Skip to content
Home » কে কথা কয় হুমায়ূন আহমেদ PDF রিভিউ | Ke Kotha Koy by Humayun Ahmed

কে কথা কয় হুমায়ূন আহমেদ PDF রিভিউ | Ke Kotha Koy by Humayun Ahmed

    কে কথা কয় হুমায়ূন আহমেদ এর সেরা রোমান্টিক রচনা উপন্যাস গল্প সমগ্র বই সমূহ pdf download রিভিউ
    Redirect Ads

    আমি আজ যে বইটার রিভিউ দিবো সেটা হুমায়ুন আহমেদ এর লিখা এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস কে কথা কয়। আমার ধারণা বেশিরভাগ মানুষ এই উপন্যাস টা পড়ে নি তাই রিভিউ দেয়ার জন্য এই উপন্যাস বেছে নিয়েছি এই আশায় যেন আমার রিভিউ পড়ে ১জন হলেও বইটা পড়তে আগ্রহী হয়।

    বইঃ কে কথা কয়
    প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬
    হুমায়ূন আহমেদ ভূমিকায় জানিয়েছেন তিনি এই উপন্যাস লেখার মন্ত্র পান মার্কিন সাহিত্যিক ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর আত্মজৈবনিক “দ্যা স্পাইরাল স্টেয়ারকেস” থেকে। যেখানে লেখিকা এক অটিস্টিক শিশুর কথা বলেন, এক সময় লেখিকা শিশুটির বেবিসিটারের দায়িত্ব পালন করতেন।

    Download

    “কে কথা কয়” উপন্যাসের মূল চরিত্র কমল,
    কমলের বয়স ১০-১১
    সে ১জন অটিস্টিক শিশু কিন্তু গণিতে আগ্রহী আর পারদর্শী। হুমায়ূন আহমেদ তার গল্পের প্রধান চরিত্র হিসেবে কমলকে বেছে নিয়েছেন।

    গল্প শুরু হয় মতিন উদ্দিন নামের ২৭ বছর বয়সি বেকার যুবককে দিয়ে। কমলের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে সে চাকুরি নিতে আসে। চাকরি পেয়েও যায় এবং প্রথম সাক্ষাতে কমল মতিনকে পছন্দ করেনা।
    পরবর্তীতে মতিন আবিষ্কার করে সে নিজেও কমলের থেকে আলাদা নয় বরং কমলের অনেক বিষয় তার সাথে মিলে যাচ্ছে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা অকারণে কোমল/নিষ্ঠুর হতে পারে, মতিন নিজের মাঝেও এই বিষয়গুলো লক্ষ করে।
    পুরো উপন্যাসে সমাজের ধনী গরিব সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। আসুন উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রের সাথে পরিচিত হয়ে আসি।

    কমল: এক অস্টিস্টিক শিশু।
    বয়সঃ ১০-১১ যদিও তার অটিজমের ক্ষেত্রটি রহস্যময়। নিজের একান্ত জগতের বাইরে সে চিন্তা করেনা প্রচন্ড জেদি ও একরোখা। মিথ্যাকথা ও অযৌক্তিক কোনোকিছু সে মানতে পারে না। গণিতে খুব আগ্রহী ও পারদর্শী। সে বর্ণমালা উল্টো দিক থেকে পড়ে বা বুঝতে পারে অর্থাৎ সে ডাইলেক্সিক।

    মতিন: ২৭ বছর বয়সী এক বেকার যুবক। পরবর্তিতে সে আবিষ্কার করে, নিজের অজান্তেই সে একজন মানসিক প্রতিবন্ধি।
    কমলের বাবাঃ কমলের বাবা সালেহ ইমরান একজন ব্যারিস্টার ও ধনীব্যক্তি। তার স্ত্রী মুনা অত্যন্ত রূপবতী।
    কমলের মাঃ মুনা। মুনা নিজেও একজন বিত্তশালী নারী কিন্তু মানসিক অবসাদগ্রস্ত কিছুটা বিকারগস্ত ও বটে। কমলের বাবার থেকে দিন দিন তার শারীরিক ও মানসিক দুরত্ব বাড়ছে।

    Download

    আহমেদ ফারুক: কমলের বাবা সালেহ ইমরানের পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট,জুনিয়র সহকর্মী যে দেখতে সুদর্শন ও যার সাথে মুনার গোপন সম্পর্ক আছে বলে উপন্যাসের শুরুতে ইঙ্গিত দেয়া আছে।
    নিশু: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে মাস্টার্স করা তরুণী। যে খুবই মেধাবী। সে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ডে PHD করতে যাবে।

    শিশুর চারিত্রিক দিক হিসেবে উল্লেখ আছে তার মধ্যে নারীসুলভ লজ্জা,কোমলতা,জড়তা কিছুই নেই।
    আজিজ আহমেদ: নিশুর বাবা। যার স্ত্রী মারা গেছেন সে তার একমাত্র মেয়ে নিশুর সাথে থাকে ও নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন।
    সালেহা: মতিনের বড় বোন। ভয়ানক পেটের পীড়ায় আক্রান্ত, বছরের অধিকাংশ সময় অসুস্থ থাকেন।
    হাবিব: মতিনের দুলাভাই ও সালেহার স্বামী যে আর্থিকভাবে ছা-পোষা ধরনের মানুষ।

