Skip to content
Home » কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান – একজন অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ

কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান – একজন অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ

    শওকত ওসমান উপন্যাস সমগ্র pdf
    Redirect Ads

    জাতির কথাশিল্পী বলা হয় শওকত ওসমানকে, হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন ‘অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ’। ৪৭ এর দেশভাগের পর চলে এলেন পশ্চিম বাংলা থেকে পূর্ব বাংলায় , হয়ে উঠলেন বাংলা ভাষার এক প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিক। একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, রম্য সাহিত্যিক, শিশু সাহিত্যিক তিনি। তাঁর সাহিত্য বহুল বিস্তৃত। বহু প্রখ্যাত সাহিত্যিক উঠে এসেছেন তাঁর হাত ধরে।

    কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কিছুদিন কলকাতার একটি স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন। সেখানেই প্রখ্যাত অভিনেতা উত্তমকুমারকে ছাত্র হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি। প্রথমে কলকাতায় ইনস্টিটিউট অব কমার্সে যোগ দেন। পরে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজে। ১৯৫৮ সালে বদলি হয়ে ঢাকা কলেজে এবং ১৯৭২ সালে এ কলেজ থেকেই অবসর নেন।

    Download

    আরও পড়ুনঃ ক্রীতদাসের হাসি পিডিএফ ডাউনলোড রিভিউ

    শওকত ওসমান তাঁর ছাত্রদের মধ্যে জ্ঞানপিপাসা ও জ্ঞানজিজ্ঞাসা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। শ্রেণিকক্ষে এসে পাঠ্যবই টেবিলে রেখে বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে বলতেন। শেক্সপিয়ার, বায়রন, মিলটন, তলস্তয়, গোর্কি, রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বড়ত্ব ব্যাখ্যা করতেন। তিনি বলতেন,

    ‘এখন তোমাদের যৌবনকাল, এখনই বিদ্রোহ করার বয়স। এখনই সবকিছু ভেঙে ফেলার ও জয় করার সময়। এ সময়কে পাঠ্যবইয়ের গণ্ডিতে বন্দী রেখো না।’

    শওকত ওসমান ক্লাসে পাঠ্যবই পড়ান না বলে একবার ছাত্ররা নালিশ করতে গেলেন সেই সময়ের জাঁদরেল অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমদের কাছে। অভিযোগ শুনে তিনি বললেন, শওকত ওসমানকে এই কলেজে রাখা হয়েছে পড়ানোর জন্য নয়। পড়ানোর জন্য অন্য শিক্ষকেরা আছেন। শওকত ওসমান এই কলেজে আছেন—এটাই আমাদের গৌরবের। অথচ এই অধ্যক্ষের সঙ্গে শওকত ওসমানের মত ও পথের কোনো মিল ছিল না।

    আরও পড়ুনঃ শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা বই গুলো PDF রিভিউ

    Download

    একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটান। এই যে বারবার পেশা পরিবর্তন, কর্মস্থল পরিবর্তন শওকত ওসমানকে তাঁর সাহিত্যসাধনা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তিনি যেখানে যে অবস্থায়ই থাকুন না কেন প্রায় প্রত্যহ কিছু না কিছু লিখতেন। তিনি পরামর্শ দিতেন, দিনে অন্তত আধঘণ্টার জন্য হলেও লেখার টেবিলে বসতে।

    তিনি চেয়েছিলেন বাঙালি মুসলমান সমাজ কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতা থেকে বেরিয়ে আসুক। জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত হোক। তিনি ধর্মান্ধতা প্রচণ্ডভাবে অপছন্দ করতেন। শওকত ওসমান প্রায়ই আক্ষেপ করে বলতেন,

    ‘আমেরিকানরা যখন রকেটে চড়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে পা দিয়েছে, তখনো আমাদের দেশের গরিব রিকশাচালক ভারবাহী পশুর ন্যায় অন্য মানুষকে কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছে। তারপরেও আমাদের চৈতন্যোদয় হলো না।’

    আরও পড়ুনঃ হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বইয়ের রিভিউ পিডিএফ

    শওকত ওসমান বলতেন, লেখকের ভূমিকা নান্দনিকতার ক্ষেত্রে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের লেখকদের মূল অবদান নৈতিকতার জগতে। রূপের কারিগর হয়ে ধূপের ফেরিওয়ালা। শওকত ওসমান ধূপের ফেরিওয়ালা হিসেবে আমাদের আলোকিত করতে চেয়েছেন, তাঁর জন্ম, শৈশব ও বেড়ে ওঠা যে সমাজে, সেই সমাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়েছেন।

    Download

    “কাল মারা গেছে শওকত ওসমান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন) রোববার তেইশে অঘ্রান ইমশাল। ইং…ডাংগুলির ভাষায় ফিরে গেছে প্যাভিলিয়নে ক্লান্ত ব্যাট কাঁধে সমস্ত জীবন যা ঘুরিয়েছে অবাধে লেটকাটে পাকা—এবার সত্যি আউট। মরহুমের বয়স নিয়ে ঝুটমুট গবেষণা। কেউ বলে ত্রিশ, কেউ বাহাত্তর, কেউ যোগ করে আরও ছিল, ছিল ক্ষুর লেজ অপি—শতাধিকবয়সের ফল মানতে বাধ্য, বার্ধক্যেও ভীষণ চঞ্চল। (নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত)”

    মৃত্যুর ২৩ বছর আগে, ১৯৭৫ সালে অগ্রীম শোক সংবাদ লিখে রেখেছিলেন কিংবদন্তি সাহিত্যিক শওকত ওসমান। নিজেকে নিয়ে এ রকম পরিহাস করা শওকত ওসমানের পক্ষেই সম্ভব ছিলো!

    আজ জাতির কথাশিল্পী কিংবদন্তি সাহিত্যিক শওকত ওসমানের জন্মদিন। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই তাঁর প্রতি।

    লিখেছেনঃ Ahmad Istiak

    বইয়ের ফেরিওয়ালায় আপনার লেখা প্রকাশ করতে চাইলে এইখানে লেখা জমা দিন।

    Download

    ইউটিউবে বইয়ের ফেরিওয়ালার বুক রিভিউ পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

    বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ৫০০ বই পড়া উচিত

    Facebook Comments
    x
    error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করুন