Skip to content
Home » হাজার চুরাশির মা – মহাশ্বেতা দেবী

হাজার চুরাশির মা – মহাশ্বেতা দেবী

    হাজার চুরাশির মা pdf
    Redirect Ads

    বিজন ভট্টাচার্য তার ১ম স্বামী ছিল, ১৯৬২ সালে সংসার ভেঙে যায়। তখন মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। অসিত গুপ্তের সাথে ২য় বিয়ে হয় ১৯৬৫ সালে, নির্মম ভাগ্যের জন্য সে বিয়েও টিকেনি। নিঃসঙ্গ জীবন শিক্ষার জন্য ব্যয় করার প্রত্যয় নেয়। এতে সাহিত্য কর্ম নতুন দিকে মোড় দেন। শিল্পের রুপ থেকে বাস্তবিক দিকে ধাবিত হন। ‘হাজার চুরাশির মা’ উপন্যাস ঐ সময়ের লেখা।

    বর্তমান প্রেক্ষাপটের সাথে হাজার চুরাশির মা উন্যাসের যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়। বর্তমানে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রতার দৃষ্টান্ত তৎকালীন সময়েও ছিল। নকশালবাড়ি আন্দোলনের আর্দশ মহান, কিন্তু পথ ভুল ছিল।

    Download

    ঠিক বর্তমানে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য উচ্চ আয়/নিম্ন আয়ের উঠতি যুবক দের আকৃষ্ট করছে। তেমনি নকশালবাড়ী আন্দোলন ছিল সাম্প্রদায়িকতার বীজ যে শোষক শ্রেণী তৈরী করেছে তা থেকে উদ্ধার হওয়ার জন্য, মার্ক্সবাদীরা বিশেষ মানুষ কে হত্যা করার টার্গেট করে। তাদের থেকে বিপথগামী (তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী র কাছে) ব্রতী। তার মৃত্যুর পর মর্গে ডেট বডির নাম্বার ছিল এক হাজার চুরাশি। এজন্য উপন্যাসের নামকরণ করা হয় হাজার চুরাশির মা।

    উপন্যাসের সেই মাতা সুজাতা, তার স্বামী দিব্যনাথ তাকে স্ত্রীর কোনো অধিকার দেয়নি, পারতপক্ষে শুধু ব্যবহার করেছেন। তার অসামাজিক কর্মকাণ্ড কে তার মা ও মেয়ে নিপা বিভিন্ন সময় সাপোর্ট দিয়ে এটাকে পৌরষের প্রকাশ হিসেবে।

    যখন থেকে এসব বুঝা শুরু করেছে ব্রতী তখন থেকে তার পরিবার সমাজের শোষকের উপর একটা ঘৃণাবোধ কাজ করে। এজন্য সে বিপ্লবী হয়ে ওঠে, যখন সে মারা যায় তখন তার পরিবার বিষয় টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে, যাতে সমাজে তাদের মানসম্মান না কমে।

    কিন্তু সুজাতা তার ছেলে ব্রতী বিভিন্ন ভাবে আগলিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তার ছেলের এমন মৃত্যুর জন্য গর্ববোধ করতেন। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের সমু র পরিবার বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। তাদের একমাত্র ভরসা ছিল সমু। সেই সমুই মারা যায় শোষকদের হাতে। তার বোন ছাত্র পড়িয়ে যা আয় করতেন তাই দিয়ে পরিবার চলতো, কিন্তু তার ভাইয়ের বিদ্রোহী হয়ে নিহত হওয়ার জন্য তাকে আর পড়াতে দেওয়া হয় না!

    Download

    সময় শোকের চেয়ে শক্তিশালী! সময় শোকের উপর বীজ বপন করে, জীবনে শোকের প্রভাব অকপটে শেষ হয়ে যায়।

    সুজাতা যখন ঠুকরি ঘরে গিয়ে ছেলের শেষ স্মৃতি মনে করতে যান, সমুর মা বলেন, “আপনার তো আরেক ছেলে আছে তাকে নিয়ে বুক বাঁধবেন। কিন্তু আমি!”

    সুজাতা শেষবার দেখা করার সময় দামী একটা উপহার দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সাহস করে দিতে পারেনি! সুজাতা নিজের অর্থে চলতেন, ব্যাংকে জব করতেন। কিন্তু কখনো কষ্টের মাঝেও সংসার ছেড়ে আসেনি।

    নন্দিনী ছিল এই উপন্যাসের এক অনন্যময়ী নারী! যার জীবনের সব হারিয়ে খুজে সামন্তবাদ, তার প্রেমিক ব্রতী কে হারিয়ে, যখন সে শোষকের হাতে ধরা খায় নিজের সব কিছু হারিয়ে, লাইটের নিচে টানা চোখ রেখে নির্যাতন সহ্য করে চোখের আলো হারিয়ে ফেলে।

    Download

    নিপা ছিল তার বাবার মত বহুগামি, তার স্বামী অমিত এসব সহ্য করতে না পেরে মদ খাওয়া শুরু করে।

    তুলির বিয়ে হয় কাপাডিয়ার সাথে তার শাশুড়ি মনে করেন জগতের সবকিছুর সমাধান গুরু স্বামীজীর কাছে!

    ব্রতীকে বলা হচ্ছে ‘মিসগাইডেড’। আজকের সমাজে জঙ্গিদের বলে ‘মিসগাইডেড’। কেন তারা জঙ্গি হলো?
    এর অনেক কারণ:
    পরিবারের নৈতিকতার অভাব,
    পিতা মাতার দাম্পত্য কলহ!
    চারপাশের মানুষের নৈতিক অবক্ষয়!

    ‘হাজার চুরাশির মা’ উপন্যাসে ব্রতী এরকম এক পরিবার ও সমাজ পেয়েছিল। উপন্যাস টি সমসাময়িক সময়ে সবার পাঠ করা ও এর সম্পর্কে পূর্ণ আলোচনা বর্তমান সামাজিক অবক্ষয় রোধে সাহায্য করতে পারে। এতে মানুষ নিজ অবস্থান বুঝে তার সমাজে করণীয় বুঝতে চেষ্টা করবে, তা যদি নিজ জীবনে প্রভাব রাখতে পারে,তাহলে সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে… ব্রতী প্রায়ই তার মা`কে বলতো,

    Download

    “মানুষের সবচেয়ে কঠিন হলো নিজের মত হওয়া”

    আসলে আমরা কেউই নিজের মত হতে চাইনা। চাই অন্যের মত হতে।

    ফারুক শেখ
    শিক্ষার্থী
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

    হাজার চুরাশির মা উপন্যাস pdf download করতে এখানে ক্লিক করুন

    Facebook Comments
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন