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। শিশুদের কৌতূহলকে দমন করা হচ্ছে জোরপূর্বক। এমন কি মাদাম মন্তেসোরির পরামর্শগুলোও আমলে নেয়া হচ্ছে না। বহু দেশে এখন, শিয়ালেরা তৈরি করছে মোরগদের জন্য শিক্ষানীতি।

(২)
পেটের মতো মস্তিষ্কেরও ক্ষুধা রয়েছে, এবং এ ক্ষুধা পেটের ক্ষুধার চেয়ে মারাত্মক। গ্রেডিং পদ্ধতি মস্তিষ্কের এ ক্ষুধাকে নষ্ট করেছে। যা খেলে পেট ভরবে, তা খেলে মস্তিষ্কও ভরবে, ব্যাপারটি এরকম নয়। পেট ও মস্তিষ্কের খাবার আলাদা। পেট অন্যের ছোঁয়া খাবার খেতে পারে, কিন্তু মস্তিষ্ক পারে না। যা সবাই পড়ে তা আমি পড়বো কেন? যা সবাই শেখে তা আমি শিখবো কেন? এটি মস্তিষ্কের অত্যন্ত সাধারণ প্রতিক্রিয়া। গ্রেডিং পদ্ধতি মস্তিষ্কের এ প্রতিক্রিয়াকে বলপূর্বক দমন করছে, এবং বাধ্য করছে তা খেতে, যা খাওয়ার কথা ছাত্রদের ছিলো না।

(৩)
এ পদ্ধতি মস্তিষ্কের রুচিতে গুরুতর পরিবর্তন এনেছে। মানুষ এখন আর সহজে নতুন ও অভিনব কিছু গ্রহণ করতে পারে না, তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। কাজী নজরুল তাঁর অনেক কবিতা এ যুগে প্রকাশ করতে পারতেন না, যেরকম আমি আমার অনেক কবিতা ও প্রবন্ধ এখন আর প্রকাশ করতে পারি না। গ্রেডিং পদ্ধতির আগে যারা ইশকুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতো তারা এরকম প্রতিক্রিয়া দেখাতো না।

(৪)
কিছু কাগজ ও চকের ধুলো ছাড়া এ পদ্ধতিতে শিক্ষক ও ছাত্রের মাঝে আর কিছুর বিনিময় ঘটে না, যেরকম মাছবাজারে মাছ ও টাকা ছাড়া আর কোনো কিছুর অদল বদল হয় না। গ্রেডিং পদ্ধতির আগে শিক্ষক তার ছাত্রদের সাথে নিবিড় সময় ব্যয় করতেন। শিক্ষক মাঝেমধ্যে ছাত্র হয়ে উঠতেন, ছাত্র মাঝেমধ্যে শিক্ষক হয়ে ওঠতো। এতে ছাত্র ও শিক্ষক, দুজনের মস্তিষ্কই ক্রিয়াশীল থাকতো।

Download

(৫)
এ পদ্ধতি সকলকে একই জিনিস পড়তে বাধ্য করে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হলো, সে স্বাধীন থাকতে চায়। সে আরোপিত কাজ সম্পাদন করতে চায় না, যদি না এতে কোনো ভালো নগদ প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে। একটি ছাত্র বিনা পারিশ্রমিকে কেন বছরের পর বছর ইশকুলে যাবে, যদি তাকে ওখানে গিয়ে করতে হয় তা, যা সবাই করছে? এটি একটি একঘেয়ে ব্যাপার। একঘেয়েমির সাথে জিপিএ ফাইভের সম্পর্ক থাকতে পারে, কিন্তু জ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বসাহিত্য ভাষণ : লিও টলস্টয় | দ্বিতীয় পর্ব

