Skip to content
Home » চোখের বালি উপন্যাস PDF রিভিউ | Chokher Bali Rabindranath Uponnash

চোখের বালি উপন্যাস PDF রিভিউ | Chokher Bali Rabindranath Uponnash

    চোখের বলি উপন্যাস pdf
    Redirect Ads

    বইয়ের নামঃ- চোখের বালি
    লেখকঃ- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ- ১৮২
    ক্যাটাগরিঃ- সামাজিক রোমান্টিক উপন্যাস।
    প্রকাশকালঃ- ১৯০৩ সাল

    বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে উজ্জল নক্ষত্রের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । রবী ঠাকুরের উপন্যাস এবং চরিত্র গুলোর ভক্ত আমি। বিশেষ করে এই ধরনের হিন্দু সামাজিক উপন্যাস তো আমার কাছে অমৃতের মত লাগে। ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই উপন্যাসের অতল গহব্বরে। বইটি সাধু ভাষায় রচিত। মাঝে মাঝে কিছু কঠিন শব্দেরও চয়ন ঘটানো হয়েছে। অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় লেখা একটি রোমান্টিক কাহিনি এটি। বরাবরের মতই বলবো রবী ঠাকুরের বই সাধু ভাষায় লেখা হয় সেজন্য ভাষাগত দিক দিয়ে একটু জটিল হয়ে থাকে। নতুনদের বুঝতে সমস্যা হতে পারে। আবার ছোটদের এই বই পড়ে ভালো নাও লাগতে পারে।

    Download

    আরও পড়ুনঃ হৈমন্তী গল্প PDF Download রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    চোখের বালি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি সামাজিক উপন্যাস। ১৯০১-০২ সালে নবপর্যায় বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯০৩ সালে বই আকারে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের বিষয় “সমাজ ও যুগযুগান্তরাগত সংস্কারের সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের বিরোধ“। আখ্যানভাগ সংসারের সর্বময় কর্ত্রী মা, এক অনভিজ্ঞা বালিকাবধূ, এক বাল্যবিধবা ও তার প্রতি আকৃষ্ট দুই পুরুষকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। ১৯০৪ সালে অমরেন্দ্রনাথ দত্ত এই উপন্যাসের নাট্যরূপ দেন। ১৯৩৮ সালে অ্যাসোসিয়েট পিকচার্সের প্রযোজনায় চোখের বালি অবলম্বনে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। ২০০৩ সালে বিশিষ্ট পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ এই উপন্যাস অবলম্বনে “চোখের বালি” নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। চোখের বালি ইংরেজি (২ বার), হিন্দি ও জার্মান ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। আপনার চাইলে সেগুলোও দেখতে পারেন।

    উপন্যাসে চরিত্র গুলি হলোঃ-

    মহেন্দ্র, আশা, বিহারী, বিনোদিনী, রাজলক্ষ্মী, অন্নপূর্ণা আরো অনেকে। এই প্রতিটি চরিত্র আপনার মনে জায়গা করে নিবেই।

    আরও পড়ুনঃ ক্রীতদাসের হাসি পিডিএফ রিভিউ

    Download

    কাহিনি সংক্ষেপঃ

    গল্পের শুরু হয়েছে, গল্পের নায়ক মহেন্দ্র ও তার মা রাজলক্ষীর কথোপকথনের মাধ্যমে। তার মায়ের ছোটবেলার বান্ধবী হরিমতির মেয়ে বিনোদিনীকে পুত্রবধূ হিসেবে ঘরে তুলতে চায় তার মা। কিন্তু মাতৃস্নেহ হারানোর দোহাই দিয়ে সে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। মায়ের প্রতি ছেলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে এ বিষয়ে বেশিদূর এগুতে পারেনি রাজলক্ষী। অবশেষে অন্যত্র বিয়ে হল বিনোদিনীর এবং অনতিকাল পরেই বিধবা হতে হল।

    তিন বছর পর, মা এবার তার ছেলের বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এবারও মহেন্দ্র পুরনো অজুহাত দেখায়। ওদিকে, মহেন্দ্রের কাকী অন্নপূর্ণা, স্বামী-সন্তানহীনা এ মহিলাটি মহেন্দ্রকে নিজের সন্তানের ছেলের মত স্নেহ করতো। অন্নপূর্ণার পিতৃমাতৃহীনা এক বোনঝি আশালতা’র সাথে মহেন্দ্রের বিয়ের ইচ্ছা পোষন করলেও প্রত্যাখিত হওয়ার আশংকায় তা প্রকাশ করতো না, মহেন্দ্র এ ব্যাপারটি ঠিকই অনুধাবন করতো।

    অবশেষে মহেন্দ্রের চেষ্টায় তারই বন্ধু বিহারীর সাথে বিয়ে ঠিক করে মেয়ে দেখার জন্য কাকীকে প্রস্তাব করে সে। বিহারী মহেন্দ্রের বন্ধু হলেও মা-কাকীর স্নেহের পাত্র ছিল সবসময়। অতঃপর আশালতাকে দেখতে গিয়ে মহেন্দ্র নিজেই বিয়ের জন্য মনস্থির করে এবং শেষ পর্যন্ত নানা বাধার পরও নিজেই আশালতাকে বিয়ে করে।

    আরও পড়ুনঃ কপালকুন্ডলা PDF বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

    Download

    শুরু হয় মহেন্দ্র-আশার নতুন জীবন। সমাজ সংসার কে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকে দুজনের প্রনয় লীলা। দিন দিন ছেলের উপর কর্তৃত্ব হারাতে থাকে মা। এসব নিয়েই অন্নপূর্ণা ও রাজলক্ষীর মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। ফলাফল স্বরূপ, অন্নপূর্ণা বাড়ি ছেড়ে কাশিতে চলে যায় ধর্ম পালনের দোহাই দিয়ে। একপর্যারে মায়ের উপর ছেলের ভালোবাসা পরীক্ষা করতে রাজলক্ষীও চলে যায় গ্রামের বাড়ি। ফিরে আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসে সেই বিনোদিনীকে। অল্পদিনের মধ্যেই বিনোদিনী সংসারের সকলকে আপন করে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। রাজলক্ষী তার কর্তব্যবুদ্ধি ও সেবায় মুগ্ধ হলেন। আশালতার সাথে আবদ্ধ হয় সখীত্ব স্থাপনের মাধ্যমে এবং মহেন্দ্রের সাথে পরিচিত হয়ে তাকেও আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় বিনোদিনী।

    ঘটনার ক্রমগতিতে মহেন্দ্র গোপন কলঙ্কময় আকর্ষণে বিনোদিনীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ে। এরই মাঝে বিহারী মাঝে মধ্যে উপস্থিত হয়ে কখনো কটাক্ষের বাণে বিদ্ধ করতে চেয়েছে, আবার কখনো মর্ত্যবাসিনী দেবী বলে শ্রদ্ধা ভক্তি দেখিয়েছেন। নারী প্রকৃতির শুভ চেতনায় বিনোদিনী মহেন্দ্রের গোপন আকর্ষণের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে অন্তরের মধ্যে বিহারীর প্রতি ধীরে ধীরে গভীর ভালোবাসা অনুভব করতে থাকে। কিন্তু মানুষের চাওয়া পাওয়ার সাথে প্রাপ্তির মেলবন্ধন সবসময় হয়ে উঠেনা।ভুল বোঝাবুঝিতে বিনোদিনীর ভালোবাসাকে প্রত্যাখান করে বিহারী। বিহারীর প্রত্যাখান বিনোদিনী কে প্রতিহিংসায় উন্মুক্ত করে তুলল। সম্ভাব্য দুর্যোগ থেকে আশালতাকে বাঁচাবার আপ্রাণ চেষ্টা এবং মহেন্দ্রের মুখে আশার প্রতি বিহারীর দূর্বলতার প্রসঙ্গ শুনে বিনোদিনী সরলা আশালতার সংসার জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্ধত হয়। উপায় না দেখে মহেন্দ্রের সাথে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয়কে তীব্র করে তুলল সে!

    আরও পড়ুনঃ গল্পগুচ্ছ রবীন্দ্রনা PDF Download

    এভাবেই ত্রিভূজ প্রেমের এই সমীকরন ক্রমশই জটিল আকার ধারন করতে থাকলো। বারবার ঝড়ের কবলে পড়তে থাকে একসময়ের গোছানো, স্নেহ-ভালোবাসায় পূর্ণ পরিবারটি।

    Download

    শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল?

    অভিনয় করতে করতে কি ধর্ম সংস্কার পেছনে ফেলে মহেন্দ্রের প্রতিই অনুরক্ত হয়ে পড়ে বিনোদিনী? নাকি বিহারীর ভুল ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল সে? নাকি ঘটেছিল অন্যকিছু?

    এসব জানতে হলে অবশ্যই উপন্যাসটি পড়ে ফেলতে হবে আপনাকে। এমন দারুণ একটি উপন্যাস দয়া করে মিস করবেন না। আশা করছি বইটি আপনার ভালো লাগবে।

    আরও পড়ুনঃ হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বইয়ের রিভিউ পিডিএফ

    পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ

    রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসের এক প্রকার অন্ধ ভক্ত আমি বলতে পারেন। এই ধরনের উপন্যাস আমার কাছে স্বর্গের মত লাগে। রবী ঠাকুর ছাড়া এমন কাহিনি রচনা করা কারোর পক্ষেই সম্ভব না। আমার প্রিয় একটি বই “চোখের বালি”। এই বইটা পড়ার সময় নিজেই একটি ঘোরের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিলাম। বার বার গল্পের নায়কের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করছিলাম। আসলে এত ভালো বই খুবই কম হয়ে থাকে। আমার মাঝে মধ্যে রাগ হয় রবীন্দ্রনাথের ওপর সে কেন মাত্র ১৩ টা উপন্যাস লিখলো আরো লিখলো’না কেন। এই উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্রের প্রেমে পড়ে যাবেন আপনি। রবীদার বই পড়ে পড়ে আমি সাধু ভাষা প্রায় রপ্তই করে ফেলেছি। এক কথায় এই বইটি পুরা “মাস্টারপিস“।

    এই বইয়ের বিশেষ ভালোলাগার মত কিছু উক্তিঃ-

    “বিবাহ না করিয়া ঠকা ভালো, বিবাহ করিয়া ঠকিলেই মুশকিল”

    “চিকিৎসা করিয়া রোগ সারানোর চেয়ে রোগ না হইতে দেওয়াই ভাল । “

    “ভালো যে বাসে সে নিজের ভালোবাসাকে বরাবর অপদস্থ করিতে পারে । “

    “অন্যকে দোষী করিয়া যেটুকু সুখ , দোষ মনে রাখিবার দুঃখ তাহার চেয়ে ঢের বেশি ।”

    “উপদেশ দেওয়া সহজ , উপায় বলিয়া দেওয়াই শক্ত ।”

    মন্তু-টুনি, ফটিক, হৈমন্তী, বিলাসী বিহীন একটি হাহাকার প্রজন্ম ও আমাদের পাঠ্যবই

    আশা করি বইটি পড়বেন; এটা আমার রিকুয়েস্ট। আমার বইয়ের রিভিউ লেখার অন্যতম উদ্যেশ্য হচ্ছে নতুন পাঠক সৃষ্টি করা; সবার মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা। সেজন্য আপনাদের আমি সব সময় বলি বই পড়ুন জীবন গড়ুন। পৃথিবী বইয়ের হোক।
    হ্যাপি রিডিং……

    Download

    লিখেছেনঃ শোয়াইব ইমরান

    বই: চোখের বালি [ Download PDF ]
    লেখক:
    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    বাংলা সাহিত্যের সেরা কয়েকটা বই এবং কিছু কথা

    Facebook Comments
    Tags:
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন