Skip to content
Home » সৌদি আরব ও বাংলাদেশের চাঁদ বিষয়ক সমস্যা | সময়ের বিশাল তারতম্য

সৌদি আরব ও বাংলাদেশের চাঁদ বিষয়ক সমস্যা | সময়ের বিশাল তারতম্য

    সৌদি আরবে কি রমজানের চাঁদ উঠেছে
    Redirect Ads

    কেনো বাংলাদেশ থেকে চাঁদ সৌদি আরবের তুলনায় বিলম্বে দেখা যায়???
    সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশ বা ভারতীয় উপমহাদেশের সময়ের পার্থক্য ২.৫-৩ ঘণ্টা হলেও, রমজান বা ঈদ কেন সাধারণত একদিন পর হয়? সামান্য কিছু সময়ে তো দিন বদলে যায় না!

    আসলে বিষয়টা বুঝতে হলে পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্যের গতির বিষয়ে কিছু ধারণা থাকা আবশ্যক। সাথে এটাও জানতে হবে যে, চাঁদের গতির সাথে প্রচলিত সময়ের বেশ পার্থক্য রয়েছে।
    চাঁদের পৃথিবীর চারদিকে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে গড়ে প্রায় ২৯.৫৩ দিন। ফলশ্রুতিতে চন্দ্রমাস হয় ২৯ বা ৩০। মজার ব্যাপার হল, চন্দ্রমাস নির্দিষ্ট নয়। ফলে মুসলিমদেরকে রমজান ও ঈদ পালন করতে চাঁদ দেখতে হয়। এই অনির্দিষ্টতার কারণে চন্দ্রবছরও আলাদা হয়। কোন বছর ৩৫৪, আবার কোন বছরে ৩৫৫ দিন হয়। অর্থাৎ এটি গ্রেগরীয় বা সৌরবর্ষ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অনন্য। এবং এখানেও সূর্যের কোন কাজ নেই। যদিও চন্দ্রবর্ষে সূর্য ডোবার পর নতুন দিন গণনা শুরু হয়। অর্থাৎ রাত আগে আসে, তারপর দিন।

    Download

    শুরুতে যেই প্রশ্নটা ছিল সেটাই আবার আলোচনা করি। হিসেব অনুযায়ী সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশ ৩ ঘণ্টা এগিয়ে। এতে বরং বাংলাদেশ ৩ ঘণ্টা আগে চাঁদ দেখবে। কিন্তু তা তো হয়ই না, উল্টো সৌদি আরবে একদিন আগে রমজান, ঈদ শুরু হয়ে যায় সাধারণত।

    সমস্যা হল, আমরা সৌর ও চন্দ্রের হিসেবকে মিলিয়ে ফেলি। সৌর হিসেবে সৌদি আরবের সাথে আমাদের পার্থক্য মাত্র ৩ ঘণ্টা হলেও চন্দ্রের হিসেবে সৌদি আরব ও আমাদের পার্থক্য ২১ ঘণ্টার!

    আরও পড়ুনঃ জিপিএ ফাইভ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছিলো জুতোর ফ্যাক্টোরিতে

    পৃথিবীর গতির কথা তো জানিই। পৃথিবী নিজের অক্ষের চারিদিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘুরে চলেছে প্রতিনিয়ত। যার আহ্নিক গতি বলি। গতিটা সহজে বোঝা যাবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিক বা অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ (Anti Clockwise) বললে। চাঁদ তো ধীরে ধীরে আবর্তন করছে। ফলশ্রুতিতে প্রতিদিন পশ্চিম দেশ সবার আগে চাঁদের উন্মোচন দেখতে পায়। আমরা তো জানিই, সূর্যোদয় হয় পূর্ব থেকে? তবে চাঁদের ক্ষেত্রে উল্টো। পশ্চিমারা চাঁদের আলো সবার আগে পায়।

    Download

    খালি চোখে চাঁদকে দেখতে হলে চন্দ্র আর সূর্যের মাঝে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ থাকতেই হবে। এবং যে পরিমাণ দূরত্ব অর্জন করলে এই কোণ তৈরি হবে, সে পরিমাণ যেতে যেতে চাঁদের ১৭ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। এ কারণেই আজ আমেরিকাতে চাঁদ দেখে গেলেই যে বাংলাদেশেও দেখা যাবে, সেটা ভুল ধারণা। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই কোণ অর্থাৎ ১০.৫ ডিগ্রি অর্জন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দেখা যাবে না। একই বিষয় সৌদি আরব ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও। এই সংকট কোণকে ইলঙ্গেশন (Elongation) বলে। তাই চাঁদের বয়স কত সেটা আদৌ আসল কথা নয়, সেই কোণ হয়েছে কিনা সেটার উপর নির্ভর করে চাঁদ দেখা যাবে কিনা।

    ফলে আমরা সৌদি আরব থেকে ৩ ঘণ্টা সূর্যের হিসেবে এগিয়ে থাকলেও, চাঁদের হিসেবে ২১ (২৪-৩=২১) ঘণ্টা পিছিয়ে আছি। ২১ ঘণ্টা প্রায় ১ দিনের কাছাকাছি। তাই আমরা সৌদি আরবের একদিন পর ঈদ পালন করি।
    সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

    লিখেছেনঃ মূঈনুল ইসলাম খান।

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    Download

    জনপ্রিয় ও সেরা ৫০ বই রিভিউ PDF Download

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন