ভ্রমর, কৃষ্ণকান্তের ভ্রাতুষ্পুত্র গোবিন্দলাল এর পত্নী।
কৃষ্ণকান্তের উইল উপন্যাসে সদাহাস্যজ্বল, সরলমনা কিশোরী ভ্রমর ও তার অমায়িক ও অসাধারণ চরিত্রের অধিকারি স্বামীর পারস্পারিক বোঝাপড়া ও সম্পর্ক দেখে মনে হবে, তার চেয়ে সুখী মানুষ এই পৃথিবীতে পাওয়া দুষ্কর।।
হ্যাঁ!! সে সুখী ছিল ও বটে! “বিষবৃক্ষ” উপন্যাস এর নগেন্দ্র-সূর্যমুখীর স্বর্ণউদ্দ্যানে যেমন ‘কুন্দনন্দিনী’ নামক বিষবৃক্ষের আবির্ভাব ঘটে, তেমনি ভ্রমরের নীলাকাশেও ‘রোহিণী’ নামক কালো মেঘের সঞ্চার ঘটে।
ভ্রমরের অগাধ বিশ্বাস, ভালোবাসা, ভক্তি সবকিছুই রোহিণীর ভুবনভুলানো সৌন্দর্যের কাছে হার মেনে যায়।
“বিনা অপরাধে আমাকে ত্যাগ করিতে চাও,কর। মনে রাখিও- একদিন আমার জন্য তোমাকে কাঁদিতে হইবে। মনে রাখিও- একদিন তুমি খুঁজিবে, এ পৃথিবীতে অকৃএিম আন্তরিক স্নেহ কোথায়?”…..” তুমি যাও আমার দুঃখ নাই! তুমি আমারই—রোহিণীর নও।”
নাহ!! ভ্রমরের অন্তিরের ক্রন্দন সেদিন গোবিন্দলালের মনজয় করতে পারেনি। সে পরবর্তীতে ছদ্মনামে নতুন জায়গা, যশোরে রোহিণীকে নিয়ে নতুন সংসার শুরু করলো। তার হৃদয় ও বিশাল প্রাসাদের রাণী ছিল রোহিণী।। তাদের স্বর্গসুখে ভ্রমরের কোন অস্তিত্বও ছিল না।।
তাহলে, হঠাৎ গোবিন্দলাল কেন তার হৃদয় রাজ্যের রাণী, রোহিণীকে নিজ হাতে হত্যা করল??
ভ্রমরের সাথে কি এজন্মে সে আর মুখোমুখি হয়েছিলো!
জানতে হলে এ-ই অসাধারণ উপন্যাসটি পড়তে হবে!!!!
আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার
উপন্যাসে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের কল্পনাপ্রতিভা, চিন্তাশক্তির গভীরতা, মেধা ও মননশক্তির প্রকাশ পাওয়া যায়। শব্দচয়নে নান্দনিকতা, সুবিন্যস্ত ঘটনাপ্রবাহ, সমাপ্তিতে পূর্ণতাদান সব মিলিয়ে উপন্যাসটিকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে। শতবর্ষ পূর্বে রচিত উপন্যাসে একটা উইলকে কেন্দ্র করে যে বিরোধ তার প্রকাশ এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পাওয়া যায়। সম্পত্তির বিভাজনকে কেন্দ্র করে ভাইয়ে-ভাইয়ে বিরোধ আজও বর্তমান। অর্থনৈতিক উন্নতি ও প্রযুক্তির বিকাশ সেটা রোধ করতে পারেনি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সামাজিক অন্তর্দৃষ্টির গভীর প্রতিফলন উপন্যাসে ঘটেছে বলে উপন্যাসটি কালজয়ীর স্বাক্ষর বহন করছে।
লিখেছেনঃ সুমাইয়া ইফা
বইঃ কৃষ্ণকান্তের উইল [ Download PDF ]
লেখকঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
বঙ্কিম রচনাবলী প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড PDF Free Download করুন এখান থেকে