(৬)
গ্রেডিং পদ্ধতি শিক্ষককে তেজী ষাঁড় থেকে অনুগত গাধায় পরিণত করেছে। এ পদ্ধতির আগের শিক্ষক ও পরের শিক্ষক এক নয়। মহৎ চিন্তা, মহৎ আবিষ্কার, মহৎ লেখা, ও মহৎ জ্ঞানদানের সাথে আর্থিক স্বার্থের কোনো যোগসূত্র নেই (থাকলেও তা খুবই সামান্য)। গ্রেডিং পদ্ধতি শিক্ষকদের মাঝে একটি নতুন আর্থিক সংস্কৃতির সৃষ্টি করেছে। এর কারণ কী? এর কারণ হলো, গ্রেডিং পদ্ধতির উদ্দেশ্য— ছাত্রটি ভালো কর্মী কি না তার সনদ দেয়া, কিন্তু এই কর্মীদের মধ্য থেকেই পুনরায় শিক্ষক তৈরি হচ্ছেন। কর্মীর প্রধান কাজ নিয়োগকর্তার আরোপিত কাজ সম্পাদন করে আর্থিক পারিশ্রমিক নেয়া। কর্মীর উদ্দেশ্য থাকে পণ্যের গ্রেড ভালো করা। পণ্যটি বাজারে বিকোবে কি না তা নিশ্চিত করা। ক্রেতার রুচি যতো খারাপ হবে, উৎপাদিত পণ্যের মানও ততো খারাপ হবে। শিক্ষক এখন এ কাজটিই করছেন। তিনি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ছাত্রের গ্রেডের দিকে খেয়াল রাখছেন। কিন্তু গ্রেডিং পদ্ধতির আগে, শিক্ষক এমন ছিলেন না। তিনি তখন বাজারের চাহিদার বদলে, খেয়াল রাখতেন সভ্যতার চাহিদার দিকে।

(৭)
এ পদ্ধতি এক প্রকার বিকৃত প্রতিযোগীতা তৈরি করেছে। এ প্রতিযোগীতা মুলো খাওয়ার প্রতিযোগীতা। ছাত্রদের সামনে এক বল মুলো রেখে বলা হচ্ছে খাও। সবাই কি মুলো খেতে পারে? হয়তো পারে, কিন্তু সবাই কি সমান সময়ে সমান মুলো খেতে পারে? পারে না। মুলোর জায়গায় আপেল বা আমড়া রাখলে কি ফলাফল একই হতো? হতো না। মুলোতেও কিছু ফল পাওয়া যেতো, কিন্তু মুলোকে তারা রান্না করারও প্রয়োজন বোধ করেন নি। তারা এ পরিশ্রমটুকোও করতে রাজি নন। মুলো ছাত্রকেই রান্না করতে হবে, ছাত্রকেই খেতে হবে। সবার ঘরে কি আছে মুলো রান্নার সরঞ্জাম? সবাইকে মুলোই খেতে হবে কেন? কিন্তু জিপিএ ফাইভ পদ্ধতি সব ছাত্রকে মুলো খেতেই বলছে।

(৮)
গ্রেডিং পদ্ধতি বৈচিত্র সহ্য করে না। এটি ইশকুলকে করে তোলে পাতাছাটা চা-বাগান, এবং ভেঙে দেয় ছাত্রদের মনোবল। কারও মনোবল ভেঙে দিলে তার আর কিছু থাকে না। সে ভুগতে থাকে মনোবৈকল্যে। সে যার দিকে তাকায় তাকেই তার উঁচু মনে হয়, শুধু নিজেকে বামন মনে হয়। গ্রেডিং পদ্ধতি হয়তো দৈবক্রমে জন্ম দিতে পারে লাখে একজন উঁচু মানুষের, কিন্তু এজন্য সে নিরানব্বই হাজার নয়শো নিরানব্বই জনেরই মাথা কেটে নেয়। এই রক্তপাত দেখা যায় না, কিন্তু চারপাশে তাকালে তা টের পাওয়া যায়।

(৯)
এ পদ্ধতির শিকার ছাত্ররা একসময় বিয়েশাদী করে অভিভাবক হয়, এবং তাদের অভিভাবকত্বের মান হয় অত্যন্ত করুণ। তারা তাদের সন্তানদের নিজেদের ছাঁচে বড় করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। গাধার ঘরে সিংহছানা বেশ অস্বাভাবিক ব্যাপার। গাধা যদি দেখে তার ঘরে জন্ম নিয়েছে সিংহছানা, তাহলে সে খুব চিন্তিত হয়ে ওঠে। গ্রেডিং পদ্ধতি তাকে এ চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়। সিংহছানা পুনরায় গাধা হয়ে ওঠে। জুতোর ঘরে জন্ম নিতে থাকে বংশপরম্পরায় জুতো।

Download

(১০)
গ্রেডিং পদ্ধতি উত্থান ঘটাতে পারে ফ্যাশিবাদ ও গোঁড়ামির। এ পদ্ধতিতে ছাত্র ও শিক্ষক কেউই ভিন্নভাবে চিন্তা করতে শেখে না। সবকিছুকেই তারা একটি নির্ধারিত ছকের ভেতর দেখতে পছন্দ করে। এতে স্বাধীন চিন্তা বাধাগ্রস্ত হয়, এবং উগ্র চরমপন্থার বিকাশ ঘটে। কেউ ভিন্নভাবে কথা বললে তাকে আক্রান্ত করা হয়। ক্ষমতাবানদের নিজস্ব চিন্তা ছাড়া আর কোনো চিন্তা ওই সমাজে বেড়ে উঠতে পারে না। গ্রেডিং পদ্ধতি ছাগলকে উপস্থাপন করতে পারে মহিষরূপে, এবং মহিষকে চালিয়ে দিতে পারে ছাগলরূপে। সিলেবাসই এখানে সব। সিলেবাস যদি পাগলামোকে স্বাস্থ্য ঘোষণা করে, তাহলে ছাত্রকেও বলতে হবে— পাগলামোই স্বাস্থ্য।

আরও পড়ুনঃ জনপ্রিয় ও সেরা ৫০ বই রিভিউ PDF Download

(১১)
কোন কোনো দেশে, যেমন বাংলাদেশে, এ পদ্ধতি জন্ম দিতে পারে অসততার চক্রের। কবে থেকে বাংলাদেশে চালু আছে গ্রেড পদ্ধতি? অনেক আগে থেকে। প্রথমে এটির নাম ছিলো ডিভিশন বা বিভাগ। ফার্স্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন, থার্ড ডিভিশন। এই ডিভিশন পদ্ধতিকে আমি তুলনা করতে পারি এজরা স্টাইলির ডায়েরির সাথে। এজরা স্টাইলি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি তার ডায়েরিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ছাত্রদের চারটি ভাগে ভাগ করার কথা উল্লেখ করেছিলেন। প্রথমটি ‘অপটিমি’, দ্বিতীয়টি ‘সেকেন্ড অপটিমি’, তৃতীয়টি ‘ইনফেরিয়োরি’, চতুর্থটি ‘পারজোরি’; যেগুলোর বাংলা আমি করবো— সবচেয়ে ভালো, ভালো, খারাপ, এবং সবচেয়ে খারাপ। মানুষের মর্যাদার সাথে কি এই শ্রেণি বিভাগ যায়? যায় না। মানুষ চায় না তার হাতে এমন কোনো কাগজ থাকুক যেটি বলবে— লোকটি খারাপ ছিলো। পরীক্ষায় খারাপ করা কি মানুষ হিশেবে খারাপ হওয়া? না, তা নয়। কিন্তু গ্রেডিং পদ্ধতি দেয় উল্টো বার্তা। মানুষ ধরে নেয় যার জিপিএ পাঁচ, সে জিপিএ চারওয়ালার চেয়ে ভালো। যার জিপিএ চার, সে জিপিএ তিনওয়ালার চেয়ে ভালো। আর যার জিপিএ এক, সে ঘোড়ার ডিম, সে কিছুই না; তার জন্ম একটি দুর্ঘটনা। এটি ছাত্রদের মনে একটি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ছাত্র যেকোনো মূল্যে তার সার্টিফিকেটে জিপিএ পাঁচ লেখাতে চায়। ‘কাগুজে ভালো’ হওয়ার জন্য সে মরিয়া হয়ে ওঠে। সে উপায় খুঁজতে থাকে, পরীক্ষার আগের রাতেই কীভাবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি সংগ্রহ করা যায়! আমি অনেক অভিভাবককে, এমন কি শিক্ষককেও , এ কাজে ছাত্রদের সহায়তা করতে দেখেছি। কিন্তু গ্রেডিং পদ্ধতি যদি তার প্রকৃত বার্তাটি দিতো তাহলে এমন ঘটতো না। গ্রেডিং পদ্ধতি যদি গ্রেডের সাথে সাথে সনদে এটিও লিখে দিতো যে—

“সতর্কতা: এই সনদ ছাত্রটির মোট অর্জিত জ্ঞানের কোনো পরিমাণ নির্দেশ করে না। এটি ইশকুলে ছাত্রটির নিয়মিত হাজিরা, ও সিলেবাসে নির্ধারিত পাঠ্যবই পড়ার পরিমাণ নির্দেশ করে মাত্র। ছাত্রটি সিলেবাসের বাইরেও পড়ে থাকতে পারে অনেক বই, অর্জন করে থাকতে পারে অনেক জ্ঞান, যা এ সনদে প্রতিফলিত হয় নি। ছাত্রটি হয়তো এমন অনেক কাজ জানে, যার খবর এ সনদ রাখে না। ছাত্রটি পরীক্ষার আগেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জোগাড় করে ফেলেছিলো কি না, এ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। ইশকুল ও সিলেবাসকে ছাত্রটি ভালোবেসেছিলো কি না, এ ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত নয়। ছাত্রটির আর্থিক, পারিবারিক, ও মনোদৈহিক অবস্থা পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলে থাকতে পারে। তাই এ সনদকে বিশ্বাস করতে হবে অত্যন্ত সাবধানতার সাথে।”

তাহলে অক্ষত থাকতো মানুষের মর্যাদা। যে-মানুষ বুঝতে পারে তার আর মর্যাদা নেই, তার মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়েছে, সে হতাশ হয়ে পড়ে, এবং কেড়ে নিতে পারে নিজেই নিজের জীবন।

(১২)
গ্রেডিং পদ্ধতির সবচেয়ে বড় শিকার শিশুরা। বাংলাদেশে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর শিশুদের এ পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। আমি একটি লেখায় বলেছিলাম— শিশুরা দিন দিন পরিণত হচ্ছে ভারবাহী আধুনিক গাধায়। গ্রেডিং পদ্ধতি তাদের পিঠে চাপিয়ে দিয়েছে কাগজের বস্তা। কাগজে বিশ্বাস স্থাপন করতে বাধ্য করা হচ্ছে শিশুদের। তারা খেলার মাঠে যেতে পারছে না, ঘুড়ি উড়াতে পারছে না। তারা জানতে পারছে না প্রকৃতিকে। ফলে প্রকৃতির প্রতি তাদের কোনো মমত্ববোধও সৃষ্টি হচ্ছে না। তারা নিষ্ঠুর ও অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে। জড়াচ্ছে খুন খারাবিতে। মদকাসক্তি এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। গ্রেডিং পদ্ধতি এ দায় এড়াতে পারে না।

আরও পড়ুনঃ সরদার ফজলুল করিম : আমাদের কালের বাতিঘর

উপরে, জিপিএ ফাইভ পদ্ধতির যে-বারোটি অপকার আমি উল্লেখ করেছি, তার বাইরেও এ পদ্ধতির আরও নানা অপকার আছে। হ্যাঁ, কিছু উপকারও আছে। গ্রেডিং পদ্ধতি না থাকলে এতো বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করা যেতো না। কিন্তু এর জন্য যে-শিক্ষানীতির প্রয়োজন ছিলো, তা আমরা প্রণয়ন করি নি। আমরা ছাত্রদের গিনিপিগ বানিয়ে, একেক সময় একেক শিক্ষানীতি চাপিয়ে দিয়েছি, যা প্রতি বছর কেড়ে নিচ্ছে ছাত্রদের প্রাণ।

আমাদের সময় হয়েছে এ পদ্ধতি তুলে দেয়ার, এবং তুলে নিয়ে একটি নতুন পদ্ধতি চালু করার। যে-ক্ষতি এ পদ্ধতি করেছে তা অপূরণীয়। যে-প্রাণগুলো ঝরে গেলো, সে-প্রাণগুলো আমরা আর ফিরে পাবো না। ওই শিশুরা, যাদের বেঁচে থাকার কথা ছিলো আরও অনেক বছর, যারা ফুলের চেয়ে কম শুদ্ধ ছিলো না, তাদের কাছে আমরা আর ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ পাবো না। প্রশ্ন উঠতে পারে— আমেরিকা ও ইউরোপে তো এ পদ্ধতি চলছে, আমাদের এখানে চলতে অসুবিধা কোথায়? না, আমেরিকা ও ইউরোপে এ পদ্ধতি চলছে না। আমাদের কাছে মনে হতে পারে চলছে, কারণ তাদের সমাজ ও রাষ্ট্রনেতারা আমাদের মতো অসৎ নন। তারা এ পদ্ধতিতেও উৎপাদন করছে কিছু জ্ঞান। কারণ তারা, অন্তত মাদাম মন্তেসোরি ও বার্ট্রান্ড রাসেলের পরামর্শগুলো আমলে নিয়েছে।

Download

আর তাদের জ্ঞান আরও এক হাজার বছর থেমে থাকলেও ক্ষতি নেই, কারণ তারা ইতোমধ্যে অর্জন করেছে যথেষ্ট উৎকর্ষ। কিন্তু আমাদের তো পাড়ি দিতে হবে এমন সুড়ঙ্গ, যার দৈর্ঘ্য পৃথিবীর দুই মেরুর দূরত্বের চেয়ে কম নয়।

লিখেছেনঃ মহিউদ্দিন মোহাম্মদ

ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার

Facebook Comments

Similar Posts