“জগতের সমস্ত লোকেরই মস্তিষ্ক-বিকৃতি আছে।”- এ মস্তিষ্ক-বিকৃতি বলতে আমরা সাধারণত যে ধরনের অর্থ বুঝে থাকি তা শয়তান উপন্যাসটিতে বোঝানো হয় নি। মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে কিছু জৈবিক চাহিদা ও চেতনা। জৈবিক চাহিদা মানুষকে কীভাবে উন্মাদ করে তোলে এবং তা যে ভয়ংকর পরিণতির দিকে নিয়ে তা এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়।
লেখক লিও টলস্টয়কে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিনজন লেখকের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়। বাকি দুজন হলেন শেকসপিয়ার ও গ্যেটে। আন্না কারেনিনা, ওয়ার অ্যান্ড পিস দুটি তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এই উপন্যাসে ও পাওয়া যাবে জীবনের জৈবিক চাহিদা সম্পর্কে লেখকের অসাধারণ পর্যবেক্ষন।
গল্পের শুরু হয়েছে ইউজিন আর্তেনিভের মেয়েদের প্রতি জৈব আকর্ষণ দিয়ে। তারপর নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে গল্প এগিয়ে যায়। এখানে দেখা মিলবে যুবক ইউজিনের কাম উত্তেজনা, আত্মসংযমের চেষ্টা, মানষিক দ্বৈরত। লাস্যময়ী স্টিপানিডার, আর্দশ স্ত্রী লিজা, তর্কবাজ শাশুড়ি ভার্ভারা।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ হচ্ছে নিজের সাথে যুদ্ধ করা। মনের কুপ্রবৃত্তির সাথে যুদ্ধ করা। কিন্তু তা অনেক সময় সম্ভব হয় না কামনার তাড়নায়। যেই কামনাকে লেখক ‘শয়তান’ বলে উল্লেখ করেছেন।
“প্রচন্ড শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক নিদারুণ মায়াবী….. সে স্টিপানিডা__ তার কবল থেকে উদ্ধার নেই আমার। ও আমাকে পেয়েছে – কাঁধে চেপে বসেছে। হ্যাঁ, শয়তানই তো সে”
আমার কাছে মনে হয়েছে বিয়ের পর মানুষের জৈবিক চাহিদা অনেকটা কমে যায়। লেখকও তাই দেখিয়েছেন কিন্তু কারও প্রতি একবার দুর্বল হয়ে পড়লে সেই জায়গা থেকে ফিরে আসা যে প্রায় অসম্ভব তা ভালোভাবেই ফুটে ওঠে উপন্যাসটিতে।
উপন্যাসটি লেখকের বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। লেখক একসময় এক যুবতীর কামবাসনায় উন্মাদ হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তীতে অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করতে পেরেছিলেন শেষ পর্যন্ত।
উপন্যাসটি একটি বার্তা বহন করে। কোন জৈবিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে তার ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা ভাবা উচিত। প্রত্যেক সম্পর্কেরই একটা মূল্য থাকে।
বইঃ শয়তান লেখকঃ লিও টলস্টয় প্রকাশনীঃ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র রিভিউ করেছেনঃ রায়হান এ আর খান
শয়তান উপন্যাস pdf download করতে এখানে ক্লিক করুন