    তৌহিদা: হাবিবের দুঃসম্পর্কের বোন। ১জন কলেজছাত্রী আর সরল মনের অধিকারী যে মতিনকে মনে মনে প্রচন্ড ভালোবাসে তার মনের আশা মতিনকে বিয়ে করবে, সুখের সংসার হবে।
    নদ্দিউ নতিম: মতিনের সৃস্ট কাল্পনিক উজবেক কবি। নদ্দিউ নতিমের একটি কবিতা হলোঃ
    জলে কার ছায়া পড়ে?
    কার ছায়া জলে?
    সেই ছায়া ঘুরেফিরে কার কথা বলে?
    কে ছিল সেই শিশু? কী তাহার নাম?
    নিজের ছায়ারে তার করিছে প্রণাম।

    আশরাফ: মতিনের বন্ধু। যে মতিনকে প্রতিমাসে টাকা পাঠিয়ে আর্থিক সাহায্য করে। সে প্রকৃতির কোলে পাহাড়ি অঞ্চলে জমি লিজ নিয়ে তৈরি করেছে তার আপন সাম্রাজ্য যেখানে সে প্রাচীনকালের জনগণের ন্যায় জীবনযাপন করে।
    মূল চরিত্রগুলোর পাশে ছোটখাটো অনেক চরিত্র আছে এদেরকে ঘিরেই যার আখ্যান।
    মতিন আর কমলের ঘটনাগুলো এগিয়ে যায় সামনের দিকে। কমলের বাবা সালেহ ইমরান ও মা মুনার সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আহমেদ ফারুক এর আগমন ঘটে। এই উপন্যাসের মূল প্লট হচ্ছে মানসিক বিকারগস্ত অটিজমে আক্রান্ত কমলের থেকে সমাজের তথাকথিত সুস্থ,সুশীল ব্যক্তিগণ আরো বেশি বিকারগস্ত। যা পুরো উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে। কমল এখানে অটিস্টিক শিশু হলেও সবচেয়ে বুদ্ধিমান। পরবর্তীতে সে তার নোংরা পারিবারিক সত্যের সন্ধান পায়, বাধ্য হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়।

    Download

    মতিন প্রায়ই নিশু আর তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়ি যেত। নিশু PHDফড করতে ইংল্যান্ড যাবে তাই নিশুর বাবা চাচ্ছিলেন PHD করতে যাবার আগে সে যেন বিয়ে করে। তাই সে মতিন কে চুক্তির বিয়ের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে মতিন রাজি হয়না। কারণ তার সমগ্র চেতনা জুড়ে থাকে তার মস্তিষ্ক প্রসূত উজবেক কবি নদ্দীউ নতিম। মতিন কবিতা লেখে, পত্রিকায় প্রবন্ধ ছাপায়, এমনকি “নদ্দিউ নতিমের নিষিদ্ধ গল্প” নামক পাণ্ডুলিপি রেডি করে বই প্রকাশে প্রকাশককে রাজি পর্যন্ত করিয়ে ফেলে। সে তার নামে গল্প,প্রবন্ধ লিখতে পারেনি প্রকাশকেরা নতুনদের মৌলিক বই ছাপায় না। অনুবাদ বই ছাপাতে আগ্রহী থাকেন। পরবর্তিতে দেখা যায় নিশুর সাথে মতিনের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি, তারা একে অন্যকে নিজেদের অজান্তেই ভালোবাসে।

    মতিনের সাথে বিয়ে ঠিক হয় তৌহিদার, অথচ বিয়ের দিন মতিম তৌহিদাকে চিরকুট পাঠায় যেখানে সে জানায় তৌহিদাকে বিয়ে করা তার পক্ষে সম্ভব না। অকারণে বিয়ে ভেঙে দেয়া মতিনের পরিবারকে এলোমেলো করে দেয়। তার বড় বোন সালেহা নিজের স্বামী হাবিবকে বাধ্য করেন তৌহিদাকে বিয়ে করতে। প্রাথমিকভাবে হাবিব রাজি না থাকলেও স্ত্রীর চাপে এ কাজ করতে বাধ্য হন। পালিত বোনের সাথেই বিয়েতে বসেন। এবং এক সকালে তৌহিদা উন্মাদ্গ্রস্থা হয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে নিরুদ্দেশ। হারিয়ে যায়।

    নিশুর বাবা আজিজ আহমেদের মৃত্যুতে নিশু শারীরিক, মানসিকভাবে
    ভেঙে পড়ে। একটা মেয়ের একা থাকা জটিল সমস্যা। ডিস্টোপিয়ার চিহ্ন স্বরুপ এলাকার কিছু বখাটে যুবক একদিন ঘরে ঢুকে নিশুকে ধর্ষণ করে যা খুব দুঃখজনক
    কিন্তু উপন্যাসের পরবর্তী অংশে কি রয়েছে?
    মুনার কি আসলেই আহমেদ ফারুকের সাথে পরকীয়ায় জড়িত ছিল? কমলের নেয়া কঠিন সিদ্ধান্ত কি ছিলো? মতিনের শেষ পরিনতি কি হয়েছিলো?
    এগুলো জানতে হলে পড়ে দেখতে হবে হুমায়ুন আহমেদ এর এই অন্যরকম উপন্যাস।

    লিখেছেনঃ তনয়া ইসলাম

    Download

    বইঃ কে কথা কয় [ Download PDF ]
    লেখকঃ
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন