পথের পাঁচালী উপন্যাস pdf

পথের পাঁচালী উপন্যাস PDF রিভিউ – বিভূতিভূষণ | Pather Panchali Book PDF

Redirect Ads

নাম: পথের পাঁচালী
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রথম প্রকাশ: ১৯২৯
ধরন: চিরায়ত উপন্যাস
প্রধান চরিত্র: অপু, দূর্গা, হরিহর, ইন্দির ঠাকুরণ, সর্বজয়া

পটভূমি:

“পথ” অর্থ রাস্তা। আর পাঁচালী এক ধরনের বর্ণনাত্নক কাব্য। এখানে লেখক নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের হতদরিদ্র এক পরিবারের পাঁচালী গেয়েছেন। মানবজীবনের বিভিন্ন সুখ,দুঃখ, আনন্দ, বেদনা নিয়ে বইটি লেখা। “পথের পাঁচালী” বইয়ের পর্ব সংখ্যা তিনটি:
১. বল্লালী-বালাই
২. আম আঁটির ভেঁপু
৩. অক্রুর সংবাদ
তন্মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ‘আম আঁটির ভেঁপু‘। এর মূল উপজীব্য হচ্ছে অপু-দূর্গার দুরন্ত শৈশব-কৈশোরের বিভিন্ন ঘটনা। সব মিলিয়ে এটি অসাধারণ এক বই। আপনার অবশ্যই পড়া উচিত এই বইটি।

Download

আরও পড়ুনঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম্পত্য জীবন

কাহিনীঃ

নিশ্চিন্দপুর। গরীব বামুন। হরিহোর। দুর্গা আর অপু। সর্বজয়া, ইন্দির ঠাকরুন। দুর্গার সেই বন কলমির ডালে ডালে মধুখালি ইছামতীর বাঁকেবাঁকে ঘুরে বেড়ানো। সজনে ডাটা আর পুঁইলতার নেশা। ইন্দির ঠাকরুনের প্রতি মমত্ববোধ। ভাইয়ের প্রতি অপত্য স্নেহ। অপুর সেই সোনামাখা চেহারার মায়ায় পড়া। চড়ুইভাতি খেলা। সতুদের সোনামুখি আম কুড়িয়ে নেয়া। নীরেনের সাথে ঘর বাঁধার রোমাঞ্চ দুর্গার ছিলনা কে বলবে? ভাইয়ের সাথে ট্রেন দেখার লালিত স্বপ্ন মৃত্যু অবধি তাঁর কাছে জমেছিল। এভাবেই দুর্গা বেতসপাতা গুল্ম লতার ভিড়ে হারিয়ে যায়। জীবন বদলানোর আশায় হরিহোরের কাশি গমন। গান বাধা। ছেলের লেখা ম্যাগাজিনে দেখার স্বপ্ন। তারপর মিলিয়ে যাওয়া। সর্বজয়ার অপরিণত বয়সের প্রায়শ্চিত্ত। বাবুদের বাড়ির রান্না। লীলার মমতাবোধ অপুর প্রতি। শেষ দিকে নিশ্চিন্দপুরে ফেরার আকুতি। সব মিলিয়ে জীবনের পথকে কত সুন্দর কত সাবলীল করে সাজালেন বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়! পথের পাঁচালী।

আলোচনাঃ

পাঁচালী শব্দের অর্থ গীতিকাব্য। বিভূতিভূষণ অপুর জীবনের পথ যার সাথে জড়িয়ে আছে গ্রামের সংসার জীবন আর প্রকৃতি, তার পাঁচালী লিখেছেন। এই উপন্যাসে বিভূতিভূষণ বিস্তর বর্ণনা করেছেন প্রকৃতির, দৃশ্যের। এ নিয়ে নাকি অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, উপন্যাসের গতি কমে গেছে বা পড়ায় একঘেয়েমি চলে এসেছে। আমার কাছে অবশ্য এই বর্ণনা অবশ্য এবং জরুরি মনে হয়েছে। “পথের পাঁচালী” বইটা কে লেখক যেন দেখিয়েছেন একটা ঘরের মত, সেই ঘরে প্রবেশের আগে ঘরের উঠোন পেরুতে হয়। উঠোনের আলপনা বা চালকুমড়ো লতার ফুলটুকুর সৌন্দর্য তিনি পাঠকদের পুরোপুরি উপলব্ধি করিয়ে তবে গৃহ প্রবেশ করিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত

Download

অপু আর দূর্গার সাথে পুরো গ্রাম চষে ফেলা যাবে এই বই পড়তে পড়তে। মায়ের আগলে রাখা শাসন মাখা আদর, ভাই বোনের দুষ্টুমি আর তেপান্তর পেরোনো স্বপ্ন সবকিছুই মন ছুঁয়ে যাবে। সাথে মানবজীবনের আর সমাজের বিভিন্ন বৈষম্য, কুসংস্কার, অন্যায় এর চিত্র নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইয়ে। বই পড়া শেষে মনে হবে যেন নিশ্চিন্দপুর ঘুরে বেড়িয়ে আসা হলো। গ্রাম বাংলার অতি সাধারণ অথচ অসাধারণ যেসব সৌন্দর্য সাধারণ দৃষ্টিতে ধরা পড়ার মত নয়, এই বই পড়ার পর সেগুলোর মর্ম বুঝবেন পাঠকগণ। এজন্যই বোধ হয় ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসটি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন-

‘এর থেকে শিক্ষা কিছুই হয়নি, দেখা হয়েছে অনেক- যা পূর্বে এমন করে দেখিনি’।

দুঃখ আর দৈন্যের মধ্যেও জীবন যে কত পসরা সাজায় সংসারের তাগিদে! প্রকৃতি ও যেন তেমনই।

ছোট্ট কোমল হৃদয় এর অপু- দূর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়া কি যে বিরাট বিলাসিতা!!
সেই বিলাসবহুল আনন্দ তে পাঠক ও যোগ দিবে মনের অজান্তেই।

আরও পড়ুনঃ বড়দিদি – মেজদিদি – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় PDF রিভিউ

Download

এই উপন্যাসের প্রাণপ্রতিমা দুর্গা কে নিয়ে এই উপন্যাসে লেখা বিভূতিভূষণের সবচেয়ে সেরা এবং শেষ উক্তিটি হলো,

‘আকাশে নীল আস্তরণ ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে অনন্তের হাতছানি আসে পৃথিবীর বুক থেকে ছেলেমেয়েরা চঞ্চল হইয়া ছুটিয়া গিয়া অনন্ত নীলিমার মধ্যে ডুবিয়া নিজেদের হারাইয়া ফেলে পরিচিত ও গতানুগতিক পথের বহুদূর পারে কোন পথহীন পথে দুর্গার অশান্ত, চঞ্চল প্রাণের বেলায় জীবনের সেই সর্বাপেক্ষা বড় অজানার ডাক আসিয়া পৌঁছিয়াছে’

লিখেছেনঃ M Mukta

বইঃ পথের পাঁচালী [ Download PDF ]
লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম দুই উপন্যাস পথের পাঁচালীঅপরাজিত এর পর সেই কাহিনী মিলিয়ে তাঁর ছেলে তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন “কাজল“। অপুর ছেলে। যেই চরিত্র সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসার চলচ্চিত্রেও পাওয়া যায়। কেবল তাই নয় অপুর নাতিকে নিয়েও তিনি লিখেছেন “তৃতীয় পুরুষ“।

Download

ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যান্য রচনা সমূহ PDF + রিভিউ

Facebook Comments

Similar Posts