সালমান শাহ্, নামটি নব্বইয়ের দশকের প্রজন্মের কাছে এক আক্ষেপের নাম। যে নামটি শুনলেই এক ধরণের হাহাকার কাজ করে। যিনি একটা প্রজন্মকে রোদ চশমা পড়া শিখিয়েছেন। যার রঙ্গিন ভিউকার্ড দেখে দেখে রাত পাড় করে দিতো ষোড়শী মেয়েটি। সারা সপ্তাহ ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ছুটির দিনে যার ছবির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতো পুরো পরিবার। যার মৃত্যুর খবর শোনে ঝড়ে গেলে আরও কিছু তাজা প্রাণ, স্কুলে পড়া ছেলেটিও উঠোনে গড়াগড়ি দিয়ে কেঁদেছিল সেদিন। সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়েটির কান্না থামাতে হাজার মেইল দূর থেকে ছোটে আসতে হয়েছিলো তার বরকে। এমনি এক আকর্ষণের নাম ছিলো সালমান শাহ্। কিচ্ছু বুঝতে না পারা একটা বাচ্চা ছেলেও যার ভক্ত ছিলো। আজ হলিউড, বলিউডের এই যুগেও যার জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি। একটি প্রজন্মের মনে এখনো সেই আগের মতোই জায়গা দখল করে আছে নায়ক সালমান শাহ্।
“সালমান শাহ এর অজানা কথা” বইটি মূলত সাংবাদিক সুপন রায়ের কর্মজীবনে সালমান শাহ্ এর সাথে সখ্যতা এবং কাছ থেকে সালমান শাহ্কে দেখার বিষয়গুলো বর্ণনা করেছেন। বইটিতে উঠে এসেছে সেসময়কার চলচ্চিত্রের পিছনের ঘটনা। ব্যক্তি জীবনে সালমান কেমন ছিলেন সে বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক সুপন রায়।
লেখক বলেছেন,
“মৃত্যুর আগের দিন রাতে তার সাথে আমার দেখা হয় এফডিসির সাউন্ড কমপ্লেক্সের সামনে। গাড়ির উপর বসে সিগেরেট ফুঁকছিলেন। দূর থেকে আমাকে দেখা মাত্রই বস বলে ডাক দিলেন। (দুস্টমি করে আমাকে বস বলে ডাকতো)। মিনিট পনেরো বিক্ষিপ্ত আলাপ হয়। সে সময়ও তার কন্ঠে ঝরে পড়েছে ক্ষোভের ডালপালা। মৃত্যুর দিন সকাল ১১টায় আমি লাকসাম চলে যাই। বিকেল ৫টায় লাকসাম স্কুল মাঠে লোকমুখে প্রথম তার মৃত্যুর সংবাদ পাই। নিশ্চিত গুজব বলে প্রথমটায় পাত্তা দেইনি। পরে এর মুখে, ওর মুখে শুনতে শুনতে ধাক্কা খেলাম। ভাবলাম, তাহলে রোড এক্সিডেন্ট নয়তো ঘাড়ের ব্যাথায়ই মারা গেছেন। পারিবারিক জরুরি কাজ থাকায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও সে রাতে ঢাকায় ফিরতে পারিনি। দেখতে পারিনি শেষবারের মতো তাকে, তার মৃতদেহকে। ভেবেছিলাম দু’তিনদিন মৃতদেহ ঢাকায় রাখা হবে। বুকের পাঁজরে কষ্ট পেলাম, অপূরণীয় কষ্ট।”
সালমানের মৃত্যুর পর তখনকার সময়ের সিনে ম্যাগাজিনগুলোতে রকমারি লেখা দিয়ে নানা গসিব সাজানো হয়েছিলো। মনগড়া যা খুশি তথ্য দিয়ে ঠাসা থাকতো সেসব ম্যাগাজিন। এমনকি সালমানের মৃত্যুর আগেও এসব গসিপ ম্যাগাজিনগুলো অতিষ্ঠ করেছিলো সালমানের জীবন। এই স্বার্থান্বেষী হলুদ সাংবাদিকতার বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন সুপন রায়। তথ্যবহুল বইটিতে লেখক চেয়েছেন সত্য তুলে ধরতে, বাস্তবের কাছাকাছি যেতে। পাঠকরা বইটি পড়ে অনেক অজানা কথা জানতে পারবেন।
বইঃ সালমান শাহ এর অজানা কথা [ Download PDF ]
লেখকঃ সুপন রায়
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার