বুক রিভিউ°°°°°
বইয়ের নামঃ- বহুব্রীহি
লেখকঃ-হুমায়ূন আহমেদ
বাড়ির নাম নিরিবিলি।
অনেক আগে শ্বেতপাথরে লেখা নামটির “র” এর ফোটা মুছে গিয়েছে, পাড়ার দুষ্ট ছেলেরা “র” এর ফোটা “ব” তে বসিয়ে দিয়ে নিবিরিলি বানিয়ে দিয়েছে, এই গেলো বাড়ির নামের গল্প।
এইবার আসা যাক উপন্যাসের চরিত্রে।
এই উপন্যাসের বাড়ির মালিক সোবহান সাহেব, তিনি রিটায়ার্ড উকিল।কর্মহীন জীবন যেন মেনেই নিতে পারেন না।
সকাল হলেই রেগে থাকেন,কারো উপর রাগ ঝাড়ার জন্য মানুষ খোঁজেন।
অবসর থাকায় নানা সময়ে নানা বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান।দরকার নেই তাও চাপ নেন আর উনি ব্লাড প্রেসারের রোগী।
উনার ২ মেয়ে,
ছোটমেয়ে মিলি,বড়মেয়ে বিলু।
মিলিকে উপন্যাসটির প্রথম থেকেই দেখা যাবে,মিলির নায়কের চরিত্রে থাকছেন একজন ফার্মেসীর ডাক্তার(মনসুর)।তাদের প্রথম পরিচয় ঔষধ দোকানে।
তারপর ডাক্তারের বারবার নানা বাহানা দিয়ে মিলিদের বাড়িতে আসার বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক বর্ননা আছে এই গল্পে।মনসুর যতবার এই বাড়িতে পা দিয়েছে ততবার কোন না কোন দূঘটনা ঘটিয়েছে।
গল্পের আরেকজন মজার চরিত্র হচ্ছেন ফরিদ মামা। পাঁচ বছর আগে অংকে অনার্স পাশ করেছেন,তার ধারনা তাকে পড়াবার মত বিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নেই।
সোবহান সাহেব তাকে পাগল মনে করেন।অবশ্য সোবহান সাহেবের শশুর ও ফরিদ মামাকে পাগল টাইপের লোক ভাবতেন,তিনি ফরিদের সমস্ত সম্পত্তি সোবহান সাহেবকে দিয়ে বলেন যেদিন ওর মাথা ঠিক হবে সেদিন ওকে ওর সম্পত্তি বুঝিয়ে দিও।
উপন্যাসে আরেকটি কেন্দ্রিয় চরিত্র আনিস,আনিসের স্ত্রী ছোট ছোট বাচ্চা রেখে মারা গেছেন,বাচ্চা দুটি নিশা আর টগর।ওরা এতটাই দুষ্ট যে কখনো বাসায় আগুন ধরিয়ে খেলে কখনো বা বিছানায় কাচি দিয়ে কাটাকুটি খেলে।
আনিসের সাথে এই বাড়ির সম্পর্ক হচ্ছে আনিস এই বাড়ির দোতলার ভাড়াটিয়া।
অবশ্য ভাড়াটিয়া হওয়ার পেছনে রহেছে অনেক গল্প।
বিলু মেডিকেল কলেজের ছাত্রী।গল্পে বিলুর সঙ্গে আনিসের একটা সম্পর্কের ইতি দেখা যাবে।
আরেকটা ইন্টারেস্টিং চরিত্র হচ্ছেন কাদের এইবাড়ির কাজের লোক। ইনি ফরিদ মামার খায়েশ লোক।ফরিদ মামার সাথে ১বার বাড়ি ছাড়ার রেকর্ড ও আছে।
তারপরের চরিত্র এইবাড়ির আশ্রিত এমদাদ সাহেব আর তার নাতনি পুতুল।
এমদাদ সাহেব সোবহান সাহেবের গ্রামের লোক এইবাড়িতে এসেছেন তার নাতনিকে একটা গতি করে দিতে।কিন্তু সদ্য মেট্টিক পাশ করা পুতুল খুবই শান্ত স্বভাবি ও ভালো মেয়ে।পুতুল অবশ্য আনিস কে শেষ পর্যন্ত ভালোবেসে ফেলে।
যাদের কথা বাদ গেলো তারা হলেন এই বাড়ির গৃহ কর্তী ও কাজের মহিলা রহিমার মা। রহিমার মাকে ঘিরে কয়েকটা মজার ঘটনা ও এই গল্পে স্থান পেয়েছে।
সব মিলিয়ে বইটি দারুণ।নিসন্দেহে হুমায়ূন সমগ্রের মধ্যে সেরাদের একটি।
আমার ব্যক্তিগত রেটিংঃ- ১০/৮
লিখেছেনঃ Niharika Nipa
বইঃ বহুব্রীহি [ Download PDF ]
লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত