বইঃ রাজবন্দীর রোজনামচা
লেখকঃ শহীদুল্লাহ কায়সার
প্লটঃ নব্য পাকিস্তান শাসনামলে কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণ।
চরিত্রঃ হামেদ, মন্টূ, হাসিব, সেলিম, অ-দা, গ-দা, কালাম সহ আরও অনেকে।
কোট করা লাইনঃ
“দুর্নিবার মুক্ত পৃথিবীর আকর্ষণ। প্রতীক্ষমাণ বধূর অশ্রুভরা চোখ, আপনজনের মিষ্টি ডাক, শিশুর হাসি- বুকের ভেতর ব্যাথার মোচড় দিয়ে জেগে ওঠে। অশ্রুভরা সেই চোখ, প্রেয়সীর সেই সিক্ত হাসি, নিত্য-প্রহর শুধু ডাক দিয়ে যায়, এসো ফিরে এসো আমাদের মাঝে, এ নীড়ের আশ্রয়ে। বন্দীর প্রাণ কেমন করে অস্বীকার করবে প্রিয় পৃথিবীর এই দিনরাত্রির আহ্বান?”
আরও পড়ুনঃ জহির রায়হানকে নিখোঁজ করলো কারা?
রাজবন্দীর রোজনামচা একটি ডায়েরী যা জহির রায়হানের অনুরোধে শহীদুল্লাহ কায়সার তার কারাজীবনের নানান অভিজ্ঞতা লিখেছেন। কিন্তু নিজের চরিত্রকে হামেদ নামে প্রকাশ করে। যেহেতু রাজবন্দী সবাই, তাই সবাই কোন না কোনো ভাবে রাজনীতির সাথে জড়িত। সবাই জীবন দর্শনে আধুনিক। সেখানে রবীন্দ্রনাথের শিল্প চর্চা হয়, নজরুলের দর্শন এবং শিল্প যে বিলীন হচ্ছে সে ব্যাপারে কথা হয়। যেহেতু নজরুল বিদ্রোহের কবি, বিদ্রোহকে বরবাদ করার যে লিপ্সা পাকিস্তানীদের ছিলো সে বিষয় উঠে আসে।
অন্যদিকে কারাগারে দীর্ঘদিন থাকায় সবাই সবার পারিবারিক জীবনের অন্তরঙ্গ সঙ্গী হয়ে যায়। হামেদ যেমন কালামের সাংসারিক জীবনে তাহমিনার সাথে দূরত্ব মোচনের প্রয়াস করে, তেমনি সেলিম ভাইর স্ত্রী সন্দেহ দূর করার চেষ্টাও চালায়। কারাগার মনকে ছোট করে ফেলে। নিজেকে দোষী ঠেলতে চায় সবাই।
আরও পড়ুনঃ শহীদুল্লাহ কায়সারের জীবনী | What Happened to Him
ঝগড়া, বিতণ্ডা লেগে থাকে কারাগারের দেয়ালে দেয়ালে। একজন বিড়াল পালে তো আরেকজন কবুতর। নিরীহ প্রানীদের মাঝে খুঁজে ফিরে তাদের আত্মীয়। কারাগারের চারপাশের ছোটো ছোটো উদ্ভিতের মাঝে খুঁজে পুরো বাংলাদেশকে। এই মিলে মিশে থাকার মাঝে ফাটল ধরে, যখন একজন রাজবন্দীর বিয়োগ ঘটে। রাজবন্দী বলে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশের অন্য কারাগারে। তখন রাজবন্দীর ফেলে যাওয়া জিনিসগুলো সৃতিকে তাড়া করে।
রাজবন্দীর রোজনামচা একটি দার্শনিক বই বলা যায়। মানুষের চিন্তা কত ভিন্ন এই ছোটো কারাগারেই তার প্রমান। এ এক অপূর্ব সৃষ্টি।
লিখেছেনঃ শাকিল চৌধুরী
বইঃ রাজবন্দীর রোজনামচা [ Download PDF ]
লেখকঃ শহীদুল্লাহ কায়সার
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
শহীদুল্লাহ কায়সারের বইসমূহ ডাউনলোড করুন